গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি সরকারী সড়কের দুপাশের গাছগুলো অবাধে কেটে নিলো দুর্বৃত্তরা। প্রায় মাসখানেক ধরে লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি গাছ অবাধে কেটে নিলেও যেন নির্বিকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে পরিবেশ ও সড়ক রক্ষায় অবাধে গাছ হরিলুট ঠেকাতে শক্ত প্রদক্ষেপ দেখতে চান এলাকাবাসী। এলাকাবাসী ও সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন আগে কালিয়াকৈর উপজেলার বলিয়াদি বাজার থেকে গোসাত্রা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের দু-পাশে গাছ লাগায় সংশ্লিষ্ট সড়ক বিভাগ।
পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা, সড়কের সুন্দর্য্য বধণ ও বর্ষায় সড়কের ভাঙ্গন রোধসহ নানা কারণে সড়কের দুপাশে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য গাছ লাগানো হয়। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতনের পর উপজেলার ওই সড়কের নাওলা এলাকা থেকে অবাধে সরকারী সড়কের গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের দুপাশে থাকা গাছের সারি থেকে উধাও হয়ে গেছে শত শত গাছ। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এখন সড়কের দুপাশে কেটে ফেলে ইউক্যালেক্টর, বেলজিয়াম, আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের মোথা পড়ে আছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট সড়ক বিভাগের উদাসীনতা ও নজরদারির অভাবে প্রায় মাসখানেক ধরে এসব গাছ হরিলুট করে নিলো দুর্বৃত্তরা। প্রতিনিয়ত এভাবে গাছ কাটা হলে অচিরেই ওই সড়কের দু’পাশে গাছ শূন্য হয়ে পড়বে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শী ভ্যান চালক মকবুল হোসেন বলেন, এ সড়ক দিয়ে আসা- যাওয়ার পথে গাছগুলো কাটতে দেখেছি। তারা নাকি কালিয়াকৈরের ব্যাপারী ছিলেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। অপর পথচারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, কে বা কাহারা অবাধে সড়কের গাছগুলো কেটে নিয়েছে। এসব গাছ কাটা ঠিক হয়নি। গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে তারা সব গাছ কেটে নিয়ে যাবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এভাবে অবাধে যদি গাছপালা কেটে ফেলা হয়, তাহলে পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় বা হুমকির সৃষ্টি পড়বে। তবে পরিবেশ ও সড়ক রক্ষায় অবাধে বিভিন্ন সড়কের গাছ হরিলুট ঠেকাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জড়িতদের সনাক্ত করে আইনগত প্রদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল বাছেদ জানান, গাছগুলো চুরির বিষয়টি শুনেছি। কারা এ কাজ করছে? খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ জানান, সড়ক বিভাগের গাছ হলে সরকারীভাবে কাটতে স্থানীয় বনবিভাগ সহযোগীতা করে। কিন্তু যদি সরকারী গাছগুলো এভাবে কেটে নিয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।