Dhaka ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোপালী ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তার সহধর্মিনীর সারে ৭ কোটি টাকা জব্দ

ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্করের স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুম মালিকানাধীন গোপালগঞ্জ শহরে ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের বাড়ি ও ঢাকায় একটি ফ্ল্যাটসহ মোট ৭ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার স্থাবর সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।একই সাথে বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমানকে রিসিভার নিয়োগ করেছে আদালত।

রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তুহিন লস্করের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল মান্নান লস্করের ছেলে। টানা ১০ বছর ধরে ফরিদপুরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুম একজন গৃহিণী।

মো. মশিউর রহমান বলেন, আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর বিধি ১৮ অনুযায়ী এসব সম্পদ জব্দ করার আদেশ দেন এবং একইসঙ্গে এর সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় গোপালগঞ্জকে রিসিভার নিয়োগ দেন।

জব্দের তালিকায় রয়েছে ৭ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার স্থাবর সম্পদ। তার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের খাটরা মৌজার ৫ দশমিক ২০ শতক জায়গায় অবস্থিত ৬তলা একটি ভবন তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে রয়েছে। যার মূল্য ৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে রাকিন সিটি প্রজেক্টে অবস্থিত বিল্ডিং এ৬, টাওয়ার-০১–এর ৬ষ্ঠ তলায় ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার মূল্য চুক্তিপত্র অনুযায়ী ১ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকা। যা তুহিন লস্করের নিজ নামে রয়েছে। এসব সম্পদ তারা আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি বলে দুদক জানায়।

দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এর আগে আদালতের আদেশে তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে থাকা তিন কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ১ কোটি ৬ লাখ টাকার ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়।

অন্যদিকে স্ত্রী জামিলা পারভীর কুমকুমের ব্র্যাক ব্যাংকের ফরিদপুর শাখায় ২টি আলাদা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ও একই ব্যাংকে তুহিন লস্করের হিসাবে থাকা ২৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা যা ক্রোক করে দুদক।

দুদক জানায়, বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও এসব অর্থ উপার্জনের কোন উৎস দেখাতে পারেননি জামিলা পারভীন। খুলনার হাউজিং এস্টেটে একটি ৫ তলা বাড়ি, ফরিদপুরে দুটি ফ্ল্যাট এবং গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে তার নামে কয়েক কোটি টাকা মুল্যের বেশকিছু জমি রয়েছে বলে দাবি করে সূত্রটি।

মো. মশিউর রহমান জানান, ফরিদপুর জেলা পুলিশের সাবেক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামীয় গোপালগঞ্জ সদরের চাঁদমারি রোডে অবস্থিত ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের রিসিভার নিয়োগের বিজ্ঞ আদালতের আদেশ আদ্য প্রাপ্ত হয়েছি। আদেশ প্রাপ্ত হয়ে বাড়ির দখল বুঝে নেয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৭ জন ভাড়াটিয়া থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। আজ সোমবার ইনভেন্টরি করে বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

গোপালী ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তার সহধর্মিনীর সারে ৭ কোটি টাকা জব্দ

Update Time : ১০:৪৩:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্করের স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুম মালিকানাধীন গোপালগঞ্জ শহরে ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের বাড়ি ও ঢাকায় একটি ফ্ল্যাটসহ মোট ৭ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার স্থাবর সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।একই সাথে বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমানকে রিসিভার নিয়োগ করেছে আদালত।

রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তুহিন লস্করের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল মান্নান লস্করের ছেলে। টানা ১০ বছর ধরে ফরিদপুরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুম একজন গৃহিণী।

মো. মশিউর রহমান বলেন, আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর বিধি ১৮ অনুযায়ী এসব সম্পদ জব্দ করার আদেশ দেন এবং একইসঙ্গে এর সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় গোপালগঞ্জকে রিসিভার নিয়োগ দেন।

জব্দের তালিকায় রয়েছে ৭ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকার স্থাবর সম্পদ। তার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের খাটরা মৌজার ৫ দশমিক ২০ শতক জায়গায় অবস্থিত ৬তলা একটি ভবন তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে রয়েছে। যার মূল্য ৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে রাকিন সিটি প্রজেক্টে অবস্থিত বিল্ডিং এ৬, টাওয়ার-০১–এর ৬ষ্ঠ তলায় ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার মূল্য চুক্তিপত্র অনুযায়ী ১ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯০১ টাকা। যা তুহিন লস্করের নিজ নামে রয়েছে। এসব সম্পদ তারা আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি বলে দুদক জানায়।

দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এর আগে আদালতের আদেশে তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে থাকা তিন কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ১ কোটি ৬ লাখ টাকার ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়।

অন্যদিকে স্ত্রী জামিলা পারভীর কুমকুমের ব্র্যাক ব্যাংকের ফরিদপুর শাখায় ২টি আলাদা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ও একই ব্যাংকে তুহিন লস্করের হিসাবে থাকা ২৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা যা ক্রোক করে দুদক।

দুদক জানায়, বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও এসব অর্থ উপার্জনের কোন উৎস দেখাতে পারেননি জামিলা পারভীন। খুলনার হাউজিং এস্টেটে একটি ৫ তলা বাড়ি, ফরিদপুরে দুটি ফ্ল্যাট এবং গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে তার নামে কয়েক কোটি টাকা মুল্যের বেশকিছু জমি রয়েছে বলে দাবি করে সূত্রটি।

মো. মশিউর রহমান জানান, ফরিদপুর জেলা পুলিশের সাবেক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামীয় গোপালগঞ্জ সদরের চাঁদমারি রোডে অবস্থিত ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের রিসিভার নিয়োগের বিজ্ঞ আদালতের আদেশ আদ্য প্রাপ্ত হয়েছি। আদেশ প্রাপ্ত হয়ে বাড়ির দখল বুঝে নেয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৭ জন ভাড়াটিয়া থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। আজ সোমবার ইনভেন্টরি করে বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হবে।