নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভেজাল ও নকল পণ্যের অবাধ বাণিজ্য চলছে। দেশের নামি দামী কোম্পানীর মোরকে মোড়ানো থাকায় বুঝার উপায় নেই কোনটা আসল আর কোনটা নকল। স্থানীয় প্রশাসন বা খাদ্য অধিদপ্তর কর্মকর্তারা অভিযানে নামলেই আসল ও নকলের সঠিক প্রমাণ পাবেন বলে একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ।
অভিযোগের প্রকাশ দেশের ৮ম বাণিজ্যিক শহর হলো নীলফামারীর সৈয়দপুর। বিভিন্ন ভাষার জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের বসবাস এ শহরে। উপচেপড়া জনগোষ্ঠীর ভিড়ে গড়ে উঠেছে ছোট বড় মিলে প্রায় ৫০০টি কলকারখানা। নোংরা পরিবেশে নিম্ন মানের পণ্য তৈরীর পর সেগুলি দামী কোম্পানীর মোরকে মুড়িয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রতারক চক্রের উৎপাদিত ওই সব পণ্যের মধ্যে রয়েছে। বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, চকলেট, আচার, জুস, চাটনী ও কয়েল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শুধুমাত্র শহরের হাতিখানা ক্যাম্প এলাকাতেই গড়ে উঠেছে একাধিক চকলেট, চানাচুর ও লাচ্ছা সেমাই কারখানা। একেরবারই নোংরা পরিবেশেই এসব নিম্ন মানের পণ্য তৈরী করে বিক্রি করা হচ্ছে উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে।
ওই এলাকার মুন্সি নামের এক ব্যক্তি তার বৈধতা ছাড়াই প্রায় ১০ বছর থেকে বিভিন্ন ধরনের চকলেট তৈরী করে বাজার জাত করছেন। কামাল ও জাহাঙ্গীর নামের দুই ব্যক্তি পাল¬া দিয়ে তৈরী করছেন চকলেট, চানাচুর ও লাচ্ছা সেমাই। ক্যাম্পে বসবাসরত ওই সব ব্যক্তি সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে ভেজাল ও নকল পণ্য তৈরীর পর বাজারজাত করে কোটি টাকার মালিক বনেছেন। ক্যাম্পের ২ নেতা পকেট ভারী করতে ও স্থানীয় কাউন্সিলর তার ভোট প্রাপ্তির আসায় তাদের মদদ দিয়ে চলেছেন। পুলিশ বা উপজেলা প্রশাসন যাতে করে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালাতে না পারে ওই জন্য ভেজাল প্রস্তুতকারীদের কাজ থেকে আদায় করা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
অনেক ব্যবসায়ী বলছেন চকলেট ও চানাচুর ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় অর্ধশতাধিক চাটনী, চিপ্স ও বিস্কুট ফ্যাক্টরী রয়েছে। যাদের অধিকাংশরই নেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। এর পরেও তারা দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ব্যবসা। ভেজাল, নকল ও নিম্ন মানের উৎপাদন সহ বাজারজাত করা হলেও পুলিশ প্রশাসন দৃষ্টি না দেয়ায় তারা দাপটের সাথেই ওই সব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এখনই অভিযানে নামলে প্রায় শত কোটি টাকারও বেশি ভেজাল ও নকল পণ্য উদ্ধারসহ উৎপাদিত কারখানার সন্ধান পাবেন বলে জানান তারা। ডাঃ ওয়াসিম বারি জয়ের মতে ভেজাল ও নকল পণ্যের কারণে মানুষের পেটের পিড়া পিছু ছাড়ছে না। এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান ১৫ রমজানের পর থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন কে নিয়ে কঠোর অভিযান চালানো হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।