সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটায় সারাদিন ব্যাপী টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪শে মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া ও গরকাটি এলাকায় অবস্থিত অবৈধ পাথর কোয়ারী ও যাদুকাটা নদীর তীর কেটে অবৈধ ভাবে উত্তোলনকৃত ৫০হাজার ঘনফুট পাথর ও ৪০হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়।
এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ ভাবে বালি ও পাথর উত্তোলন করে নদীর তীরেই দাপটের সাথে মজুত করে রেখেছিল। অভিযান শেষে রাতে জব্দকৃত পাথর ২৯লক্ষ ৯০হাজার টাকা ও অবৈধ বালু ৫লক্ষ ৯৮হাজার টাকায় প্রকাশে নিলামে বিক্রি করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- যাদুকাটা নদীর লাউড়গড় সীমান্তের বারেকটিলায় অবস্থিত নোম্যান্স ল্যান্ডের ১২০৩নং পিলারের উত্তরদিক দিয়ে অবস্থিত যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারতের ভিতর থেকে অবৈধ ভাবে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী আমিনুল ইসলাম, রফিক মিয়া (নবীকুল), জসিম মিয়া, নাজিম মিয়া ও নুরু মিয়াগং লক্ষলক্ষ টাকা মূল্যের কয়লা ও পাথর এনে নদীর তীরেই মজুত রেখেছে।
সোর্সরা লক্ষলক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে প্রতিদিন ট্রলি ও ঠেলাগাড়িসহ বিভিন্ন ভাবে ভারত থেকে এসব পাথর ও কয়লা পাঁচার করছে। সোর্সদের নেতৃত্বে গত সোমবার (২২শে মার্চ) সকালে ভারত থেকে কয়লা ও পাথর আনতে গিয়েই শ্রমিক সাইদুর রহমানের মৃত্যু হয়।
তার লাশ গত মঙ্গলবার (২৩শে মার্চ) রাত ৯টায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর করে ভারতীয় বিএসএফ। এর আগে একই ভাবে কয়লা ও পাথর পাচাঁর করতে গিয়ে বিএসএফে তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে অনেক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি কয়লা পাচাঁর করা নিয়ে যাদুকাটা নদীতে চোরাচালানীদের সাথে বিজিবির সংঘর্ষ ও গুলাগুলি হয়।
এঘটনার প্রেক্ষিতে প্রথমে সালিশ-বিচার পরে থানায় মামলা হয়। এতকিছুর পরেও রহস্যজনক কারণে সোর্সদের দৌড়াত্ব বন্ধ হয়নি। বরং দাপটের সাথে সোর্সরা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথর এনে তাদের বাণিজ্য জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য জরুরী ভিত্তিতে লাউড়গড়েও টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করার জন্য সংশ্লিস্ট প্রশাসনের সুদৃষ্ঠি কামনা করছেন এলাকার সচেতন জনসাধারণ।
টাস্কফোর্সের অভিযান সময় উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিদর্শক মোঃ মাইদুল ইসলাম, র্যাব ৯ এর সুনামগঞ্জ কোম্পানীর অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ তরফদার, লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার রহিম উদ্দিনসহ আরো অনেকেই।