মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের থারকেটায় পুলিশ স্টেশনের বাইরে জান্তাবিরোধী প্রতিবাদ ও গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে গতকাল শুক্রবার রাতে এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে আজ শনিবার এ খবর জানানো হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা থারকেটা পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভ করছিলেন। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।
এর আগে ১৯৮৮ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত রেঙ্গুন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ছাত্র ফন মাওয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ও জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে রাস্তায় নামার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। এরপর রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ-সমাবেশে গত বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে অন্তত সাতজন নিহত হন। এর মধ্যে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় মায়িং শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হন। সেখানে নিহতদের হাসপাতালে নেওয়া একজন বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে ছয়জন নিহতের তথ্য জানান। হাসপাতালের চিকিৎসকও এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ ছাড়া দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনের নর্থ দাগোন শহরে অপর এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে নিহতের ঘটনার আগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানায়, মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভে ৬০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। অন্তত দুই হাজার জনকে আটক করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি জানিয়েছে, মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত ৩ মার্চ। মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে সেদিন ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।