মেহেরপুরে স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না কেউ। রাস্তাঘাট, হাট বাজার, গণপরিবহন কোথাও স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। করোনা ভীতি থাকলেও মাস্ক ব্যবহারের আগ্রহ নেই সাধারণ জনগণের। আবার সরকারী দপ্তরগুলোতে নো মাস্ক নো সার্ভিস এ আদেশ উপেক্ষিত। এসব কারণে করোনা মহামারী আকার ধারণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
মহামারী কবরোনার আগ্রাসন থেকে মুক্তি পেতে ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করলে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিধি বাস্তবায়ন করার কথা জানানো হলেও তা কার্যত অচল। হাটবাজার, রাস্তাঘাট, শপিং-মল, এবং যানবাহনে কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেও কারো মাস্ক ব্যবহারে আগ্রহ নেই।
জেলার সরকারী অফিস গুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, দরজার সামনে নো মাস্ক নো সার্ভিস লেখা থাকলেও তা মানছে না কেউ। অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আবার অনেকেই কানে, থুতনীতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। অফিসে আগতদের মুখেও নেই মাস্ক। অনেকেই তাচ্ছিল্য করে বলছেন“ করোনা বলে কিছু নেই সব ভাউতা”।
এদিকে করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে হাত ধোয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বেসিন স্থাপন করেন। ওই বেসিন গুলো কোনই উপকারে আসছে না। অযত্ন অবহেলায় সবগুলো বেসিন নষ্ট হয়ে গেছে। বেসিনের অবস্থা অত্যন্ত নোংরা ও নাজুক।
গত ২১ মার্চ পুলিশের উদ্যোগে জন সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাস্ক বিতরণ করা হলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন প্রচারণা নেই। আবার কোথায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিতে দন্ড প্রদানও করতে দেখা যায় নি। সরকারী অফিসগুলো স্বাস্থ বিধি মানছে কিনা তারও তদারকি নেই। এদিকে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভাতে উপস্থিত কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধি এমনকি সাংবাদিকগনের অনেকেই ছিলেন মাস্ক বিহীন।
সবচেয়ে স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখানে সেবা নিতে আসা কোন রোগীতে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নো মাস্ক নো সার্ভিস কথা লিখে যেন দায়মুক্তি পেয়েছেন। মাস্ক পরার জন্য কাউকে বলতেও শোনাযায়নি। ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগি ও তার স্বজনেরা কেউ মাস্ক পরিধান করে না। সকলেই উদাসীন।
গাংনী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আহমেদ রায়হান শরীফ জানান, জন সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। যারা সেবা নিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন তাদেরকে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হলেও উদাসীন তারা।
ভর্তি রোগী ও তার স্বজনদের ক্ষেত্রে একই অবস্থা। কেউ যদি নিজে সচেতন না হয় তাহলে জোর করে কিছু করা যায় না। নো মাস্ক নো সার্ভিসের কথা বলা হলেও স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে পালন করা সম্ভব না। কারণ, রোগীদের সেবাতো দিতেই হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এ্ং অফিস আদালতে মানুষ আসলে তাদের হাত ধুয়ে ভিতরে প্রবেশ যাতে করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলেও জানালেন তিনি।