পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করেছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশ। ইকো ফিস-২ প্রকল্পের আওতায় ১১ জন স্থানীয় জেলে নিয়ে ব্লু গার্ড সদস্যরা এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। সোমবার দেখা যায় চলমান লকডাউনের মধ্যেও সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমে লেম্বুরবন পর্যন্তÍ ১৩ কি:মি: এরা পাহাড়ায় নিয়োজিত থাকে।
এরফলে অসাধু জেলেরা ঘন জাল দিয়ে রেনুপোনা নিধন বন্ধ করবে বলে জানান ব্লু-গার্ডের সদস্যরা। এমনকি সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্যে জীব-বৈচিত্র্য বিনষ্ট করতে না পারে এনিয়ে কাজ করবে তাঁরা। ইতোমধ্যে এসব অপচনশীল বর্জ্য সৈকত থেকে তুলে বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে ফেলার কাজও শুরু করেছে এ ব্লু-গার্ড সদস্যরা।
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ওায়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশ’র ইকো ফিস-২ প্রকল্পের আওতায় কলাপাড়ার সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণে ৯ জুলাই থেকে কাজটি করছেন ব্লু গার্ড। ব্লু-গার্ড সদস্য পঞ্চাশোর্ধ আজিজ আকনের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এক সময় জীবিকার প্রয়োজনে কুয়াকাটা সৈকতে মশারির নেট দিয়ে রেনুপোনা শিকার করতেন।
গলদার রেনু সংগ্রহের নামে নানা প্রজাতির মাছ মারা পড়তো তাদের হাতে। সংরক্ষিত বন জঙ্গলের গাছ কেটে লাকড়ি হিসেবে বাজারে নিয়ে বিক্রি করায় ধ্বংস হচ্ছিল বন। কয়েক দিন আগে ওয়ার্ল্ড ফিসের একটি কর্মশালায় প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন আজিজ আকনসহ তার সঙ্গীরা। সেখানেই বুঝতে পেরেছেন রেনু পোনা ধরলে মৎস্য ভান্ডারে কি কি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
প্রাকৃতিক ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ধ্বংসে মানবসৃষ্ট দূর্যোগ হয়। তিনি আরও জানান, নিজে সচেতন হয়ে অপরকে সচেতন করতে তাঁর সাথে স্বেচ্ছায় আরও যুক্ত হয়েছেন কুয়াকাটার ইউসুফ হাওলাদার (৩৪), খলিল (৩০), নুর জামাল (৪০) ইমরান হোসেন (৩২), মেহেদী(৩০), মনির হোসেন (৩১), মনির (৩৫), সাইদুল (৩০), বেল্লাল (৩৬) ও হাবীব মুন্সী (৪০)।
৪ দিন ধরে এ সচেতনতামূলক কাজটি করতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিজ্ঞতার কথা জানান ব্লু-গার্ড সদস্য নুর জামাল। যারা রেনুপোনা ধরছে সবাই পরিচিত মুখ। তাদের নানাভাবে রেনুপেনা ধরার কুফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিরস্কারের শিকার হচ্ছেন। এসব থেকে অসাধু রেনুপোনা শিকারীদের নিভৃত করতে নুর জামাল এ প্রতিনিধিকে বলেন, যাগো হাতে আইন রইছে হ্যারা যদি আমাগো কামে সহযোগীতা করে তাইলে মোগো কামে সফলতা পামু।
ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশ’র ইকো ফিস-২ প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহকারি গবেষক সাগরিকা স্মৃতি গনমাধ্যমকে বলেন, সমুদ্রে চলছে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। সামুদ্রিক মাছের প্রজনন নিশ্চিত হলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি চিংড়ির রেনু শিকার করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের লাখ লাখ রেনু ধ্বংস হচ্ছে। সেজন্য সুবিধাভোগী প্রশিক্ষিত কুয়াকাটার ১১ জেলেকে উদ্বুদ্ধ করে মাঠে নামাতে ব্লু গার্ড গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।