প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সমগ্র বাংলাদেশকে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করার পরেও মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন অযুহাতে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করছে অনেকে। মানছে না লকডাউন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পায়ে হেটে ও মোটরসাইকেলে চড়ে ঘোরাফেরা করছেন অনেকেই। আবার অটোরিক্সা ভ্যানে যাত্রী পরিবহনও করছে।
প্রথম দিকে লকডাউন মেনে চলতে পুলিশের পক্ষ থেকে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হলেও উপজেলা প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ার মতো নয়। এতে করোনা সংক্রমণের হার আশংকাজনক হারে বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, কাঁচা বাজারের পাশাপাশি খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মার্কেটের শার্টার ফেলে ভেতরে দোকান খোলা রেখে অভিনব পন্থায় কেনাবেচা শুরু হয়েছে বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে।
শুক্রবার বামন্দী বাজারে দেখা গেছে সেই পুরনো চিত্র। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি পশু হাটও খোলা ছিল । চলেছে নিত্য দিনের মতো কেনা বেচা। ওষুধ এবং মুদি দোকান ব্যতিত এই মুহূর্তে অন্যান্য দোকান খোলা রাখতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইলেক্ট্রনিক, কসমেটিক্স, হার্ডওয়্যারসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে মঙ্গলবার গাংনী বাজারে। সকাল ১১ টা পর্যন্ত বাজার পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেদারসে লোকজন চলা ফেরা করছে। সকল দোকান পাট খোলা। পুলিশের টহল নজরে পড়লেও নেই উপজেলা প্রশাসনের পদক্ষেপ। এদিকে জেলা সদরের আমঝুপি বারাদিসহ বিভিন্ন বাজারে লকডাউনের কোন কিছুই লক্ষ্য করা যায়নি।
সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। লোকজন গাদাগাদি করে কেনাকাটা করছেন। বেশির ভাগ দোকানি ও ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। বাজারে যেন ক্রেতা-বিক্রেতার মিলনমেলা। চায়ের দোকানে মানুষ গাঁ ঘেঁষে বসে গল্প গুজব করছেন। চায়ের দোকানে বলতে শোনা গেছে, ’আমাদের করোনা টরোনা হবে না‘ শহরাঞ্চলে সরকারের নির্দেশনা কিছুটা মানা হলেও গ্রামাঞ্চলে বলতে গেলে কেউই তা মানছেন না।
সরকারিভাবেও প্রচারণা নেই। ফলে গ্রামের মানুষ বিষয়টির গুরুত্ব তেমন বুঝতে পারছেন না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা জানান, ‘দোকান খোলা না রাখলে আমাদের সংসার চালাবো কি করে। আমরা চাইতে পারিনা নিতেও পারি না। তাই দোকান খোলা ছাড়া উপায় নেই। মাস্ক পরেন নি কেন ? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, পকেটে আছে।বেশি ভিড় দেখলেই পড়ি।আমরা আগে কখনও মাস্ক ব্যবহার করেনি। করোনা আসাতে মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মুরাদ আলী জানান, প্রথম থেকেই পুলিশ কড়া অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন লোক বিভিন্ন অজুহাতে চলাচল করছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার থাকেনা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে ব্যবসায়িরা রদোকান বন্ধ রাখছে আবার টহল দল ফিরে আসলে দোকান খুলছে। এ লুকোচুরি বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান জানান, প্রশাসন তৎপর। বাজার ঘাট বেশি হওয়ায় সব স্থানে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তিনি আরো বেগবান হবেন বলে জানিয়েছেন।