Dhaka ১১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ আমলে বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে: টিআইবি

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে পাচার হওয়া অর্থ ও তা উদ্ধারের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেড় দশকে রাষ্ট্র কাঠামোকে ব্যবহার করেই পাচার হয়েছে এসব অর্থ। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। তবে তা সময়সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে সেই দেশের সঙ্গে আইনি চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক ও ব্যবসায়িক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে অর্থপাচার ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না। অর্থপাচার বন্ধে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ (এসবি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অডিয়াস ডেট অ্যান্ড রিকভারি অব বাংলাদেশ লন্ডার্ড ওয়েলথ’ শীর্ষক সেমিনারটি সকালে রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, ব্যাংকিং খাতকে যে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তার জন্য এক নাম্বার দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানে ‘গড়ে ওঠা সংস্কৃতি’ রাতারাতি বদলানো সম্ভব নয়। এগুলোর মৌলিক সংস্কার তথা ঢেলে সাজানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ থেকে ঠিক কত টাকা পাচার হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচারের কথা বলেছে, তা ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে পাচারের তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা হতে পারে। এর বাইরেও চালান জালিয়াতি, দেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের পাঠানো অর্থ, ভিসা ও অভিবাসন বাবদ, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়েছে। সামগ্রিকভাবে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১২–১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব, তবে এটি অত্যন্ত কঠিন এবং প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি। অর্থ ফেরত আনার জন্য বিএফআইইউ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সিআইডি, দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন। যেসব দেশে টাকা পাচার হয়েছে, তাদের আন্তরিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির প্রয়োজন। আগামী দুই বছরে যদি ১০০ মিলিয়ন ডলার বা এক পেনিও ফেরত আনা যায়, সেটি হবে সারপ্রাইজ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার দেওয়া চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি

আওয়ামী লীগ আমলে বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে: টিআইবি

Update Time : ০৮:২৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে পাচার হওয়া অর্থ ও তা উদ্ধারের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেড় দশকে রাষ্ট্র কাঠামোকে ব্যবহার করেই পাচার হয়েছে এসব অর্থ। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। তবে তা সময়সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে সেই দেশের সঙ্গে আইনি চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক ও ব্যবসায়িক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে অর্থপাচার ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না। অর্থপাচার বন্ধে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ (এসবি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অডিয়াস ডেট অ্যান্ড রিকভারি অব বাংলাদেশ লন্ডার্ড ওয়েলথ’ শীর্ষক সেমিনারটি সকালে রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, ব্যাংকিং খাতকে যে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তার জন্য এক নাম্বার দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানে ‘গড়ে ওঠা সংস্কৃতি’ রাতারাতি বদলানো সম্ভব নয়। এগুলোর মৌলিক সংস্কার তথা ঢেলে সাজানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ থেকে ঠিক কত টাকা পাচার হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচারের কথা বলেছে, তা ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে পাচারের তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা হতে পারে। এর বাইরেও চালান জালিয়াতি, দেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের পাঠানো অর্থ, ভিসা ও অভিবাসন বাবদ, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়েছে। সামগ্রিকভাবে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১২–১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব, তবে এটি অত্যন্ত কঠিন এবং প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি। অর্থ ফেরত আনার জন্য বিএফআইইউ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সিআইডি, দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন। যেসব দেশে টাকা পাচার হয়েছে, তাদের আন্তরিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির প্রয়োজন। আগামী দুই বছরে যদি ১০০ মিলিয়ন ডলার বা এক পেনিও ফেরত আনা যায়, সেটি হবে সারপ্রাইজ।