কয়েক বছর আগে পাওয়ার টিলার চালিয়ে সংসারের খরচ জোগাতেন মফিজুল ইসলাম। এতে প্রতিনিয়ত সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হত তাকে। নুন আনতে পান্তা ফুরানো মফিজুলের ভাগ্য বদলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। জেলা যুবলীগের সভাপতি আপেলের সাথে সংখ্য গড়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করে মফিজুল। হয়ে উঠেন আপেলের ভাগিনা। তারপর থেকে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে হয়ে যান প্রহসনের ভোটের ইউপি সদস্য। গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী গ্যাং বাহিনী। শুরু তার কুকর্মের সূচনা । প্রতিনিধির ক্ষমতা ও আওয়ামী নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে হয়ে উঠেন এলাকার ভয়ংকর ভূমিদস্যু এবং মাদক সেবনকারীদের ও সন্ত্রাসীদের অর্থদাতা, আশ্রয়দাতা ও গডফাদার। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম। সাধারন পাওয়ার টিলার চালক ও শ্রমিক থেকে হয়ে উঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক,চলাফেরা করেন প্রাইভেট গাড়ীতে।তার বিরুদ্ধে ঠাকুরগাও প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন ভুক্তভোগীরা।বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচার হলেও আইনানুগ কোন ব্যবস্থা নেননি প্রশাসন।
যুবলীগ নেতা আব্দুল মজিদ আপেল ও অন্যান্য আওয়ামী নেতাদের ছায়াতলে থেকে বিভিন্ন মানুষের জমি জোর করে দখল করেছেন তিনি। তার ভয়ে মুখ খুলতে পারে না এলাকার কোন মানুষ। কেউ যদি তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় তাহলে তার ওপর চলে নির্মম অত্যাচার। তার রয়েছে কিশোরগাং ,মাদক ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রধারী বাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ইউনিয়নের ,চৌদ্দহাত কালিতলা বাজারের উত্তরপাশে জোরপূর্বক দখল করা জমিতে ঘর বানিয়ে মাদক সেবনকারীদের আড্ডাখানা বানান তিনি।সন্ধা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভরপুর থাকে মাদক সেবন ও অশ্লীল বাক্যালাপ। মাদক সেবনকারীদের আশ্রয় ও অর্থ প্রদান করেন মফিজুল মেম্বার বিনিময়ে মাদক সেবী সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক জমি দখল করে এবং রাত জেগে মফিজুল মেম্বারের জোরপূর্বক দখলকৃত জমি ও ঘর পাহাড়া দেয়। এলাকায় সমস্ত মারামারি, খুন খারাপী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে তার থাকে পরোক্ষ অথবা প্রত্যক্ষ ইন্ধন।এতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ও ভীত-সšস্ত তার ভয়ে কেউ মুখ খুলেনা।
বদিউল ইসলাম নামে একজন একজন ব্যক্তি মফিজুল মেম্বারের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন।প্রায় ০৯ মাস আগে মফিজুল মেম্বার তাকে ব্যাপক মারধর করে এবং কিছুদিন আগে তাকে হত্যা করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা তার
সন্ত্রাসী বাহিনীকে অফার করে এবং মিথ্যা মামলা দেয়। ওই ব্যক্তি এখন প্রাণভয়ে এলাকা ছাড়া। বর্তমানে সে হয়ে ওঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক । যার সবগুলোই জোর পূর্বক জমি দখল দখল। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কালিতলা বাজারে রয়েছে তার ১১ টি দোকান।কালিতলা কফি হাউস এর সাথে কফি হাউস সহ মোট ০৬ টি দোকান এবং হোটেল সহ মোট ০৫ টা দোকান। কালিতলা বাজারে মোট দোকান রওয়ছে ১১ টি । যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা । কালিতলা বাজারের পূর্ব পাশে ওয়াজউদ্দিনের চাতালের সাথে রয়েছে ২ বিঘা (১০০ শতক) জমি। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা ।মফিজুল মেম্বারের বাসার সাথে ৫ বিঘা (২৫০ শতক) জমি। বর্তমান যা বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
কালিতলা বাজারের উত্তর পাশে হাসেমের ডাংগা নামক স্থানে রয়েছে মোট ০৮ বিঘা (৪০০ শতক) জমি । বর্তমান যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা । কালিতলা বাজারের পূর্ব পাশে একটিয়া বাড়ীর নামক স্থানে পাকা রাস্তার সাথে রয়েছে ১ বিঘা (৫০ শতক) জমি। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। আরাজি শিং পাড়া (ফকির ডাংগা) স্কুলের পাশে রয়েছে ১ বিঘা (৫০ শতক)। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। ফকির ডাঙ্গা মসজিদের পাশে কিছুদিন পূর্বে ক্রয় করার একটি বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা।
শ্রী ঘুঘুরা দেব নাথ নামের সনাতন ধর্মের এক লোকের ৬ শতক জমি পাঁচ মাস আগে জোর দখল করে নেয় । কালিতলার মোঃ লিটন ইসলামের ২৫ শতক জমি এক বছর আগে তার লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা দখল করে নেয় । একইভাবে মোঃ দুলাল ইসলাম ৫ শতক মোঃ জালাল মাষ্টার ২১ শতক জমি জোর দখল করে নেয়। কালিতলা বাজারের পূর্বপাশে ৫৩৩ দাগের ২০০ শতক খাস জমির পত্তন করাইতে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নেয়।পুরোটাই ছিলো জালিয়াতি। সিএস, এসএ খতিয়ান অনুযায়ী ঐ জমি খাস।
একটি বিলাসবহুল প্রাইভেট কার এবং মাহিন্দ্র ট্যাক্টর রয়েছে। এছাড়াও নামে বেনামে রয়েছে অজানা অনেক সম্পত্তি। ভুক্তভোগী মোঃ দুলাল হোসেন (দুলু ড্রাইভার) বলেন, কয়েক বছর আগেও সে পাওয়ার টিলার ডাইভার ছিল। আমার সাথেও সে কয়েক বছর গাড়ি চালিয়েছে। সে জমির ব্যবসার নাম করে একজনই কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে রাস্তা স্বীকার করে মানুষের
কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও সে মানুষের জমির জোর দখল নেয়। তার এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তার বিরুদ্ধে মামলা হামলা সহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করা হয়। সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডে ত্রাস ও মাদকের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন এই মফিজুল মেম্বার। তার এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা ও তুলে নিয়ে মারধর করা তার অন্যতম কাজ। নুর ইসলাম নামক এক ব্যক্তির ছেলে আনারুল ইসলামকে মাদক ও সন্ত্রাসী কাজকর্মে ব্যবহার করতো মফিজুল ইসলাম।
আনারুলের বাবা আনারুলকে এসব কাজে নিষেধ করলে মফিজুল ইসলাম আনারুলের পিতা নুর ইসলামকে তুলে নিয়ে মারধর করে। আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় আনারুলের মতো আরো অনেক মাদকসেবী ও তৈরী করেছে এই ইউপি সদস্য। মফিজুল মেম্বারের প্রধান সন্ত্রাসী হিসাবে কাজ করে মৃত লতিফ ছেলে থুডা মজিবর, ক্যাশিয়ার ও পার্সোনাল এ্যাসিসেটেন্ড হিসাবে কাজ করে শ্রী গনেশ চন্দ্র রায়। মাদক বিক্রির সাপ্লাই চেইন ও সন্ত্রাসী হিসাবে কাজ করে সোহরাবের ছেলে মোঃ রানা ।
নুর ইসলাম নামক এক ব্যক্তির ছেলে আনারুল ইসলামকে মাদক ও সন্ত্রাসী কাজকর্মে ব্যবহার করতো মফিজুল ইসলাম। আনারুলের বাবা আনারুলকে এসব কাজে নিষেধ করলে মফিজুল ইসলাম আনারুলের পিতা নুর ইসলামকে তুলে নিয়ে মারধর করে। আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় আনারুলের মতো আরো অনেক মাদকসেবী ও তৈরী করেছে এই ইউপি সদস্য।
এ বিষয়ে মফিজুল মেম্বার কে ফোন দেয়া হলে তার ফোন নাম্বারটি বারবার বন্ধ পাওয়া যায়।