পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা। এ উপজেলার মাঠ প্রান্তর বর্তমানে সবুজে সমারোহ। সৈয়দপুর উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন সবুজ ধান গাছের দোলা। পাঁচ ইউনিয়নের মাঠে মাঠে এখন পর্যন্ত বোরো আবাদ হয়েছে প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে। অধিকাংশ জমিতে ধানের শিষ বের হওয়ার আশঙ্কা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে আশাতীষ ফলন হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষকরা। সোনালী ধান ক্ষেতে গোলায় তুলবে এ আশায় বুক বেধেছেন প্রায় সব কৃষকই। একই দাবি রয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা আলমের।
সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালিপুর ইউনিয়ন, কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের ৮০ ভাগ মানুষ বোরো ধান উৎপন্ন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এ অঞ্চলের আবাদি ভূমির ৮০ ভাগের মালিক মাত্র ১৪ ভাগ মানুষ। বাকি ২০ ভাগ জমি ছোট ও মাঝারি প্রান্তিক ও বর্গাচাষী। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই ব্যবসায়ী। আর ভূমিহীনরা ক্ষেতমজুর ও শ্রমজীবী। কার্তিকে ধানের বীজ তোলা তৈরি থেকে শুরু করে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে সৈয়দপুর অঞ্চলের ধানের গোলায় তোলা পর্যন্ত ভূমিহীন পরিবাররা মজুরি বিক্রি করে জীবীকা নির্বাহ করেন।
ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক কারণে বর্ষার পানি বড় বড় খাল-বিলে ভরাট থাকা ও উপজেলায় তিস্তার ক্যানেল, পচানালা, ও খড়খড়িয়া নদীতে পানি থাকায় জমিতে সেচের পানির সরবরাহে জমির উর্বরতা ও ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায় সৈয়দপুর উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত বোরো ধানে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বড় এক অংশ দেশের খাদ্য ভান্ডারে যোগ হয়। ২০২০ সালে সারা দেশের ন্যায় সৈয়দপুরেও বন্যায় দীর্ঘদিন পানি আটকে থাকায় জমির উর্বরতা পেয়েছে। আর এ কারণে চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে এ অঞ্চলে। কৃষি অফিস আরও জানায় পাঁচ ইউনিয়নে এবারে আবাদকৃত বোরো ধানের মধ্যে ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, হীরা-সুপার হাইব্রিড, বিআর-১৪ এবং ব্রিধান-৫৮, ব্রিধান-৮৮ সরকারি ভাবে কৃষকদের দেওয়ায় ফলন পর্যাপ্ত হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আলম জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং কোনো প্রকার পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখা না দিলে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে ৩০ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবে যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরকারের খাদ্য ভান্ডারে যোগ দেওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।