Dhaka ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরের শেখহাটিতে গৃহবধূকে নৃশংসভাবে হত্যা

যশোরের শেখহাটিতে শাহানারা বেগম সানা (৫০) নামে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে নিজ বাড়িতে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার খালাতো ভাই সুমন পলাতক রয়েছে। হত্যাকান্ডে তারা সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে নিহতের ছেলে সোহেল সন্দেহ করছেন। থানা ও ডিবি পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, শেখহাটি আর্দশপাড়ার ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমান তার স্ত্রী সানা বেগমকে ৩০ অক্টোবর সকাল ১০টায় যশোর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে যান। এরপর দুপুর ২ টার দিকে তিনি ইজিবাইক চালানোর জন্য বাইরে যান। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বাড়ি ফিরে মূল ফটকে এবং বসতঘরের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলানো দেখতে পান। এসময় আতিয়ার তার ছেলে ইউসুফকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেন। তিনি নিখোঁজের বিষয়টি কোতোয়ালি মডেল থানাকে অবহিত করেন। এরপর ৩১ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ এবং সোহেল বাড়ির দেয়াল বেয়ে টিনের চালার উপর দিয়ে বাড়ির ভেতরে ছাগলকে খাবার দেয়ার জন্য প্রবেশ করেন। এসময় তারা বসত ঘরের দরজার সাথে রক্ত মাখা কাপড়ের টুকরা দেখে তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন। আর শাহানারা বেগমের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।

মরদেহ পাওয়ার খবর কোতোয়ালি থানাকে জানালে পুলিশ দুপুর ১২ টার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শাহানারা বেগমের স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ ও সোহেল জানিয়েছেন, তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া তালবাড়ীয়া গ্রামের বাবলা (৩০) ও তার খালাতো ভাই সুমন (২৫) এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকতে পারে। তারা তার মাকে হত্যা করে বাড়ির সকল দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় শাহানারা বেগমের শরীরে থাকা স্বর্ণের দুল, চেইন, আংটি ও চুড়ি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে বলেও জানান তারা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা এসআই আল আমিন জানিয়েছেন, গলা কেটে, মাথায় ও বুকে চাকু দ্বারা আঘাত করে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।

তথ্য মিলেছে তালবাড়ীয়ার হোসেন আলীর ছেলে বাবলা (৩০) গত তিন মাস যাবৎ সস্ত্রীক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন শাহানারা বেগমের বাড়িতে। সেই সুবাদে বাবলার বাসায় তার খালাতো ভাই সুমন মাঝে মধ্যে যাতায়াত করত। ওই বাবলা মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন চুরির সাথে সম্পৃক্ত ছিল বলে আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাহানারা বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন বাবলাকে বাসা ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। ৩১ অক্টোবর ভাড়াটিয়া বাবলা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

যশোরের শেখহাটিতে গৃহবধূকে নৃশংসভাবে হত্যা

Update Time : ০৯:৪৯:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

যশোরের শেখহাটিতে শাহানারা বেগম সানা (৫০) নামে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে নিজ বাড়িতে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার খালাতো ভাই সুমন পলাতক রয়েছে। হত্যাকান্ডে তারা সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে নিহতের ছেলে সোহেল সন্দেহ করছেন। থানা ও ডিবি পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, শেখহাটি আর্দশপাড়ার ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমান তার স্ত্রী সানা বেগমকে ৩০ অক্টোবর সকাল ১০টায় যশোর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে যান। এরপর দুপুর ২ টার দিকে তিনি ইজিবাইক চালানোর জন্য বাইরে যান। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বাড়ি ফিরে মূল ফটকে এবং বসতঘরের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলানো দেখতে পান। এসময় আতিয়ার তার ছেলে ইউসুফকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেন। তিনি নিখোঁজের বিষয়টি কোতোয়ালি মডেল থানাকে অবহিত করেন। এরপর ৩১ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ এবং সোহেল বাড়ির দেয়াল বেয়ে টিনের চালার উপর দিয়ে বাড়ির ভেতরে ছাগলকে খাবার দেয়ার জন্য প্রবেশ করেন। এসময় তারা বসত ঘরের দরজার সাথে রক্ত মাখা কাপড়ের টুকরা দেখে তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন। আর শাহানারা বেগমের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।

মরদেহ পাওয়ার খবর কোতোয়ালি থানাকে জানালে পুলিশ দুপুর ১২ টার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শাহানারা বেগমের স্বামী আতিয়ার, ছেলে ইউসুফ ও সোহেল জানিয়েছেন, তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া তালবাড়ীয়া গ্রামের বাবলা (৩০) ও তার খালাতো ভাই সুমন (২৫) এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকতে পারে। তারা তার মাকে হত্যা করে বাড়ির সকল দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় শাহানারা বেগমের শরীরে থাকা স্বর্ণের দুল, চেইন, আংটি ও চুড়ি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে বলেও জানান তারা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা এসআই আল আমিন জানিয়েছেন, গলা কেটে, মাথায় ও বুকে চাকু দ্বারা আঘাত করে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।

তথ্য মিলেছে তালবাড়ীয়ার হোসেন আলীর ছেলে বাবলা (৩০) গত তিন মাস যাবৎ সস্ত্রীক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন শাহানারা বেগমের বাড়িতে। সেই সুবাদে বাবলার বাসায় তার খালাতো ভাই সুমন মাঝে মধ্যে যাতায়াত করত। ওই বাবলা মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন চুরির সাথে সম্পৃক্ত ছিল বলে আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাহানারা বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন বাবলাকে বাসা ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। ৩১ অক্টোবর ভাড়াটিয়া বাবলা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল।