মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভায় চাকুরির জন্য দেয়া ১৫ লাখ টাকা ফেরতের দাবিতে দ্বিতীয় দফায় অমরণ অনশনে বসেছেন গাংনী শহরের শিশির পাড়ার মৌমিতা খাতুন পলি ও তার মা আনোয়ারা। মঙ্গলবার থেকে গাংনী উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার চত্বরে অনশনে বসেছেন তারা।
অনশনরত মৌমিতা খাতুন পলি জানান, ‘গাংনী পৌরসভায় সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগের জন্য পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সাথে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। জামিজমা বন্দক রেখে ও বিভিন্ন এনজিওর কাছে চড়া সুদে টাকা নিয়ে মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। মেয়রের নির্দেশে গত ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় মেয়রের স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য সাহানা ইসলাম শান্তনার ৬৪৫৪ নম্বর (হিসাবে) একাউন্টে ৫ লাখ ৭০ হাজার, ২৫ জানুয়ারি ৫০ হাজার, ৫ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা দিয়ে ১৫ লক্ষ টাকার বাকি টাকা নগদ প্রদান করা হয়।’
অথচ ২০১৮ সালে আমাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য একজনকে সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগ দেন মেয়র আশরাফুল। টাকা ফেরত চেয়ে বারবার তাগাদা দিলেও কোন কর্ণপাত না করায় গত ২০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার অনশন করা হয়। পরে গাংনী থানার ওসি বিচারের আশ্বাস দিলে অনশন ভঙ্গ করা হয়।
পরদিন গাংনী থানা চত্বরে পৌর মেয়র আশরাফুর ইসলামের উপস্থিতিতে তার সালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, পৌর কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মেয়র আশরাফুল ইসলাম জানান, জমি কেনার জন্য পলির স্বামী মোমিন টাকা দিয়েছিলেন।
চাকরির জন্য নয়। যেহেতু পলির স্বামী মোমিন টাকা দিয়েছিল তাকে ফেরত দিয়েছি। সে সময় স্বামি মোমিনকে হাজির করতে বলা হয়। পরে এক বৈঠকে স্বামি মোমিন হাজির হলেও মেয়র অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি এবং টাকা পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে প্রচার করতে থাকেন।
মৌমিতা খাতুন পলির মা আনোয়ারা বলেন, একের পর এক বৈঠক করে পুলিশ ও প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থাতেও কোন সমাধান না হওয়ায় আবারো আমরণ অনশন শুরু করা হয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান জানান, ‘অনশনের বিষয়টি জেনেছি। আমরা স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও মেয়র সাহেবের সাথে বসেছিলাম। বিষয়টি অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে এসব বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া কোন উপাই দেখছি না।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, অনশন ও টাকার বিষয়ে মেয়র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বাইপাস করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।