আজ ১৭ নভেম্বর, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে ১৯৭৬ সালের এই দিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে সমাহিত করা হয় টাঙ্গাইলের সন্তোষে।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল চেগা মিয়া। তবে তিনি লাল মওলানা হিসেবেও সমধিক পরিচিত। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও জীবনের সিংহভাগই টাঙ্গাইলের সন্তোষে কাটিয়েছেন তিনি।
মওলানা ভাসানী,কৈশোর-যৌবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন তিনি।
মওলানা ভাসানী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অধিকারবঞ্চিত, অবহেলিত ও মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় সংগ্রাম করেছেন । জাতীয় সংকটে জনগণকে পাশে নিয়ে গড়ে তুলতেন দুর্বার আন্দোলন। ক্ষমতার কাছে থাকলেও ক্ষমতার মোহ তাকে কখনও আবিষ্ট করেনি। ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে। তিনি সবসময় ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
শোষণ ও বঞ্চনাহীন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য ভাসানী আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার আদর্শিক ঐক্য ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ছিল। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মওলানা ভাসানী।
আজ কিংবদন্তি এ জননেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দের নেতৃত্বে ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। সকাল ৮টায় মাজার প্রাঙ্গণে তবারক বিতরণ হবে।
এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তলা একাডেমিক ভবনের সেমিনার কক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও সন্তোষে তার মাজারে শ্রদ্ধা জানাবেন।