বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ভারত থেকে আমদানি করা রেলওয়ের পণ্যবাহী আরও ৩১টি ওয়াগনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পরীক্ষামূলক চলাচল (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন হয়েছে। গত রোববার (১৭ নভেম্বর) নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৩১০ কিলোমিটার রেলপথে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে এই ওয়াগনগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।
এ সময় পর্যাপ্ত লোড থাকলেও চলাচলে কোনো কারিগরি ক্রটি দেখা যায়নি। এর আগে কারখানার ওয়াগন শপে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্রে জানা গেছে, একসময় পণ্যবাহী ওয়াগনে সারা দেশে মালামাল পরিবহন করা হতো। পরে সড়কপথে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ বাড়লে রেলওয়ে খাত অবহেলিত হয়ে পড়ে। এ জন্য রেলপথে পণ্য পরিবহনে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা নিরাপদ ও কম খরচে মালামাল পরিবহনের অংশ হিসেবে ভারত থেকে ২৯০টি ওয়াগন আমদানি করার উদ্যোগ নেয়। সেখান থেকে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৩০টি ওয়াগন আনা হয়েছিল সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। এরপর ওয়াগনগুলো পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন করে হস্তান্তর করা হয় রেলের ট্রাফিক বিভাগে।
এবার আনা হয়েছে আরও ৩১ ওয়াগন। এরপর কারখানার ওয়াগন শপে এগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কারিগরি দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ওয়াগনে পর্যাপ্ত লোড দিয়ে বুধবার পরীক্ষামূলক চলাচল করা হয় এবং শেষ করা হয় রবিবার।
পরীক্ষামূলক চলাচলে নেতৃত্ব দেন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সহকারী ওয়ার্কস ম্যানেজার নুর-ঈ-আলম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কারখানার ড্রয়িং শপের ইনচার্জ ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মন্ডল, সিডিউলের ইনচার্জ ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন রুবেল, ওয়াগন শপের ইনচার্জ ঊর্ধ্বতন উপসহকারী নিজামুল হক ও ভারতীয় এক ঝাক প্রতিনিধি।
ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন রুবেল বলেন, ট্রায়াল রান গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। সফলভাবে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ট্রায়াল রানে যাওয়ার আগে ওয়াগনগুলোর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কারিগরি দিক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপে সেই কাজ করা হয়।
ওয়াগন শপের ইনচার্জ নিজামুল হক বলেন, আবারও ৩১টি ওয়াগনের ট্রায়াল রান সফল হয়েছে। সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার তোলা হয়। পর্যাপ্ত লোড থাকলেও কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা যায়নি। ওয়াগনগুলো বেশ উন্নত মানের। বর্তমানে এসব কারখানার ভেতরে রাখা হয়েছে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব ওয়াগনগুলো ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত ৯ অক্টোবর একইভাবে ভারত থেকে আমদানি করা রেলওয়ের পণ্যবাহী ৩০টি ওয়াগনের পরীক্ষামূলক চলাচল (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন করা হয়।