সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তের যাদুকাটা নদীর ভারত সীমানায় নিহত বাংলাদেশী কয়লা শ্রমিকের লাশ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় বিএসএফ। মৃত কয়লা শ্রমিকের নাম- সাইদুর রহমান (২৫)। সে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বড়গোঁফ-বারেকটিলা এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩শে মার্চ) রাত ৯টায় লাউড়গড় সীমান্তের ১২০০/৩এস পিলার সংলগ্ন শাহিদাবাদ এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় লাউড়গড় ক্যাম্পের বিজিবির কাছে মৃত কয়লা শ্রমিক সাইদুর রহমানের লাশ হস্তান্তর করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
ঘন্ট্যাব্যাপী অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্বে দেন সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক। আর বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের শিলং সেক্টরের ১১ ব্যাটালিয়নের ঘোমাঘাট বিএসএফ ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন অরবিন্দু সিং। এসময় দুই দেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিল।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের বারেকটিলায় অবস্থিত নোম্যান্সল্যান্ড এর ১২০৩ পিলারের উত্তর দিক দিয়ে অবস্থিত যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারতের ভিতর থেকে অবৈধ ভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী আমিনুল ইসলাম, রফিক মিয়া (নবীকুল), জসিম মিয়া, নাজিম মিয়া ও নুরু মিয়াগং সিন্ডিকেডের মাধ্যমে প্রতিদিন লক্ষলক্ষ টাকা মূল্যের কয়লা ও পাথর এনে বিক্রি করছে।
প্রতিদিনের মতো গত সোমবার (২২শে মার্চ) সকালে উপরের উল্লেখিত সোর্সদের নেতৃত্বে শ্রমিক সাইদুলও কয়লা ও পাথর আনতে ভারতের ভিতরে যায়। কিন্তু দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সব শ্রমিকরা যে যার বাড়িতে ফিরে আসলেও শ্রমিক সাইদুল আর ফিরে আসেনি। খাওয়া-দাওয়া শেষে শ্রমিকরা আবার ভারতের সীমানায় গিয়ে যাদুকাটা নদীর ঘোমাঘাট সংলগ্ন স্থানে শ্রমিক সাইদুলের লাশ দেখতে পায়।
পরে এঘটনাটি বিজিবিকে জানানো হলে তারা বিএসএফের কাছে বার্তা পাঠায়। এরপর ঘটনদিন সন্ধ্যায় বিএসএফ নিহত শ্রমিক সাইদুলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এবং তাদের আইনী প্রক্রিয়া শেষ করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট কয়লা শ্রমিকের লাশ হস্তান্তর করে ভারতীয় বিএসএফ।
সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের নবাগত বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল তছলিম এহসান কয়লা শ্রমিকের লাশ ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদেরকে জানান- নিহতের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের উপস্থিতে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর ওই শ্রমিকের মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।