Dhaka ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ভোলা: মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা মিজ ফরিদা আখতার

বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, আজ থেকে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ইলিশের বাড়ি ভোলা। ইলিশ আল্লাহর দান, এটিকে যদি সংরক্ষণ করে বড় হওয়ার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে ভোলার জেলেরা দরিদ্র থাকবে না। এখানে যে পরিমাণে মহিষ আছে এ মহিষের টক দধির ইতিমধ্যেই জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল বালুর মাঠে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসূমে “মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪” উপলক্ষে জেলেসহ বিভিন্ন পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সচেনতা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আপনারাই মা ইলিশ রক্ষা করে বাংলাদেশের ৩ ভাগের ১ ভাগ অংশের ইলিশ সম্পদ নিশ্চিত করছেন। এই সময়ে যারা ১২৪টি চরে অবৈধ জাল ফেলে রেনুসহ মা ইলিশ ধ্বংস করছেন তারা প্রকৃত জেলে নয় তারা ব্যবসায়ী দুর্বৃত্ত। তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবো না, আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। এ সময় জেলেদের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, এখন থেকে ইলিশের বাড়ী ভোলা বলে ঘোষণা দেন।

তিনি আরো বলেন, এখানে অসংখ্য চর রয়েছে, জেলেরা যদি মহিষসহ বিভিন্ন পশু লালন-পালন করে তাহলে তাদেরকে ভিজিএফ এর চালের দিকে তাকাতে হবেনা। মা ইলিশ রক্ষায় যে অভিযান চলছে তা জেলেদের কোনো শাস্তি নয়। আপনারাই মা ইলিশ রক্ষা করছেন তাই আপনাদেরকে সালাম জানাই।

মিজ ফরিদা আখতার বলেন, আপনারা দাদনের ফাঁদে আটকা পড়ে থাকেন। এ ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে মাছ শিকারে যেতে হয়। আপনাদেরকে যেন সল্প সুদে ঋণ পেতে পারেন তার ব্যাপারে সরকারের কাছে দাবী পেশ করা হবে। কারণ আপনাদের বছরে ৩ বার একটা ব্যাঙ্ক এড়িয়ার মধ্যে থাকতে হয়, এই সময়ে আপনাদেরকে যদি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রাখতে পারি তা হলে আর দাদন ব্যবস্থায় যেতে হবে না। ইলিশের এই প্রজনন মৌসূমে সকলকে সচেতন হতে হবে, তা না হলে সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা ব্যর্থ হবে।

তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারত এবং মিয়ানমারের জেলেরা বাংলাদেশের সিমানার মধ্যে এসে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। বাংলাদেশে তাদের কোন অধিকার নেই যে মাছ শিকার করে নিয়ে যাবে। তাদেরকে ধরেও আইনের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশের কোষ্টগার্ড, নৌ-বাহিনী ও নৌ-পুলিশকে সজাগ ও সচেষ্ট থাকতে হবে। শুধু বাংলাদেশের জেলেদেরকে ধরলে হবে না, ভারত এবং মিয়ানমারের জেলেদেরও ধরতে হবে।

ভোলা জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শরীফুল হক, কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ শাহীন মজিদ (জি) বিএন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ইলিশ প্রজনন প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদউল্লাহ, বরিশাল অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন, জেলা ক্ষুদ্র ও মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ এরশাদ, মেদুয়া ইউনিয়নের মোঃ জাভেদ মাঝি, ধনিয়া ইউনিয়নের মোঃ বশির মাঝি। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোলা মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ সদস্যবৃন্দ ও ভোলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগণ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ভোলা: মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা মিজ ফরিদা আখতার

Update Time : ০৬:৩৮:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, আজ থেকে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ইলিশের বাড়ি ভোলা। ইলিশ আল্লাহর দান, এটিকে যদি সংরক্ষণ করে বড় হওয়ার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে ভোলার জেলেরা দরিদ্র থাকবে না। এখানে যে পরিমাণে মহিষ আছে এ মহিষের টক দধির ইতিমধ্যেই জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল বালুর মাঠে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসূমে “মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪” উপলক্ষে জেলেসহ বিভিন্ন পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সচেনতা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আপনারাই মা ইলিশ রক্ষা করে বাংলাদেশের ৩ ভাগের ১ ভাগ অংশের ইলিশ সম্পদ নিশ্চিত করছেন। এই সময়ে যারা ১২৪টি চরে অবৈধ জাল ফেলে রেনুসহ মা ইলিশ ধ্বংস করছেন তারা প্রকৃত জেলে নয় তারা ব্যবসায়ী দুর্বৃত্ত। তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবো না, আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। এ সময় জেলেদের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, এখন থেকে ইলিশের বাড়ী ভোলা বলে ঘোষণা দেন।

তিনি আরো বলেন, এখানে অসংখ্য চর রয়েছে, জেলেরা যদি মহিষসহ বিভিন্ন পশু লালন-পালন করে তাহলে তাদেরকে ভিজিএফ এর চালের দিকে তাকাতে হবেনা। মা ইলিশ রক্ষায় যে অভিযান চলছে তা জেলেদের কোনো শাস্তি নয়। আপনারাই মা ইলিশ রক্ষা করছেন তাই আপনাদেরকে সালাম জানাই।

মিজ ফরিদা আখতার বলেন, আপনারা দাদনের ফাঁদে আটকা পড়ে থাকেন। এ ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে মাছ শিকারে যেতে হয়। আপনাদেরকে যেন সল্প সুদে ঋণ পেতে পারেন তার ব্যাপারে সরকারের কাছে দাবী পেশ করা হবে। কারণ আপনাদের বছরে ৩ বার একটা ব্যাঙ্ক এড়িয়ার মধ্যে থাকতে হয়, এই সময়ে আপনাদেরকে যদি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রাখতে পারি তা হলে আর দাদন ব্যবস্থায় যেতে হবে না। ইলিশের এই প্রজনন মৌসূমে সকলকে সচেতন হতে হবে, তা না হলে সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা ব্যর্থ হবে।

তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারত এবং মিয়ানমারের জেলেরা বাংলাদেশের সিমানার মধ্যে এসে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। বাংলাদেশে তাদের কোন অধিকার নেই যে মাছ শিকার করে নিয়ে যাবে। তাদেরকে ধরেও আইনের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশের কোষ্টগার্ড, নৌ-বাহিনী ও নৌ-পুলিশকে সজাগ ও সচেষ্ট থাকতে হবে। শুধু বাংলাদেশের জেলেদেরকে ধরলে হবে না, ভারত এবং মিয়ানমারের জেলেদেরও ধরতে হবে।

ভোলা জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শরীফুল হক, কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ শাহীন মজিদ (জি) বিএন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ইলিশ প্রজনন প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদউল্লাহ, বরিশাল অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন, জেলা ক্ষুদ্র ও মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ এরশাদ, মেদুয়া ইউনিয়নের মোঃ জাভেদ মাঝি, ধনিয়া ইউনিয়নের মোঃ বশির মাঝি। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোলা মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ সদস্যবৃন্দ ও ভোলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগণ।