রংপুরের পীরগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত আদিবাসী যুবক পাখি পাউলুস লিন্ডুয়ার (২২) লাশের মামলা ঠেকাতে শালিসে বৈঠকে মোটা অংকের টাকায় দফারফায় লাশের সৎকার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতভর উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলদার হোসেনের মধ্যস্থতায় বাসুদেবপুর গ্রামে ওই শালিস হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহতের লাশটি খ্রীষ্টিয় ধর্ম অনুযায়ী সৎকার করা হয়।
জানা গেছে, উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের আদিবাসী মৃত. মহিম লিন্ডুয়ার ছেলে পাখি পাউলুস লিন্ডুয়ার সোমবার সন্ধ্যার দিকে তার বাড়ীর দক্ষিণে ইটভাটার কাজে নিয়োজিত মাহেন্দ্র্র গাড়ীর নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। এ সময় ‘ই.এস.বি’ মার্কা ইটভাটার মাটিবাহী মাহেন্দ্রটির চালক এরশাদ মিয়া গাড়ী রেখে পালিয়ে যায়।
একপর্যায়ে এলাকাবাসী আটক গাড়ীটি চিহ্নিত করে সোমবার সন্ধ্যার পর চৈত্রকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেলদার হোসেন মন্ডলের নেতৃত্বে ওই ভাটার ম্যানেজার আদিবাসী বাবলু লাকড়ার বাড়ীতে ইউপি সদস্য মোস্তফা মিয়াসহ শতাধিক মানুষ শালিস বৈঠকে বসে। গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক শেষে মোটা অর্থের বিনিময়ে লাশের সৎকারের সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয়রা জানান, শালিশে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আমিরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি নিহতের মা- বুদ্রী কুজুরের কাছ থেকে লাশের ময়না তদন্ত করবে না মর্মে কাগজে স্বাক্ষর নেয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খালিশা মিশন কবরস্থানে খ্রীষ্টন ধর্মের নিয়মে নিহত পাখির লাশ সৎকার করা হয়।
নিহতের মা বুদ্রী কুজুর বলেন, পুলিশ এসে আমাকে বললো এতগুলা টাকা দেব,সই দাও। এ সময় ইটভাটার ম্যানেজার বাবলু লাকড়া আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকী টাকা পরে দিবে। সাবেক চেয়ারম্যান দেলদার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে। ভাটার ম্যানেজার বাবলু লাকড়া বলেন, পাখির লাশটির ব্যাপারে নগদ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
বাকী টাকা বুধবার দিব। আমিই টাকার দায়িত্ব নিয়েছি। ‘ই.এস.বি’ মার্কা ইটভাটা মালিক আতাউর রহমান আতা বলেন, বিষয়টি সমঝোতা করা হয়েছে। ভে-াবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আমিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শোনার পর আমি সেখানে গিয়েছি। ময়না তদন্ত করবে না এমন অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নিয়ে এসেছি। যদি তারা মামলা করতে চায়, তাহলে এখনও করার সুযোগ আছে।