Dhaka ১০:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিন একমুঠো চিনাবাদাম খেলে যে উপকার পাবেন

ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালাকে ডেকে ১০-২০ টাকার চিনাবাদাম কিনলেন। এরপর হাঁটতে হাঁটতে খাচ্ছেন সেই ‘সস্তা’ বাদাম। আপনি হয়তো জানেনই না, এই কম দামের খাবারটাই কত উপকারী। এর উপকারিতা জানলে প্রতিদিনই এই বাদাম খেতে চাইবেন। চিনাবাদাম আমিষ, চর্বি ও ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ। আর চিনাবাদামে থাকা চর্বির বেশির ভাগই ‘গুড ফ্যাট’। এই ধরনের চর্বি আসলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট, ভিটামিন ই, কপার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও আর্জিনাইন। অনেকেই মনে করেন, চিনাবাদাম কম দামি বলে আখরোট বা কাজুবাদামের মতো পুষ্টি উপাদান নেই। প্রকৃতপক্ষে, চিনাবাদামে দামি বাদামের মতো একই স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

হৃদয় ভালো রাখে

বেশি পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় আখরোট ও বাদাম ‘হার্ট হেলদি’ খাবার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গবেষণায় বলা হয়েছে, দামি বাদামের মতো চিনাবাদামও হৃৎস্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চিনাবাদাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ করে। আমাদের শরীরে অনেক সময় ছোট ছোট আকারে রক্ত জমাট বাঁধে, এগুলো রোধ করে চিনাবাদাম এবং আপনার হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন কমায়

চিনাবাদামে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আপনার পেট ভরিয়ে রাখে। বাদামের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় চিনাবাদামে। এই প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়। ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার আপনাকে ক্যালরি পোড়াতেও সহায়তা করতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম

চিনাবাদামে গ্লাইসেমিক কম থাকে। এই কারণে চিনাবাদাম খেলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে না। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী চিনাবাদাম খান, তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

প্রদাহ কমায়

আগেই বলেছি, চিনাবাদামে প্রচুর ফাইবার থাকে, যার কারণে এটি শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রদাহ মানেই রোগের লক্ষণ। চিনাবাদামের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সঙ্গে আপনার পাচনতন্ত্রকে খাবার পরিপাকে সহায়তা করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যেসব বয়স্ক ব্যক্তি নিয়মিত চিনাবাদাম খেতেন, তাঁদের একধরনের পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। তার নাম হলো গ্যাস্ট্রিক কার্ডিয়া অ্যাডেনোকার্সিনোমা। এ ছাড়া চিনাবাদামে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

কতটুকু খাবেন

একমুঠ পরিমাণ চিনাবাদাম খেলেই যথেষ্ট। এটি আপনাকে ১৭০ ক্যালরি সরবরাহ করবে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪২ গ্রাম বা ১৬ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন। তবে উচ্চরক্তচাপ বা অন্য কোনো রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।

কিছু সতর্কতা

চিনাবাদাম স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও সবাই এটি খেতে পারে না। চিনাবাদাম খেলে মাঝেমধ্যে অ্যালার্জি, চুলকানি, বমি বমি ভাবের মতো লক্ষণ দেখা যায়। চিনাবাদাম বা যেকোনো বাদাম খাওয়ার পর যদি কোনো অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি হয়, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

প্রতিদিন একমুঠো চিনাবাদাম খেলে যে উপকার পাবেন

Update Time : ১২:২৫:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালাকে ডেকে ১০-২০ টাকার চিনাবাদাম কিনলেন। এরপর হাঁটতে হাঁটতে খাচ্ছেন সেই ‘সস্তা’ বাদাম। আপনি হয়তো জানেনই না, এই কম দামের খাবারটাই কত উপকারী। এর উপকারিতা জানলে প্রতিদিনই এই বাদাম খেতে চাইবেন। চিনাবাদাম আমিষ, চর্বি ও ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ। আর চিনাবাদামে থাকা চর্বির বেশির ভাগই ‘গুড ফ্যাট’। এই ধরনের চর্বি আসলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট, ভিটামিন ই, কপার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও আর্জিনাইন। অনেকেই মনে করেন, চিনাবাদাম কম দামি বলে আখরোট বা কাজুবাদামের মতো পুষ্টি উপাদান নেই। প্রকৃতপক্ষে, চিনাবাদামে দামি বাদামের মতো একই স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

হৃদয় ভালো রাখে

বেশি পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় আখরোট ও বাদাম ‘হার্ট হেলদি’ খাবার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গবেষণায় বলা হয়েছে, দামি বাদামের মতো চিনাবাদামও হৃৎস্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চিনাবাদাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ করে। আমাদের শরীরে অনেক সময় ছোট ছোট আকারে রক্ত জমাট বাঁধে, এগুলো রোধ করে চিনাবাদাম এবং আপনার হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন কমায়

চিনাবাদামে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আপনার পেট ভরিয়ে রাখে। বাদামের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় চিনাবাদামে। এই প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়। ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার আপনাকে ক্যালরি পোড়াতেও সহায়তা করতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম

চিনাবাদামে গ্লাইসেমিক কম থাকে। এই কারণে চিনাবাদাম খেলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে না। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী চিনাবাদাম খান, তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

প্রদাহ কমায়

আগেই বলেছি, চিনাবাদামে প্রচুর ফাইবার থাকে, যার কারণে এটি শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রদাহ মানেই রোগের লক্ষণ। চিনাবাদামের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সঙ্গে আপনার পাচনতন্ত্রকে খাবার পরিপাকে সহায়তা করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যেসব বয়স্ক ব্যক্তি নিয়মিত চিনাবাদাম খেতেন, তাঁদের একধরনের পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। তার নাম হলো গ্যাস্ট্রিক কার্ডিয়া অ্যাডেনোকার্সিনোমা। এ ছাড়া চিনাবাদামে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

কতটুকু খাবেন

একমুঠ পরিমাণ চিনাবাদাম খেলেই যথেষ্ট। এটি আপনাকে ১৭০ ক্যালরি সরবরাহ করবে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪২ গ্রাম বা ১৬ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন। তবে উচ্চরক্তচাপ বা অন্য কোনো রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।

কিছু সতর্কতা

চিনাবাদাম স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও সবাই এটি খেতে পারে না। চিনাবাদাম খেলে মাঝেমধ্যে অ্যালার্জি, চুলকানি, বমি বমি ভাবের মতো লক্ষণ দেখা যায়। চিনাবাদাম বা যেকোনো বাদাম খাওয়ার পর যদি কোনো অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি হয়, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।