নীলফামারীতে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১২ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। পাশাপাশি মাংস ও শাক্সবজির বাজারেও যতেষ্ট প্রভাব পড়েছে। রবিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
জেলা শহরের কিচেন মার্কেটের মুরগি ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম জানান, পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১২ থেকে ১৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকা। এছাড়া দেশি মুরগি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ৪৩০ টাকা, সোনালী ৩০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা, সাদা লেয়ার প্রতিকেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা ও লাল লেয়ার ১৫ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ২০ টাকা বেড়ে ৫০০ টাকা ও খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ওই বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন,‘শনিবার আড়তে প্রতি মন ব্রয়লারের দাম ৪ হাজার ৬০০ টাকা। আর আজ রবিবার (১৮ এপ্রিল) তা বেড়ে প্রতিমন ৫ হাজার ১০০ টাকা। এতে কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ১২-১৩ টাকা। তিনি বলেন, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, বগুড়া ও স্থানীয় বাজার থেকে ব্রয়লার আমদানী না হওয়ায় এক দিনের ব্যবধানে পাইকারী বাজারে ১২ থেকে ১৩ টাকা বেড়েছে। আর খুচরা বাজারেও এর যতেষ্ট প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, মাংসের দাম দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকলেও রমজানের এর প্রভাব পড়েছে। রমজানে চাহিদা অনুপাতে দাম আরো বাড়তে পারে। কারন ভারতীয় গরু সিমান্ত পথে আসা বন্ধ রয়েছে। সেক্ষেত্রে রমজানে গরুর মাংসের দাম একটু বাড়তে পারে।
জেলা শহরের নিউ বাবুপাড়ার বাসিন্দা ও ভ্যান চালক জসিয়ার রহমান বালু বলেন, খুচরা বাজারে এককেজি ওজনের ব্রয়লার কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকায়। সেখানেও কেজিতে ১৫ টাকা বেশী দামে কিনতে হচ্ছে। গরীব মানুষ রোজার মাসে একটু ভাল মন্ধ খাবে সেটাই জোটে না। এমন দাম হলে আমরা খাবো কি করে।
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বাড়লেও কাঁচাবাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা রাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, করলা ৩৫ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, প্রতিপিস লাউ ২০ টাকা, প্রতি কেজি গাজর ২০ টাকা, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, আলু পাইকারী বাজারে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি ১১ টাকা থেকে ১৫, প্রকার ভেদে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, আদা ৮০-৯০ টাকা ও রসুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শহরের মায়ের দোয়া স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, চালের দাম বাড়েনি। গত দুই মাস ধরে একই দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে আমদানী সংকটের কারনে লকডাউন ও রমজানে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। চালের বাজারে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি জানান, প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৬২ টাকা, জিরাশাল ৬৫ টাকা, বাসমতি ৬৮ টাকা, পায়জাম ৬৫ টাকা, নাজিরশাল ৬৫ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ ৭৫ টাকা, কাজল লতা ৬৫ টাকা, কালজিরা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, চিনিগুঁড়া ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, কাটারি আতপ ও পায়জাম আতপ ৬৫ টাকা ।
বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তাদের চাওয়া, রমজান ও লকডাউনে যেন বাজার অস্থির না হয়, সেদিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি দরকার।
নীলফামারী বড় বাজারে চালের দোকানে কথা হয় ক্রেতা শফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে একেবারেই যে কম তাও বলা চলে না। লকডাউন ও রমজানের মধ্যে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সে জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আমাদের চাওয়া, রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে তারা যেন নিয়মিত বাজার মনিটর অব্যাহত রাখেন।
জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটারিং কর্মকর্তা এটিএম এরশাদ আলম খান মোবাইল ফোনে জানান, স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন জাতের মাংসালো মুরগির উৎপাদন কম হওয়ায় হঠাৎ কিছুটা দাম বেড়ে যায়। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।