রাজশাহীর তানোরে পল্লী বিদ্যুতের এক শ্রেণী অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ানের বিভিন্ন শিল্পের নামে বেপরোয়া মটর বানিজ্য শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে ভূগর্ভস্থর পানি যেমন পড়েছে হুমকির মধ্যে তেমনি ভাবে বিএমডিএর গভীর নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়ছে। ফলে চলতি বোরো সেচ নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচেছ কৃষকদের।
অথচ উপজেলায় ভূগর্ভের পানি রক্ষার জন্য প্রায় ১১ বছর ধরে সেচ কমিটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বন্ধ করে দিয়েছেন মটর স্থাপন। কিন্তু‘ পল্লী বিদ্যুতের মটর বানিজ্য কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। আবার কোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে আর্থিক সুবিধা নিয়ে পুনরায় সংযোগ দিচেছন বলেও অহরহ অভিযোগ রয়েছে।এত কিছুর পরো থামছেনা পল্লী বিদ্যুতের মটর বানিজ্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধুবইলগ্রামের জানিব নামের এক ব্যক্তি পল্লী ফার্মের কথা বলে বানিজ্যিক মটর স্থাপন করে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন তৈরি করে নির্বিঘ্নে জমিতে সেচ দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু জানিব না ওই গ্রামের ডামপু দুইটি বানিজ্যিক মটর বসিয়ে সেচ দিয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর ধরে। জালাল নামের আরেক ব্যক্তি তিনটির মত মটর স্থাপন করেছেন।
পাকুয়া হাটের পশ্চিমে মুকবুল নামের আরেক ব্যক্তি বাড়ির মটর থেকে নিয়োমিত সেচ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান শুধু আমি না এই এলাকার প্রায় বাড়ি থেকে মটরের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিচ্ছেন।
এছাড়াও পল্ট্রি ফার্মের নামে সেচ মটর স্থাপনের নামে অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ প্রদানের পর ফের বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা ঘটে ধুবইল মাঠে।গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের ৭ তারিখ সোমবার দুপুরের আগে পল্লী বিদ্যুতের বহিরাগত ইলেক্ট্রেশিয়ান লুৎফরের ছেলে গোলাম রাব্বানি লেলিন।তিনি অফিসকে ম্যানেজ করে পল্ট্রী ফার্মের নামে বানিজ্যিক মটর স্থাপন করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংযোগ বিচ্ছিন্নের কয়েকদিনের মধ্যে আর্থিক সুবিধা নিয়ে পুনরায় সংযোগ প্রদান করেন। পল্লী বিদ্যুতের কর্তাবাবুরা এমন ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের জন্ম দিয়েছেন। ফলে সংযোগ দেয়া বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলারমত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কর্তাবাবুদের মাঝে। এমন ঘটনায় সংযোগ কারীদের বিরুদ্ধে বইছে তীব্র সমালোচনা। সেই সাথে সংযোগ কারীদের আইনের আওতায় আনার জোরালো দাবি উঠেছে এবং সেচ মটর মালিক দুবইলগ্রামের লুৎফর ও তাঁর ছেলে লেলিনের বির“দ্ধেও শাস্তির দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।
জানা গেছে, বেশ কয়েকমাস মাস আগে উপজেলার পাচন্দর ইউপি এলাকার দুবইলগ্রামের লুৎফর রহমান ও তাঁর ছেলে লেলিন কৃষি জমিতে নামমাত্র ছোট করে পল্ট্রি ফার্মের ঘর তৈরি করে পল্লী বিদ্যুতের কর্তা বাবুদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে বাণিজ্যিক সংযোগ নেয়।নেওয়ার পর থেকে অধিক সেচ হার নিয়ে আলুর জমিতে সেচ দেওয়া শুরু করেন।
অথচ মটর স্থাপনের সময় ষ্ট্যাম্পে লিখিত দেন কোন সেচ দেওয়া হবেনা। বিচ্ছিন্নের পর পুনরায় সংযোগ নেওয়ার সময় সেচ দেওয়া হবেনা বলেও লিখিত দেন।বর্তমানে তিনি আলুর জমিতে ধান রোপণের জন্য দেদারসে সেচ দিচ্ছেন।
এছাড়াও সম্প্রতি কয়েকদিন আগে ৫ হর্সের সেচ মটর স্থাপন করেন করেন তানোর পৌর এলাকার বেল পুকুরিয়াগ্রামের ন্যাশনাল ব্যাংক নওগাঁ শাখায় কর্মরত শফিকুল ইসলাম।তিনি আম বাগানের নামে বানিজ্যিক ভাবে ৫ হর্সের মটর স্থাপন করেন কালনা শুকানদিঘি নাম জায়গায়। সেও জমিতে দাপটের সাথে সেচ দিচ্ছেন।
পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম জহুরুলকে অহবিত করা হলে তিনি জানেননা বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। তদন্ত প্রমান পেয়ে গত সপ্তাহে শফিকুলকে চিটি তিনদিনের মধ্যে লাইন বিচ্ছিন্ন করে ৫ হর্সের মটর উঠিয়ে দেড় ইঞ্চির মটর স্থাপন করার কথা বলা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার তিনদিন অতিবাহিত হলেও তাঁর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। পল্লী বিদ্যুতের ইন্সপেক্টর অলিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান শুক্রবার ছুটির দিন শনিবারে তাঁর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
নাম প্রকাশ না করে একাধিক ব্যক্তিরা জানান পল্লী বিদ্যুতের নামধারী কিছু ইলেক্ট্রিশিয়ানরা মাঠ পর্যায়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অফিসের অসাধু কর্তাদের ম্যানেজ করে এই ধরনের অবৈধ মটর স্থাপন করে লাখপতি বনে গেছেন। যারা এই সব অবৈধ কাজ করে পল্লী বিদ্যুতের সুনাম নষ্ট করছে দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা না হলে এবানিজ্য বন্ধ হবেনা। কারন এমন এমন জায়গায় মটর স্থাপন করে দেন খুজে পাওয়ায় দুরহ ব্যাপার।