রাজশাহীর তানোর সদর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দূর্নীতিবাজ মাইনুল ইসলাম সেলিমের খুঁটির জোর কোথায় এমন প্রশ্ন শিক্ষক মহলের। তার বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম দূর্নীতি খবর প্রকাশ হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন স্বৈরাচারের দোসর মাইনুল ইসলাম সেলিম।এবার সেলিমের বিরুদ্ধে ভূয়া সনদ ও তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মডেল পাইলট স্কুলের আইসিটি শিক্ষক মুঞ্জুর রহমান। চলতি মাসের ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তার অনুলিপি সচিব, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অতিরিক্ত সচিব শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও যুগ্ম সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার অনিয়ম দূর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হলেও রহস্য জনক কারনে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি করেন অভিযোগ কারী।
অভিযোগে উল্লেখ, তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় তানোর রাজশাহী এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, মন্ত্রনালয়ের সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ মাইনুল ইসলাম প্রথমে সহকারী শিক্ষক হিসেবে মোহর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে উক্ত মাইনুল ইসলাম তানোর উপজেলার আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সান্নিধ্যে ও স্কুলের সাবেক সভাপতি লুৎফর হায়দার রশীদ ময়নার সহযোগীতায় ২০১০ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে।
কাম্য যোগ্যতা উল্লেখ থাকা সত্বেও যোগ্যতা বিহীন একজন শিক্ষক কে কিভাবে তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে কি করে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। সভাপতি মহোদয় অন্ধকারে থেকে শুধু মাত্র দলীয় বিবেচনায় যোগ্যতা না সত্বেয় উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করেন। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হতে হলে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.এ.বি.এড। শিক্ষাজীবনে একের অধিক ৩য় বিভাগ কোনো ক্রমেই গ্রহন যোগ্য নয় এবং বি.এড সার্টিফিকেট হতে হবে কোন সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ/ কোন পাবলিক বিশ্বিবিদ্যালয় হইতে সার্টিফিকেট গ্রহনকারী হতে হবে।
ইহা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অনুমোদিত। মোঃ মাইনুল ইসলামের এস.এস.সি ২য় বিভাগ-১৯৮৬ এইচ. এস.সি. ৩য় ১৯৮৮ স্নাতক-১৯৯৪ ৩য় বিভাগ এবং বি.এড ৩,০০ ২০০৮ ইং শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী ক্যাম্পাস রাজশাহী হইতে বিএড সনদ গ্রহন করে শিক্ষা মন্ত্রনলয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে কিভাবে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়ে চাকুরী করিয়া আসিতেছে।
ইহা বোধ গম্যের বাহিরে ভুয়া তথ্য ও জুয়া সনদ প্রাপ্ত, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম তানোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছে যেহেতু জনবল কাঠামো অনুযায়ী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছন ইহা সম্পূর্ণ বেআইনী ও নীতি পরিপন্থি। আমার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযোগের সত্যতা যাচাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করছি। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে প্রায় ৭৫,০০,০০০ (পঁচাত্তর লাখ টাকা) আত্মসাৎ / ০৯/২০২৪ ইং তারিখে কন্টিন্টোল কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী, চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী, বিদ্যালয় পরিদর্শক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী। উপ পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী। জেলা শিক্ষা অফিসার, রাজশাহী এবং জেলা দুর্নীতি দমন অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও কোন রূপ কার্যকারী ইতিবাচক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় নাই। এই অর্থ আত্মসাৎ এর ব্যাপারে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ব্যাপক ভাবে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়।
অভিযোগ কারী আইসিটি শিক্ষক মুঞ্জুর রহমান বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক কে শুধু মাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়া হয়। সেলিম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা অনিয়ম করেছে। শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। তৃতীয় বিভাগ ও শান্তা মারিয়াম থেকে বিএড সার্টিফিকেট দিয়ে কিভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান।
নিয়োগ হয়েছে রাজনৈতিক নেতার খায়েশ পুরুন করার জন্য। তার নিয়োগের কারনেই মডেল পাইলট স্কুল সরকারি না হয়ে মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি করন করা হয়। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে পড়বে। কিন্তু উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
এবিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সেলিমের মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগ বানিজ্যের দোসর সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।