বগুড়ার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আল-আমিন (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
প্রথমে বগুড়া সদর এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা আসামী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আল-আমিন কাহালু উপজেলার সাকোহালি গ্রামের আকতার হোসেনের ছেলে এবং বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, গত ১১ মার্চ দুপুরে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে পথিমধ্যেই ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় ওইদিন রাতে আবারো ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এসময় ছুরিকাঘাতের ঘটনাও ঘটে। এ সংঘর্ষে দুই গ্রুপের অন্তত ৫ জন আহত হন। আহতদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এদিকে এই ঘটনার ৩ দিন পর ১৩ মার্চ দুই গ্রুপের পক্ষ থেকে বগুড়া সদর থানায় পাল্টাপাল্টি পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবীর ইসলাম খানের মা আফরোজা ইসলাম বাদী হয়ে সরকারী আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধুনট উপজেলার বিলচাপড়ী গ্রামের ফারাইজুল হকের ছেলে আব্দুর রউফসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
অপরদিকে আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ হাসান বাদী হয়ে তাকবির ইসলাম খানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০ থেকে ২৫ অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ অবস্থায় গত ১৬ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা তাকবির ইসলাম খানের মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর আগে তাকবির ইসলাম তাকে নির্মমভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কিভাবে, কারা তাকে কুপিয়েছে তার একটি ভিডিও বক্তব্য প্রদান করেন।
ভিডিও বক্তব্যে তাকবির বলেন, সরকারী আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ তাকে প্রথম ছুরিকাঘাত করে। এরপরও রউফ ও তার সহযোগিরাও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকবিরের পা, কোমড় ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপুর্যুপরি কোপায়। এদিকে তাকবিরের মৃত্যুর পর সেই ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এর পর পরই ১৬ মার্চ রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফকে বহিস্কার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার এসআই মালেক বলেন, তাকবির হত্যা মামলার অন্যতম আসামী হিসেবে আল-আমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলার অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।