কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ। ক্রমে পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে এসব বিধিনিষেধ অনেকেই শিথিল করলেও চীন এতে তেমন কোনো বদল আনেনি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতিতে। এ নিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভও হয়েছে। এ অবস্থায় কোভিডনীতি শিথিলে উদ্যোগী হয়েছে দেশটি।
কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় নেওয়া কোয়ারেন্টিন প্রোটোকল, গণ-পরীক্ষা ইত্যাদি কিছুটা শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। কয়েক দিনের মধ্যে এ সম্পর্কিত ঘোষণা আসতে পারে।
চীনে কোভিড পরিস্থিতি মাঝে বেশ ভালো অবস্থায় গেলেও দ্রুতই তা আবার বাজে দিক মোড় নেয়। এখনো দেশটিতে দিনে আক্রান্তের হার বেশ উচ্চ। তবে এর মধ্যেও সামগ্রিক দিক বিবেচনায় দেশটির কিছু শহরের কর্তৃপক্ষ পূর্ণ লকডাউন তুলে নিয়েছে। একইভাবে আক্রান্তের হার উচ্চ হলেও সরকারের উচ্চস্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলছেন, কোভিড ভাইরাসের শক্তি আর আগের মতো নেই। বেশ দুর্বল হয়ে গেছে। ফলে বিধিনিষেধ শিথিল করা যেতে পারে।
তবে বিধিনিষেধ শিথিলের বিষয়ে চীন সরকারের নমনীয় হওয়ার পেছনে আন্দোলনের ভূমিকার কথা তারা স্বীকার করতে নারাজ। তারা ভাইরাসের দুর্বল হওয়াকেই কারণ হিসেবে দেখাতে চায়। যদিও গত কয়েক বছরের মধ্যে এত বড় নাগরিক অসহযোগ চীন দেখেনি। এ আন্দোলনে যেমন মোমবাতি প্রজ্জ্বালনের মতো অহিংস পন্থা ছিল, তেমনি গুয়াংঝুতে পুলিশের সাথে সংঘাতের মতো ঘটনাও ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সাধারণ মানুষ অনেক দিন থেকেই লকডাউন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইছিল। কিন্তু বিস্তর মৃত্যু দেখা চীনা কর্তৃপক্ষ কোভিড প্রশ্নে ছিল অতি সতর্ক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাত্র একজন আক্রান্ত হলেই পুরো এলাকা লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির ওপর এবং সেই সূত্রে জনজীবনের ওপর। এতেই মানুষ ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ ছিল। গত সপ্তাহে জেরবার হয়ে মানুষ ফুঁসে ওঠে। শুরুতে এই আন্দোলন চীন সরকার দমন করতে চাইলেও এখন তারা অনেকটাই নমনীয় হয়েছে।