চলমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রজ্ঞাপনে দেশের সকল পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদ থেকে অপসারণ করার পর থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছে সেবা কার্যক্রম। এরব্যতিক্রম নয় সিরাজগঞ্জের ৭ টি পৌরসভার নাগরিক সেবার সকল কার্যক্রম। দিনের পর দিন পৌরসভায় ঘুরেও মিলছেনা কাঙ্খিত সেবা। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌরসভার সাধারণ নাগরিকরা। তবে বর্তমান পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও সচিবরা বলছেন তারা যথা সাধ্য চেষ্টা করছেন কাজ চলমান রাখতে।
জানাগেছে,সিরাজগঞ্জ জেলা ৯ টি উপজেলা নিয়ে গঠিত হলেও এর মধ্যে ৭টি পৌরসভা কার্যক্রম রয়েছে। কিন্তু চলতি বছরের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর মেয়র ও কাউন্সিলররা হামলা মামলার ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে বর্তমান অর্ন্তরবর্তীকালীন সরকার ২৬ সেপ্টেম্বর তাদের সকলকে পদ থেকে অপসারিত করলে স্থবির হয়ে পড়ে পৌরসভার নাগরিক সেবা কার্যক্রম।
এতে নাগরিকরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেননা তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে। ফলে পৌরসভায় এসে ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম সনদ, মৃত্যুসনদ, নাগরিক সনদপত্র, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে বুক্তোভাগিদের অভিযোগ। অপরদিকে পৌরসভার স্থবির হয়ে পড়া কার্যক্রম সচল ও জনসেবা নিরবচ্ছিন্ন করতে প্রশাসক নিয়োগের পাশাপাশি একাধিক জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করা হলেও তারা কোন প্রকার পৌরসভায় না আসাতে সেবার প্রদানে দারুন ব্যাঘাত ঘটছে।
শুধু তাইনা নাগরিকরা উণ্টো এসকল কর্মখতাদের অপিসে গেলেও মিলছেনা সেবা। কারণ অনুসন্ধানে জানাগেছে এসকল সরকারি কর্মকর্তা সবাই বাহিরের জেলার। স্থানীয় কোন নাগরিককে চেনা বা পরিচয় না থাকার কারনে এমন হচ্ছে। অপরদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থাকলে এমন ভোগান্তি হতোনা বলে সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় সেবা নিতে আসা একাধিক নাগরিক মনে করেন।
সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ধানবান্ধি মহল্লার বাসিন্দা মীর রাশের কবির শান্ত জানান,আমি গত ৭দিন ধনে পৌরসভায় মুত্য সনদের জন্য ঘোরাঘুরি করছি। পৌরসভায় আসলে বলে ওই অফিসে যান। ওই কর্মকর্তা ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন। কিস্তু সেখানে গেলেও তাকে পাওয়া যাচ্ছেনা আবার পাওয়া অগেলেও তিনি আমাকে না চেনার কারণে আবার পৌরসভায় ফেরত পাঠাচ্ছেন।
এভাবে আমি শুধু পৌরসভায় আসছি আর যাচ্ছি। এতে সময়,আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। এর দায় কে নিবে। কিন্ত পৌরসভায় যদি আজ জনপ্রতিনিধি থাকতো তাহলে এমন ভোগান্তি হতোনা। তারমতে যেহেতু প্রশাসক আছে আমরা ভেবেছিলাম সেবার মান ভালো হবে কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে অন্যকিছু।
মাজেদুল আলম নামে অপর পৌর নাগনিক অকপটে স্বীকার করে বলেন আমি নাহবি সনদ পেয়েছি ৭ দিনে কিন্তু ওয়অরিশ সনদের কোন দিন পাবো এখন ওপরওয়ালা ছাড়া আর কেই বলতে পারবেনা।
সমস্যার কথা স্বিকার করে দ্রুতই এ সকল বিষয় সমাধানে নিরলস ভাবে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান ,সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সচিব মো: লুৎফর রহমান। তারমতে ১৫ টি ওয়ার্ডের ১৫ জন পুরুষ এবং সংরক্ষিত ৫জনসহ মোট ২০ জস জসপ্রতিনিধির কাজ পৌরসভার স্টাফদের করতে হচ্ছে। প্রশাসকের কাজ সহজ করতে ৮জন সরকারি কর্মকর্তাকে সাময়িক ভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু তাদের নিজেন অফিসেরও কাজ কম না। তাই সেবার গতি কমেছে এটা স্বীকার করতেই হবে। তবে দ্রুতার সাখে সেবা দানের জন্য আমরা কাজ করছি। তিসি অনিয়ম দুর্নিতী বিষয়ে বলেন বর্তমানে পৌরসভার কোন কর্মকচারি কর্মকতার নামে কোন প্রকার অনিয়ন পরিলক্ষিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক মোফাজ্জল হোসেন (উপসচিব) বলেন,আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে চেষ্টা করছি পৌরসভাকে শৃঙ্খলতায় আনতে। কিন্তু এতো সমস্যা একটি পৌরসভায় খাকতে পারে এটি জানা ছিলনা। তবে প্রতিনিয়ত সভাকরে পৌর কর্মবর্তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পারনের জন্য বলা হয়েছে।
তারপরও কাজের গতি বাড়ছেনা এমনটি স্বীকার করে তিনি বলেন নানাবিধ সমস্যা রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভবনা। তবে আমরা কাজ করছি এবং চেষ্টা করছি একটু বিলম্ব হলেও কাজে যেন কোন বুলনা হয়। সঠিত এবং নির্ভল কাজ করতে একটু সময় দিতেই হবে। তিনি এজন্য সিরাজগঞ্জ পৌরবাসিকে সার্বিক সহযোগিতা করারও অনুরোধ করেন।
অপর দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপসারিত একাধিক কাউন্সিলর জানান,তারা কোন দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত কাউন্সিলর না হলেও তাদের ওপর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া একধরনের বিমাতাসুলভ আচরনের সামিল। প্রায় ১৮ মাস সময় থাকতেইে বর্তশান সরকারের এমন সিদ্ধানের কারনে সাধানণ নাগরিকগণ আজ নানামুখি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাদের মতে, অন্ত:ত কাউন্সিলরদের স্ব-পদে বহালরাখা অথবা দ্রুত পুনরায় পৌরনির্বাচন দিয়ে পৌরবাসীর নাগরিক সেবা চালু করবে এই অন্তবর্তী কালীন সরকার এমনটাই প্রত্যাশা পৌরবাসীর ।