গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীদের ক্ষতিপুরণের টাকা আতœসাৎ, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অপরাধ ও দুর্নীতির চিত্র লোকাতে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন করেছেন ওই কাউন্সিলর। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহলের লোকজন।
এলাকাবাসী ও মানববন্ধন সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কালামপুর এলাকার কাউন্সিলর আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। তিনি গত ২০০৫ সালেও ওই ওয়ার্ডের বিএনপির কোষাদক্ষ ছিলেন। গত ২০১১ সালে কালিয়াকৈর পৌরসভার ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পরে তিনি কাউন্সিলর পদ ও পিঠ বাঁচাতে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং ২০১৯ সালের শেষের দিকে কৌশলে ওই ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
এরপরই সব রাজনৈতিক দলের সুবিধাভোগী ওই কাউন্সিলর বেপরোয়া হয়ে উঠেন এবং নানা অপরাধ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সরকারী বনের জমি প্লট করে বিক্রিতে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া নিরিহ মানুষ বনের জমিতে বসত-ঘর উঠলে তিনি ২০ থেকে ২৫ হাজার করে চাঁদা আদায় করে থাকেন। কখনো কখনো এর চেয়ে বেশি টাকা চাঁদা আদায় করেন ওই কাউন্সিলর।
চাঁদার টাকা না পেলে তিনি বিভিন্ন ভাবে নিরিহ লোকদের হয়রানিও করেন। এতেও তিনি ক্ষান্ত হননি, তিনি প্রতিবন্ধীদের ক্ষতিপূরণের কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আশার আলো প্রতিবন্ধী সমিতির সভাপতি শহিদুর রহমান বাদী হয়ে ওই কাউন্সিলর আবুল কাশেমের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এছাড়া প্রতিবন্ধীদের ক্ষতিপূরণের টাকা আতœসাতের প্রতিবাদে গত ২০ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলা লতিফপুর এলাকায় কালিয়াকৈর থানার সামনে মানববন্ধন করেছেন প্রতিবন্ধীরা। কিন্তু ওই কাউন্সিলর প্রভাবশালী হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
এসব অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ প্রচার হলে ওই এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ঝড় থামাতে ও এসব অপরাধ ও দুর্নীতির চিত্র লোকাতে ওই কাউন্সিলর তার পক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে একটি মানববন্ধন করান। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহলের লোকজন।
অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলর আবুল কাশেম জানান, আমি তো মানববন্ধন করি নাই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ প্রচারিত হওয়ায় স্থানীয় লোকজনই মানববন্ধন করেছে। আর প্রতিবন্ধীদের ক্ষতিপুরণের টাকা তাদের অথারাইজড সুরুজ উত্তোলন করে নিয়েছে। তিনি কাউকে দেয়নি, জানাওনি। আমার নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছিল। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে অন্য সব অভিযোগ মিথ্যা।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, আজকের মানববন্ধনের বিষয়টি আমার জানা নেই।