Dhaka ০৭:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অভিযোগ দায়ের

ছাতকে শিক্ষক দুই শিক্ষার্থীকে মধ্যযুগী কায়দায় নির্যাতন

ছাতকে হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ৭ম শ্রেনীর দুই শিক্ষাথীকে বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে টেনে হেছড়ে ক্লাস রুমে নিয়ে এলোমোনিয়াম জাতীয় স্কেল, পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে ক্ষান্ত না হয়ে নিজের পায়ের জুতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের শারিরিক নির্যাতন করেন সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদ। তার এমন নির্মম নির্যাতনে দুই ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নিন্দান ঝড় বইছে। মানসিক বিকারগ্রস্থ ওই শিক্ষকের শান্তির পাশাপাশি এখান থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগি পরিবার।

জানা যায়, উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদ ২০১৫ সাল এখানে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন সময় শারিরিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। তার অমানবিক নির্মম-নির্যাতন এবং নিপিড়নের শিকার হয়ে ইতো মধ্যে ওই স্কুল থেকে ঝড়ে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থীরা। বিকৃতি মস্তিস্কের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কার্যত কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন-দিন নিপিড়নের মাত্রা বেড়েই চলছে বিদ্যালয়ে।

গত বুধবার বিকালে বিদ্যালয়ের বারান্দায় গল্প করছিল ৭ম শ্রেনির ছাত্র মাহিন আহমদ ও রবিউল হাসান শাওন। তাৎক্ষনিক ছাত্র দুইজনকে টেনে হেচড়ে ক্লাসে নিয়ে এলোমোনিয়াম জাতীয় স্কেল ও গাছের ডাল দিয়ে মধ্যযুগী কায়দায় তাদেরকে নির্যাতন করেন ওই শিক্ষক। এক পর্যায়ে নিজের পায়ের জুতা দিয়ে ছাত্র দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেন। নির্যাতনে আহত মাহিন আহমদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী মাহিন আহমদের মা, স্থানীয় হাসনাবাদ গ্রামের শাহেদ আলীর স্ত্রী হাছনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া অভিযোগটির অনুলিপি জেলা ও উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ছাতক সেনা ক্যাম্প এবং ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে দেয়া হয়।

শিক্ষক শাহিন আহমদ বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ৪দিন আগে ৭ম শ্রেনির ছাত্রী কালারুকা গ্রামের উপমা বেগমকেও শারিরিক নির্যাতন করেন ওই বিকৃতি মস্তিস্কের শিক্ষক শাহিন আহমদ। এ বিষয়টি ধাঁমাচাপা দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩ বছর আগে ৭ম শ্রেনির শাহরিয়ার আহমদ সামি নামের আরেক শিক্ষার্থীকে বেদড়ক পিটিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। যে কারণে সে লেখা ছেড়ে দিয়েছে। নির্যাতনকারী ওই শিক্ষকের নির্যাতনের ভয়ে এলাকার একাধিক শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়েছে।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মাহিন আহমদের মা হাছনা বেগম জানান, তার ছেলে মাথা, গলা পিটে দুটি পায়ে আঘাত করেছে। যেকোনো শিক্ষার্থীকে এমনভাবে মারধর করতে পারেন না শিক্ষক। আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেন জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

রাজধানীতে ৯৩ জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার, বেশি লালবাগ-তেজগাঁওয়ে

অভিযোগ দায়ের

ছাতকে শিক্ষক দুই শিক্ষার্থীকে মধ্যযুগী কায়দায় নির্যাতন

Update Time : ১২:২৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ছাতকে হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ৭ম শ্রেনীর দুই শিক্ষাথীকে বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে টেনে হেছড়ে ক্লাস রুমে নিয়ে এলোমোনিয়াম জাতীয় স্কেল, পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে ক্ষান্ত না হয়ে নিজের পায়ের জুতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের শারিরিক নির্যাতন করেন সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদ। তার এমন নির্মম নির্যাতনে দুই ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নিন্দান ঝড় বইছে। মানসিক বিকারগ্রস্থ ওই শিক্ষকের শান্তির পাশাপাশি এখান থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগি পরিবার।

জানা যায়, উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহিন আহমদ ২০১৫ সাল এখানে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন সময় শারিরিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। তার অমানবিক নির্মম-নির্যাতন এবং নিপিড়নের শিকার হয়ে ইতো মধ্যে ওই স্কুল থেকে ঝড়ে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থীরা। বিকৃতি মস্তিস্কের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কার্যত কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন-দিন নিপিড়নের মাত্রা বেড়েই চলছে বিদ্যালয়ে।

গত বুধবার বিকালে বিদ্যালয়ের বারান্দায় গল্প করছিল ৭ম শ্রেনির ছাত্র মাহিন আহমদ ও রবিউল হাসান শাওন। তাৎক্ষনিক ছাত্র দুইজনকে টেনে হেচড়ে ক্লাসে নিয়ে এলোমোনিয়াম জাতীয় স্কেল ও গাছের ডাল দিয়ে মধ্যযুগী কায়দায় তাদেরকে নির্যাতন করেন ওই শিক্ষক। এক পর্যায়ে নিজের পায়ের জুতা দিয়ে ছাত্র দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেন। নির্যাতনে আহত মাহিন আহমদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী মাহিন আহমদের মা, স্থানীয় হাসনাবাদ গ্রামের শাহেদ আলীর স্ত্রী হাছনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া অভিযোগটির অনুলিপি জেলা ও উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ছাতক সেনা ক্যাম্প এবং ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে দেয়া হয়।

শিক্ষক শাহিন আহমদ বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ৪দিন আগে ৭ম শ্রেনির ছাত্রী কালারুকা গ্রামের উপমা বেগমকেও শারিরিক নির্যাতন করেন ওই বিকৃতি মস্তিস্কের শিক্ষক শাহিন আহমদ। এ বিষয়টি ধাঁমাচাপা দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩ বছর আগে ৭ম শ্রেনির শাহরিয়ার আহমদ সামি নামের আরেক শিক্ষার্থীকে বেদড়ক পিটিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। যে কারণে সে লেখা ছেড়ে দিয়েছে। নির্যাতনকারী ওই শিক্ষকের নির্যাতনের ভয়ে এলাকার একাধিক শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়েছে।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মাহিন আহমদের মা হাছনা বেগম জানান, তার ছেলে মাথা, গলা পিটে দুটি পায়ে আঘাত করেছে। যেকোনো শিক্ষার্থীকে এমনভাবে মারধর করতে পারেন না শিক্ষক। আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেন জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।