সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট, চারাগাঁও, বীরেন্দ্র নগর, টেকেরঘাট, চানপুর ও লাউড়গড় সীমান্তে দিনদিন বেড়েই চলেছে চোরাচালান। আর এই চোরাচালানকে কেন্দ্র করে চলছে জমজমাট চাঁদাবাজি বাণিজ্য। মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার সারাদেশ লকডাউন করলেও বন্ধ হয়নি এই সীমান্তের কয়লা, পাথর, অস্ত্র, গরু ও মাদক চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বানিজ্য। তাই র্যাব ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগী জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সচেতন সীমান্তবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গত এক সপ্তাহ যাবত উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা তেতুলগাছ ও বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট, লাকমা এলাকা দিয়ে সোর্স ইয়াবা কালাম, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, রমজান মিয়া, বাবুল মিয়া, কদ্দুস মিয়া, শহিদুল্লা, খোকন মিয়াগং ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৫০কেজি ওজনে প্রায় ১২শত বস্তা কয়লা পাচাঁর করে। কিন্তু সোর্স ও চাঁদাবাজদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ সৃষ্টি হওয়ার কারণে পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা অন্যত্র সরাতে না পেরে লালঘাট ও বাঁশতলা এলাকার বাড়িঘর ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখে।
এমতাবস্থায় আজ শনিবার (১০ জুলাই) ভোরে সোর্সরা চাঁদাবাজদের ফাঁকি দিয়ে প্রায় ২মে.টন অবৈধ কয়লা নৌকায় বোঝাই করে অন্যত্র নেওয়ার জন্য চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা গ্রাম সংলগ্ন সমসার হাওর পাড়ে নিয়ে মজুত করে। এই খবর পেয়ে বিজিবি অভিযান চালিয়ে কয়লা আটক করে। কিন্তু সোর্স ও চাঁদাবাজ বাহিনীর কোন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এব্যাপারে লালঘাট গ্রামের চোরাকারবারী খোকন মিয়া বলেন- আটককৃত কয়লা আমার না। তবে নৌকা দিয়ে ৫-৬মে.টন চোরাই কয়লা নেওয়ার জন্য সোর্স শফিকুল ইসলাম ভৈরব, রমজান মিয়া ও ইয়াবা কালামকে ৫হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। সোর্সরা আজাদ ও রাজ্জাকসহ কাকে কত টাকা দেয় তা আমি জানিনা।
সোর্স শফিকুল ইসলাম ভৈরব বলেন- পাচাঁরকৃত ১ নৌকা কয়লার জন্য তোতলা আজাদ মিয়াকে ১হাজার ও আব্দুর রাজ্জাককে ১জাজার টাকা চাঁদা দেওয়াসহ আরো ৬-৭জনকে ৫শ করে চাঁদা দিতে হয়। কিন্তু আজাদ মিয়া আরো বেশি টাকা চাঁদা দাবী করে। এছাড়া সোর্স ইয়াবা কালাম ১বস্তা কয়লা থেকে ১২০টাকা চাঁদা নেয়। এসব কারণে আজাদ মিয়ার সাথে আমার দ্বন্দ হয়েছে। তাই আমি এসব কাজে আর নাই সবাইকে বলে দিয়েছি।
সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক তসলিম এসহান সাংবাদিকদের বলেন- আটককৃত অবৈধ কয়লা শুল্ক কার্যালয়ে জমা করার প্রক্রিয়া চলছে। চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।