নাবালক ও এতিম অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে দিনাজপুরের বিরলের পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৩৬ শতক জমি দখল করে নিচ্ছে ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাক। জমি দখলের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৮ জনকে আহত করেছে।
সোমবার দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত অভিযোগ করেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার মুরাদপুর (ডাঙ্গাপাড়া) গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের পুত্র মোঃ ফরহাদ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৬ এপ্রিল বিকেলে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাক,হাসান আলী, কোরবান আলী, মতিয়ার রহমান ,মিজানুর রহমান ও ওমর আলীসহ অজ্ঞাত ৭০/৮০ জন সন্ত্রাসী ছোরা, দা-কুড়াল লাঠিসোটাসহ উল্লেখিত জমিতে জোরপূর্বক ইট ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণ শুরু করে।
এসময় আমরা বাড়ি নির্মানে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে নিঃসংশ ভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে বিরল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জনকে ভর্তি করে এবং পরবর্তীতে আরো ৪জনকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভতি করে দেয় । এদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিতসাধীন রয়েছে।
ঘটনার পর সুবিচারের আশায় বিরল থানায় মামলা করতে গেলে ওসি বিরল ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাকের কথামতো আমাদের মামলা গ্রহণ না করে উল্টো আমাদের দুই ভাইকেই আটক করে। পরে ওই দিনই আগের তারিখ দেখিয়ে সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাকের পিতা মোঃ আশরাফ আলীর দায়ের করা মিথ্যা বানোয়াট ও ভুয়া মামলায় আমাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এরপর থেকে সন্ত্রাসী রাজ্জাকের কথা মতো বিভিন্ন অজুহাতে ও মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদেরকে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। আমাদের অভিযোগ বিরল থানা পুলিশ গ্রহণ না করলেও ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাকের অবৈধ টাকা ও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আমাদের পরিবারের সকল সদস্যের বিরুদ্ধে আরও মামলা দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে দিনাজপুর পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলীর পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাচ্ছে এবং নানান রকমের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। সে বলে বেড়াচ্ছে বড় বড় নেতা,অফিসার ও সন্ত্রাসীরা তার পকেটে থাকে। সে যখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। আমরা খবর নিয়ে দেখেছি সত্যিকার অর্থে সে দিনাজপুর পৌরসভার একজন উপসহকারী প্রকৌশলী মাত্র।
মোঃ ফরহাদ হোসেন জানান, গত ১৮ তারিখ তার বোন শেফালী বেগম নিজ জমিতে বালু ও মাটি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের সময় ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাক এবং তার দলবল ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ছোরা, দা-কুড়াল লাঠিসোটা ও নিয়ে আমার বোন জামাই মো: আলম এর উপর হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি মারধোর করে গুরুত্বর জখম করেছে।
তাদের সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং মিথ্যা বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। করোনাকালীন সময়েও আমরা নিজ বাড়িতে ঘুমাতে পারছিনা, আমরা প্রশাসনের কাছে জমি রক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার মর্জিনা বেগম, নুর নেহার, মোছা: সুমি, সেরাজুল ইসলাম, মোঃ আলম ও ফিরোজ হোসেনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেরনের পূর্বে একই দাবীতে তারা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করে।