Dhaka ১০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভুলে যেও না জাতিসংঘ ইসরাইলকে সৃষ্টি করেছিল: নেতানিয়াহুকে ম্যাকরন

দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপর ইহুদিবাদী সেনাদের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহুর একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, জাতিসংঘের প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরাইল সৃষ্টি হয়েছিল।

ম্যাকরন মঙ্গলবার ফরাসি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন: “বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একথা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, জাতিসংঘই প্রথমবারের মতো ইসরাইলকে সৃষ্টি করেছিল। কাজেই এখন সেই জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করা তেল আবিবের উচিত হবে না।” পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে ইহুদি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা দু’টি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব পাস হয়। ওই প্রস্তাবের মাধ্যমে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

এর আগে সোমবার ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লকুর্নো এক বক্তব্যে বলেছেন, জাতিসংঘ ও তার প্রস্তাবগুলোর প্রতি ইসরাইলের অসম্মান একটি বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ, জাতিসংঘেরই একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরাইল সৃষ্টি হয়েছিল।

ইসরাইল লেবাননে আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে তেল আবিব ও প্যারিসের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। পলিটিকো এ সম্পর্কে এক প্রতিবেদনে বলেছে, পশ্চিম এশিয়ায় সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে ফ্রান্স উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং এ কারণে নেতানিয়াহু ও ম্যাকরনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। প্যারিস আশঙ্কা করছে যে, ইসরাইল যে যুদ্ধ চালাচ্ছে তা আঞ্চলিক ভয়াবহ সংকটে রূপ নিতে পারে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন ইহুদিবাদী ইসরাইলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানানোর পর প্যারিসে অনুষ্ঠেয় প্রতিরক্ষা শিল্প বিষয়ক একটি প্রদর্শনীতে ইসরাইলকে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। ইহুদিবাদী ইসরাইলি টিভি চ্যানেল কান জানিয়েছে, ওই প্রদর্শনী আগামী মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ওদিকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মঙ্গলবারও গাজা উপত্যকা ও লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা গাজা ও লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইহুদিবাদী সেনাদের পাশবিক হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ‘প্রতিরোধ ফ্রন্ট জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিয়েছেন।

প্যারিসের বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা বহন করেন। তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল: “তারা দুধের শিশুদেরও হত্যা করছে”, “ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে” ইত্যাদি।

এর আগে শুক্রবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘোষণা করে যে, দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর তিনটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা গুলিবর্ষণ করেছে। এর প্রতিবাদে প্যারিসে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

ফরাসির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে: এসব হামলায় আন্তর্জাতিক আইন মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে, কাজেই অবিলম্বে এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

ভুলে যেও না জাতিসংঘ ইসরাইলকে সৃষ্টি করেছিল: নেতানিয়াহুকে ম্যাকরন

Update Time : ১১:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপর ইহুদিবাদী সেনাদের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহুর একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, জাতিসংঘের প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরাইল সৃষ্টি হয়েছিল।

ম্যাকরন মঙ্গলবার ফরাসি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন: “বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একথা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, জাতিসংঘই প্রথমবারের মতো ইসরাইলকে সৃষ্টি করেছিল। কাজেই এখন সেই জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করা তেল আবিবের উচিত হবে না।” পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে ইহুদি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা দু’টি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব পাস হয়। ওই প্রস্তাবের মাধ্যমে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

এর আগে সোমবার ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লকুর্নো এক বক্তব্যে বলেছেন, জাতিসংঘ ও তার প্রস্তাবগুলোর প্রতি ইসরাইলের অসম্মান একটি বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ, জাতিসংঘেরই একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরাইল সৃষ্টি হয়েছিল।

ইসরাইল লেবাননে আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে তেল আবিব ও প্যারিসের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। পলিটিকো এ সম্পর্কে এক প্রতিবেদনে বলেছে, পশ্চিম এশিয়ায় সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে ফ্রান্স উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং এ কারণে নেতানিয়াহু ও ম্যাকরনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। প্যারিস আশঙ্কা করছে যে, ইসরাইল যে যুদ্ধ চালাচ্ছে তা আঞ্চলিক ভয়াবহ সংকটে রূপ নিতে পারে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন ইহুদিবাদী ইসরাইলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানানোর পর প্যারিসে অনুষ্ঠেয় প্রতিরক্ষা শিল্প বিষয়ক একটি প্রদর্শনীতে ইসরাইলকে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। ইহুদিবাদী ইসরাইলি টিভি চ্যানেল কান জানিয়েছে, ওই প্রদর্শনী আগামী মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ওদিকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মঙ্গলবারও গাজা উপত্যকা ও লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা গাজা ও লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইহুদিবাদী সেনাদের পাশবিক হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ‘প্রতিরোধ ফ্রন্ট জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিয়েছেন।

প্যারিসের বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা বহন করেন। তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল: “তারা দুধের শিশুদেরও হত্যা করছে”, “ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে” ইত্যাদি।

এর আগে শুক্রবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘোষণা করে যে, দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর তিনটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা গুলিবর্ষণ করেছে। এর প্রতিবাদে প্যারিসে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

ফরাসির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে: এসব হামলায় আন্তর্জাতিক আইন মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে, কাজেই অবিলম্বে এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে।