২০২৮ সাল মধ্যে ভোলায় আরো ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে এমনটাই জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানী গ্যাসের সংকট রয়েছে। ফলে গ্যাস আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। তাই গ্যাস সংকট দূর করতে ভোলাতে পরিকল্পনা করে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে আরো ১৪টি সর্বমোট ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ভোলার ইলিশা-১ গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখনো গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। আমাদের এখন ৪ হাজার এমসি গ্যাস দরকার, সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ২ হাজার। আমরা বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে গ্যাস আমদানি করছি, এতে আমাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্র ব্যয় হচ্ছে। ঘাটতি মেটানোর জন্য বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হয়। আমরা জোড়ালোভাবে চেষ্টা করছি নতুন নতুন গ্যাস ফিল্ড তৈরি করে গ্যাসের উৎপাদনমুখী হওয়ার।
ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না এবং টেন্ডারের মাধ্যমে যার কাছে ভালো প্রস্তাব পাবো আমরা তাকেই কাজ দিবো। এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নেওয়া হবে। কোনো অনিয়ম করতে দেয়া হবে না। এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা সব বড় বড় প্রকল্প গ্রহন করেছি। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনটাকে গুরুত্ব দেইনি, তাই দুর্নীতি বেশি হয়েছে এই ধরনের বড় প্রকল্পে। আমরা জনগনের চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে চাই।
বিদ্যু ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এ মুহূর্তে বাসা-বাড়িতে গ্যাস দেয়া হবে, আমাদের জন্য এটি মিথ্যা আশ্বাস। আমি যেহেতু রাজনীতি করবোনা, তাই এই ধরনের মিথ্যা আশ্বাস দিবোনা। বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের প্রসঙ্গ টেনে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে সারাদেশে গ্যাস সরবরাহ বাড়লে তখন এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।
ভোলায় সফর সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এখানে আসার উদ্দেশ্য হলো আরও গ্যাস পাওয়া যায় কিনা সেটার সম্ভাবনা এবং কি করলে আরও বেশি গ্যাস পাওয়া যাবে সেটা দেখা। এখানে (ভোলায়) যে গ্যাস আবিস্কৃত হয়েছে সেই গ্যাসের পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। সেটার কিভাবে পূর্ণ ব্যবহার করা যায় সেই বিবেচনা করা। এ সময় ভোলার বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান ও গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন তিনি।
ভোলায় একদিনের সরকারী সফরে তিনি এখানকার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র, ভোলা নর্থ-১ ও ইলিশা-২ নং গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। বিকেলে তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলার ২২৫ ও ২২০ মেঘাওয়াট গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন। এসময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম মঈন আহমেদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।