খুলনার তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ হত্যা মামলায় ৪ আসামীকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ আসামীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ ইয়ারব হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হল- ফরিদ মোল¬া, মিসবাহ মোল¬া, মোর্তজা মোল¬া ও টুটুল মোল¬া। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির হচ্ছে মুক্ত মোল¬া, শহিদুল শিকদার, সেলিম শিকদার, নাসির শিকদার ও মেহেদী মোল¬া।
খালাসপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- খালিদ মোল¬া, নাজমুল শিকদার, রাজা শেখ ও ওসমান ফকির। আসামীরা সবাই তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট আসামিদের ধারালো অস্ত্রাঘাতে আহত হন ফিরোজ শেখ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনদিন পর নিহতের ভাই হিরু শেখ বাদি হয়ে ৩০ জনের নাম উলে¬খ করে তেরখাদা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামের মোহাম্মাদ আলী শেখের ছেলে ফিরোজ শেখ(৩৫) ওষুধের দোকান বন্ধ করে ভ্যানে যোগে বাড়ি ফিরছিলেন।
পথিমধ্যে রমজান উপলক্ষে প্রত্যেকদিনের মত খাবার পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নেয়ার জন্য কাটেঙ্গা মুসল¬ী বাড়ির দক্ষিণ পাশে ভ্যান থামানোর সাথে সাথেই তার পূর্ব পরিচিত শত্রুরা অতর্কিত হামলা চালায়। তারা ফিরোজকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় ভ্যান চালক ও নিহতের সহযোগী চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাকে নিয়ে তেরখাদা হাসপাতালে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার সংকটপন্ন অবস্থায় দেখে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ওই দিন রাত পৌনে ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনার তিনদিন পর নিহতের ছোট ভাই হিরু শেখ ২৭ জন আসামির নামসহ আরও অজ্ঞাতনামা উলে¬খ করে থানায় মামলা দায়ের করেন (যার নং-৯)। প্রথম দিকে মামলাটির তদন্ত তেরখাদা থানা পুলিশ করলেও পরবর্তীতে খুলনা সিআইডি’র কাছে হস্তান্তর করা হয়। দু’বছর ১১ মাস পরে সিআইডি পুলিশ পরির্দশক মিঠু রানী দাশ ১৩ জনের নামে আদালতে একটি চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীট ভুক্ত এক আসামী পলাতক রয়েছে। আদালত যুক্তিতর্ক শেষে ১২ জন আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করে।