Dhaka ০৬:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে উৎপাদনে নতুন মাইল ফলক

দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরের একমাত্র মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে মাসিক উৎপাদনের ইতিপূর্বের একের পর এক সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গত অক্টোবর মাসে খনির পাথর উৎপাদনের একটি নতুন মাসিক পাথর উত্তোলনের রেকর্ড তৈরী করেছে বে-সরকারি সংস্থা জিটিসি।

পাথর খনির পরিচালনা,উৎপাদন এবং উন্নয়নে জিটিসি’এর সাথে ২য় দফা চুক্তির পর গত অক্টোবর মাসে প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন মাসিক সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমানে পাথর উত্তোলন করেছে খনির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)।

জানা গেছে, গত ২০০৭ সালে পাথর খনির বাণিজ্যিক উত্তোলনের শুরু থেকে পেট্রোবাংলার মাসিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত  লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সকল মাসেই অধিক পরিমানে পাথর উত্তোলন করেই চলেছে জিটিসি।

উল্লেখ্য বর্তমান চুক্তির সময়কালে ধারাবাহিকভাবে প্রায় প্রতিমাসেই জিটিসি পাথর উত্তোলনের নিজেদের গড়া রেকর্ড দিয়ে নতুন মাইল ফলক স্থাপন করে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। এবং দেশের চলমান  অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন ব্যবস্থাপনায় মধ্যপাড়া পাথর খনিটি ইতিপূর্বে ধারাবাহিক লোকসানে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পাথর খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে গত ২০১৩ ইং সালে জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে খনি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা, রক্ষনাবেক্ষন,উৎপাদন এবং পরিচালনা চুক্তি হয়। জিটিসি খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে এবং প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা, কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা সহ  নানা প্রতিকূলতার মাঝেও জিটিসি গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে টানা ৫ অর্থ বছরে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। যার ফলশ্রুতিতে পাথর উত্তোলনে জিটিসি’র এই সফলতার পর প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষে জিটিসি’র সাথে নতুন করে আবারো খনি কর্তৃপক্ষের ০৬ বছরের জন্য চুক্তি হয়। দ্বিতীয় দফা চুক্তির প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে নির্ধারিত সময়ে বাৎসরিক উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী পরিমান পাথর উত্তোলন করে জিটিসি তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। এবং ধারাবাহিকভাবে সেই দক্ষতা ও সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে চলেছে।

খনি সুত্র জানায়, মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে উৎপাদনের মাসিক এই নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টির ফলে খনিটি বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার ফলে সরকারের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্ত খনি কর্তৃপক্ষের আয়ত্বাধীন পাথর বিক্রয় অতিমাত্রায় ধীর গতিতে হওয়ার ফলশ্রুতিতে পাথর বিক্রি বাড়ছে না। বর্তমানে খনির বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টনের অধিক পাথর মজুদ রয়েছে।

খনি থেকে বর্তমানে মাসিক পাথর উত্তোলনের ধারাবাহিক এই রেকর্ড এর তুলনায় পাথর বিক্রি কম হওয়ার ফলে পাথর রাখার জায়গার অভাবে আবারো খনিটির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। উত্তোলিত পাথর রাখার জায়গার অভাবে খনির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি। খনি বন্ধ হলে সরকারের রাজস্ব কমে যাওয়ার পাশাপাাশি খনির পাথর ব্যবসা এবং খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ও শ্রেনী পেশার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় ৫ হাজার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে। পাথর বিক্রয় বাড়াতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করে সরকারি বে-সরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতের পাথর ব্যবহার বন্ধ করে দেশের পাথর ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

মধ্যপাড়া পাথর খনির উৎপাদন ও উন্নয়নের এই অবদান অব্যাহত রাখা এবং রেকর্ড পরিমানে পাথর উত্তোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে খনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে  জার্মানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর মাধ্যমে মধ্যপাড়া পাথর খনি দেশের অর্থনীতির একটি মডেল হবে বলে খনি সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

সুপেয় পানির অভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভোলার চরাঞ্চলের নারী-শিশুরা

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে উৎপাদনে নতুন মাইল ফলক

Update Time : ০২:৪৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরের একমাত্র মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে মাসিক উৎপাদনের ইতিপূর্বের একের পর এক সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গত অক্টোবর মাসে খনির পাথর উৎপাদনের একটি নতুন মাসিক পাথর উত্তোলনের রেকর্ড তৈরী করেছে বে-সরকারি সংস্থা জিটিসি।

পাথর খনির পরিচালনা,উৎপাদন এবং উন্নয়নে জিটিসি’এর সাথে ২য় দফা চুক্তির পর গত অক্টোবর মাসে প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন মাসিক সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমানে পাথর উত্তোলন করেছে খনির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)।

জানা গেছে, গত ২০০৭ সালে পাথর খনির বাণিজ্যিক উত্তোলনের শুরু থেকে পেট্রোবাংলার মাসিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত  লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সকল মাসেই অধিক পরিমানে পাথর উত্তোলন করেই চলেছে জিটিসি।

উল্লেখ্য বর্তমান চুক্তির সময়কালে ধারাবাহিকভাবে প্রায় প্রতিমাসেই জিটিসি পাথর উত্তোলনের নিজেদের গড়া রেকর্ড দিয়ে নতুন মাইল ফলক স্থাপন করে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। এবং দেশের চলমান  অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন ব্যবস্থাপনায় মধ্যপাড়া পাথর খনিটি ইতিপূর্বে ধারাবাহিক লোকসানে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পাথর খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে গত ২০১৩ ইং সালে জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে খনি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা, রক্ষনাবেক্ষন,উৎপাদন এবং পরিচালনা চুক্তি হয়। জিটিসি খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে এবং প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা, কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা সহ  নানা প্রতিকূলতার মাঝেও জিটিসি গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে টানা ৫ অর্থ বছরে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। যার ফলশ্রুতিতে পাথর উত্তোলনে জিটিসি’র এই সফলতার পর প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষে জিটিসি’র সাথে নতুন করে আবারো খনি কর্তৃপক্ষের ০৬ বছরের জন্য চুক্তি হয়। দ্বিতীয় দফা চুক্তির প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে নির্ধারিত সময়ে বাৎসরিক উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী পরিমান পাথর উত্তোলন করে জিটিসি তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। এবং ধারাবাহিকভাবে সেই দক্ষতা ও সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে চলেছে।

খনি সুত্র জানায়, মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে উৎপাদনের মাসিক এই নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টির ফলে খনিটি বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার ফলে সরকারের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্ত খনি কর্তৃপক্ষের আয়ত্বাধীন পাথর বিক্রয় অতিমাত্রায় ধীর গতিতে হওয়ার ফলশ্রুতিতে পাথর বিক্রি বাড়ছে না। বর্তমানে খনির বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টনের অধিক পাথর মজুদ রয়েছে।

খনি থেকে বর্তমানে মাসিক পাথর উত্তোলনের ধারাবাহিক এই রেকর্ড এর তুলনায় পাথর বিক্রি কম হওয়ার ফলে পাথর রাখার জায়গার অভাবে আবারো খনিটির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। উত্তোলিত পাথর রাখার জায়গার অভাবে খনির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি। খনি বন্ধ হলে সরকারের রাজস্ব কমে যাওয়ার পাশাপাাশি খনির পাথর ব্যবসা এবং খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ও শ্রেনী পেশার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় ৫ হাজার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে। পাথর বিক্রয় বাড়াতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করে সরকারি বে-সরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতের পাথর ব্যবহার বন্ধ করে দেশের পাথর ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

মধ্যপাড়া পাথর খনির উৎপাদন ও উন্নয়নের এই অবদান অব্যাহত রাখা এবং রেকর্ড পরিমানে পাথর উত্তোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে খনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে  জার্মানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর মাধ্যমে মধ্যপাড়া পাথর খনি দেশের অর্থনীতির একটি মডেল হবে বলে খনি সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন।