দিগন্ত মাঠ জুড়েই শুধুই সবুজের সমারোহ, যে দিকে চোক যায় সেদিকেই বোরো ধানের সবুজ শীষগুলো দল খাচ্ছে হিমেল হাওয়ায়। সেই সবুজ শীষেই লুকিয়ে রয়েছে হাজারো কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।
কৃষি ভাণ্ডার হিসেবে ধান উৎপাদনের অন্যতম অঞ্চল রাজশাহীর তানোর উপজেলা। বিশেষ করে উপজেলার একাংশ জুড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী শিব নদী বা বিল কুমারী বিলে এখন শুধুই সবুজে ভরা । আদিকাল থেকেই বিলে চাষ হয়ে আসছে বোরো ধানের।
বিলের উর্বর মাটিতে হয় বাম্পার ফলন। বিল ধারের কৃষকরা এবারো স্বপ্ন দেখছেন আর অল্প দিনের মধ্যেই ঘরে উঠবে কাঙ্ক্ষিত সোনালী ধান। এউপজেলায় বোরো চাষ হয় দুভাবে। একটি বিলে আগাম অপরটি আলু উত্তোলনের পর যা বর্তমানেও রোপণ অব্যহত রয়েছে।
বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা চান্দূরিয়া ব্রিজ ঘাট হতে কামারাগা ইউপির মালশিরা পর্যন্ত হাজার হাজার একর জমিতে হয়ে থাকে বোরো ধানের চাষাবাদ। বিশেষ করে উপজেলার কামারগাঁ ইউপি এলাকার শ্রীখন্ডা, বাতাসপুর দমদমা, পারিশো দুর্গাপুর, মাদারিপুর, মাড়িয়া, মালশিরা এসব এলাকার বোরো ধান একটু আগেই উঠে থাকে।
অন্যদিকে বিলের মুল অংশ হিসেবে গুবিরপাড়া, শিতলিপাড়া কুঠিপাড়ার মুল অংশেই ধরা হয়। বর্তমানে নাব্যতার সঙ্কটে বিলে শিতলি পাড়ার উত্তরে রয়েছে সামান্য পানি, সেই পানিতেই প্রতিদিন দেশীয় মাছ প্রচুর তাকে ধরা পড়ছে। এসবসহ গোল্লাপাড়া, আমশো, জিওল, বুরুজ, হাবিবনগর, চান্দুড়িয়া ইউপির শতশত কৃষক স্বপ্ন দেখছেন সোনালী ধান অল্প দিনের মধ্যেই উঠে আসবে ঘরে।
এদিকে বিল বাদেই উপরের অনেক মাঠেই বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। যেমন কামারগাঁ ইউপির হাতিনান্দা মাথ, চাঐড়, দুর্গাপুর, হরিপুর, কলমা ইউপির আজিজপুর কুজিশহর, চন্দনকোঠা উল্লেখ যোগ্য। ভূমিহীন কৃষক ফারুক জানান এবারে বিলের পানি একেবারে তলানিতে। এজন্য প্রায় পোনে দুই বিঘা মত খাস জমি কয়েক জায়গায় রোপণ করতে পেরেছি।
তবে প্রায় বছর বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়। অবশ্য এবারের আবহাওয়া ভালো রয়েছে রোগ বালাও কম।হয়তো ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। আর যদি বৃষ্টি হয় আমারমত শতশত ভূমিহীনরা ঘরে তুলতে পারবেনা ধান। গত সোমবারে অন্য এলাকায় যে ভাবে শিলা বৃষ্টি ঝড় হয়েছে আল্লাহর রহমতে এদিকে হয়নি। যদি হত তাহলে চরম বেকায়দায় পড়তে হতে কৃষকদের।
আরেক কৃষক বকুল জানান পৌনে তিন বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ভালই আছে। তবে কথায় আছে বোরোর আসা না মরার আসা। ঘরে ধান না তোলা পর্যন্ত কিছুটা হলেও চিন্তিত। পদকপ্রাপ্ত প্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মাদ জানান গত সোমবারের ঝড়ে ধানের শীষ অনেক জায়গায় ঝলসে গেছে। আমশো মথুরাপুরগ্রামের কৃষক শরিয়ত ঝলসানো শীষ নিয়ে আমার কাছে আসে পরামর্শ করার জন্য।
আমি একাধিকবার ফোন দিলেও কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম ফোন ধরেন নি। শরিয়তকে কৃষি অফিসে পাঠানো হয় সে ঝলসানো শীষ নিয়ে কৃষি দপ্তরে গেলে তাকে দুরদুর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।অথচ আমার কৃষিমন্ত্রী, সচিব ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা ফোন রিসিভ করেন। আর উপজেলা কর্মকর্তা এতই বড় মাপের অফিসার যে তিনি ফোন ধরেন না।
এসব ও কত হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে জানতে কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলামের ০১৭২০-৪৩৭৮২৮ মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে শুধুই বিজি আর বিজি পাওয়া যায়। এতে করে ধারনা করা হচ্ছে এই প্রতিবেদকের মোবাইল নম্বর তিনি বিজি করে রেখেছেন। অবশ্য রাখাটাই স্বাভাবিক কারন উপজেলা পর্যায়ের একজন অফিসার এসি রুমে বসে থেকে আরামে সরকারী গাড়ি করে যাতায়াত করেন ফোন কেনই বা ধরবেন।