দেশে মহামারি করোনা ভাইরাস, চৈত্র বৈশাখ মাসে কাল বৈশাখ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালির ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১’। প্রতিবছর ভাষার মাসে শহীদদের স্মরণে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হলেও এ বছর মহামারির কারণে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে। এ বছর করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আজ থেকে বইমেলা শুরু হয়ে চলবে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত।
ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ও ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এবারের বইমেলা উৎসর্গ করা হচ্ছে হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। এবারের বইমেলার মূল থিম ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। অন্যান্য বছরের মত এ বছরও বইমেলা শুরু হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট জায়গায়।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি ইউনিট; মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলায় থাকবে ৩৩টি প্যাভিলিয়ন। এবার সোহরাওয়ার্দীতে ৩টি প্রবেশ পথ ও ৩টি বাহির পথ থাকবে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষিত ছাউনি থাকবে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন।
বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। এবারের অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর ইংরেজি অনুবাদ ‘NEW CHINA ১৯৫২-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই গ্রন্থ উন্মোচন করবেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হবে।
এদিকে, মহামারি করোনা পরিস্থিতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মেলা আগের মতো জমজমাট হবে না বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রকাশনার প্রকাশক। তারা বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকে জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের হতে ভয় পান। যার ফলে মেলা আগের মতো পাঠক নাও আসতে পারে। আবার করোনা পরিস্থিতি বাড়ার কারণে নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যদি করোনা বৃদ্ধি পায় তাহলে মেলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে কাকলী প্রকাশনার প্রকাশক এ কে নাসির আহম্মেদ বলেন, আগের মতো বিক্রি হবে না সেটা স্বাভাবিক। তবে, আমরা চেষ্টা করবো ভাল করার জন্য। খুব বেশি খারাপ হবে সেটাও আশা করি না। আবার খুব বেশি ভালো হবে সেটাও আশা করি না। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের মতো হবে না।
অন্যান্য প্রকাশনার প্রকাশক মো. মনিরুল হক বলেন, এখনো মেলা শুরু হয়নি। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ার কারণে খুব একটা সাড়া পাব বলে মনে হয় না।