বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথপ্রদর্শক এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মাঝে র্যাংকিং এ প্রথম স্থান অর্জনকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ এন্ড সার্ভিসেস (সিআইআরএস), ডিপার্টমেন্ট অফ সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস এর যৌথ উদ্যোগে ড. ফজলুর রহমান খান (এফ আর খান) ‘আইনস্টাইন অব স্ট্রাকচারাল ইন্জিনিয়ারিং’ এর স্মরণে ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বিংশ শতাব্দীর সেরা স্ট্র্যাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার বা কাঠামো-প্রকৌশলীদের যদি তালিকা প্রস্তুত করা হয়, তাহলে তার পুরোভাগে থাকবে বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলী মরহুম ড. ফজলুর রহমান খানের নাম। বস্তুত বিংশ শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি কাঠামো-কৌশলে, বিশেষ করে উঁচু ইমারত ডিজাইনে, যে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনেন তা বহু যুগ ধরে সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করে আসছে। ফজলুর রহমান খান সারা বিশ্বে খ্যাতিলাভ করেছেন পৃথিবীর উচ্চতম (১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত) ইমারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অবস্থিত সেয়ার্স টাওয়ার ডিজাইনার হিসেবে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ এন্ড সার্ভিসেস (সিআইআরএস) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইসমাইল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর। মূল বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ডঃ এফ আর খান এর ভাতিজা এবং বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ফয়জুর রহমান খান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, ড. ফজলুর রহমান খান এর মত একজন বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলী এর পরিচিতি আমাদের দেশের মানুষ এর মধ্যে তেমন ভাবে নাই। তিনি কাঠামো-কৌশলে, বিশেষ করে উঁচু ইমারত ডিজাইনে, যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি আমাদের দেশের তরুণ প্রকৌশলীদের জন্য অনুস্মরণীয় আদর্শ।
তাঁর অবদান নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য পাঠ্যক্রমে আমাদের উচিত তাঁর সম্পর্কে পড়ানো। এসময় তিনি বুয়েটে এফ আর খান চেয়ার নামে একটি চেয়ার প্রতিষ্ঠা করার কথা উল্লেখ করেন, যেই চেয়ার এর দায়িত্ব হবে উঁচু ইমারত ডিজাইনের গবেষণার জন্য নতুন গবেষক তৈরি করা। এসময় তিনি তাঁর নামে একটি গবেষণা তহবিল এর প্রচালন করার উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান।
ইঞ্জিনিয়ার ফয়জুর রহমান খান বলেন, ড. খান ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অনেক প্রাণবন্ত এবং স্বপ্নবিলাসী মানুষ। এদেশের প্রতি ছিল তাঁর গভীর ভালবাসা, সেই ভালবাসা থেকেই ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধা। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সাহায্যের জন্য “বাংলাদেশ ইমার্জেন্সি ফান্ড” নামে একটি তহবিল গঠন করেণ। তাঁকে আইনস্টাইন অব স্ট্রাকচারাল ইন্জিনিয়ারিং বলে অবিহিত করা হয়। তিনি তাঁর কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাম ইতিহাসে উজ্জ্বল করে রেখেছেন।
ইঞ্জিনিয়ার মাইক হোগান বলেন, ড. এফ আর খান ছিলেন সর্বকালের স্ট্রাকচারাল ইন্জিনিয়ারদের মধ্যে একজন অনুস্মরণীয় আদর্শ। স্ট্রাকচারাল ইন্জিনিয়ারিং এর উন্নয়নে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি কর্মজীবনে যেমন ছিলেন সফল একজন মানুষ , ঠিক একই ভাবে ব্যক্তিগত জীবনেও ছিলেন অনুস্মরণীয় আদর্শ।
স্মরণ সভা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস এর ডিন অধ্যাপক ড. জাবেদ বারী, ড. এফ আর খান এর সহকর্মী ইঞ্জিনিয়ার মাইক হোগান, চলচ্চিত্র পরিচালক মিজ লায়লা কাজমী, শিক্ষকবৃন্দ এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।