ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা উপদেষ্টাদের আশ্বাসে হাসপাতালে ফিরেছেন। তারা এর আগে দাবি অনুযায়ী উপদেষ্টারা না আসায় মধ্যরাতেও সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকেন।
অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর বিছানাপত্র নিয়ে এসে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে অবস্থান করার ঘোষণা দেন । এই বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের কারও এক পা নেই, কেউ কেউ হুইলচেয়ারে, আবার কারও চোখে ব্যান্ডেজ রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান সেখানে যান। তাদের দাবি পূরণের আশ্বাসে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর সড়ক থেকে হাসপাতালে ফিরতে রাজি হয়েছেন আহতরা।
এ সময় মাহফুজ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টায় সচিবালয়ে আহতদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। কীভাবে এই আহতদের পাশে সরকার থাকতে পারে, সে বিষয়ে সেখানে আলোচনা করা হবে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের ব্যর্থতা আছে, ভুল আছে। আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, চেষ্টার কোনো ঘাটতি ছিল না, কিন্তু আমরা করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়েছি। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে বলেছিলেন যে সবার চিকিৎসাসহ যা কিছু দরকার, তা উনি করবেন। আমাদের অবশ্যই ঘাটতি ছিল। আপনাদের এভাবে বসে থাকা আমাদের ভালো লাগছে না। এটি আমাদের জন্যও হৃদয়বিদারক ঘটনা।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সহকারীর দায়িত্বে আসা ড. মো. সায়েদুর রহমান আহতদের দেশের সেরা চিকিৎসা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন,আমরা একটা সুযোগ চাই। আমাদের একটা সুযোগ দিন। কোনো ব্যত্যয় হলে আমরা দায়িত্বে থাকব না।
আর উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন,আমরা কথা দিচ্ছি, আপনাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করব। না পারলে তখন যা ইচ্ছা করবেন, কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে আপনাদের সুষ্ঠু চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।
নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন,একটা ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। বহু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসুন আমরা আলোচনার ভিত্তিতে একটা রূপরেখা তৈরি করি। সেটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য আপনারা একটা টিম করবেন।
এরপর আহতরা হাসপাতালে ফিরতে রাজি হন। তখন উপদেষ্টারা তাদের নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন। রোগীদের হাসপাতালের শয্যায় পৌঁছে দিয়ে পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের দেখে রাত সোয়া ৪টার পর উপদেষ্টারা বাসার উদ্দেশে যাত্রা করেন।