Dhaka ০৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই ঃ আ.লীগ’

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালায়ন করেন শেখ হাসিনা; আওয়ামী লীগের নেতা এবং সাবেক মন্ত্রীরা অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে অগণিত মামলা দায়ের করা হয়েছে, শুরু হয়েছে বিচার প্রক্রিয়াও। দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ কি আর রাজনীতি করতে পারবে কিনা?

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা ও দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অবশ্য বলছে, গণহত্যার বিচারের পরই কেবল আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার সুযোগ পাবে। দাবি উঠেছে, দেশের জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। সেটি ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ারও করা হয়েছে।

সাক্ষাতকারে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেছেন, প্রকৃতপক্ষেই আমরা যদি ভুল করে থাকি অথবা অন্যায় করে থাকি, সেই অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমতা চাইতে আমাদের কোনো আপত্তি অথবা আমরা ক্ষমা চাইব না—এ ধরনের গোঁড়ামি আমাদের ভেতরে কাজ করে না। এ ধরনের দল, এই মানসিকতার দল আওয়ামী লীগ নয়।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ যে ভূমিকা নিয়েছিল, তা নিয়ে দলটির কোনো অনুশোচনা রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ফোনালাপে নাছিম আরও বলেন, অনুশোচনা কি কারাগারের ভেতরে বসে করবে আওয়ামী লীগ? নাকি জঙ্গলে-পাহাড়ে বা নির্বাসনে থেকে অনুশোচনা করবে? কীভাবে করবে? সেজন্য তো উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, সেই সুযোগটা কি দেশে আছে এখন? স্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে নিজেরা দলগত মূল্যায়নের মাধ্যমে ভুল চিহ্নিত করে আমরা কি ক্ষমা চাইতে পারি না?

শেখ হাসিনা, এমপি-মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে দেশ ছেড়েছেন। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। এ প্রসঙ্গে নাছিম বলেন, কৌশলগত কারণে দেশের বাইরে অবস্থান করছি, উপমহাদেশের রাজনীতিতে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। যারা এখন বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে রাজনীতিকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।

জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলনকারীদের নিহতের ঘটনায় সারা দেশে শেখ হাসিনাসহ নেতাকর্মীদের নামে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার ব্যাপারে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, দলের মন্ত্রী, এমপিসহ সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নামে আড়াই শতাধিক মামলা হয়েছে। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে শীর্ষ নেতারা। আত্মগোপনে রয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে রয়েছে গণহত্যার অভিযোগ, অথচ উপদেষ্টারা দেশে-বিদেশে বলে বেড়াচ্ছেন এই আন্দোলন পরিকল্পিত ছিল, তাহলে অভিযোগ কেন আমাদের দিকে? আর গণহত্যার বিচারের জন্য প্রধান কৌঁসুলি নিয়োগ দিয়েছে যে কিনা সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউর ২৭ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক ৯ ডিসেম্বর

‘জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই ঃ আ.লীগ’

Update Time : ০৩:৫২:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালায়ন করেন শেখ হাসিনা; আওয়ামী লীগের নেতা এবং সাবেক মন্ত্রীরা অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে অগণিত মামলা দায়ের করা হয়েছে, শুরু হয়েছে বিচার প্রক্রিয়াও। দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ কি আর রাজনীতি করতে পারবে কিনা?

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা ও দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অবশ্য বলছে, গণহত্যার বিচারের পরই কেবল আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার সুযোগ পাবে। দাবি উঠেছে, দেশের জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। সেটি ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ারও করা হয়েছে।

সাক্ষাতকারে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেছেন, প্রকৃতপক্ষেই আমরা যদি ভুল করে থাকি অথবা অন্যায় করে থাকি, সেই অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমতা চাইতে আমাদের কোনো আপত্তি অথবা আমরা ক্ষমা চাইব না—এ ধরনের গোঁড়ামি আমাদের ভেতরে কাজ করে না। এ ধরনের দল, এই মানসিকতার দল আওয়ামী লীগ নয়।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ যে ভূমিকা নিয়েছিল, তা নিয়ে দলটির কোনো অনুশোচনা রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ফোনালাপে নাছিম আরও বলেন, অনুশোচনা কি কারাগারের ভেতরে বসে করবে আওয়ামী লীগ? নাকি জঙ্গলে-পাহাড়ে বা নির্বাসনে থেকে অনুশোচনা করবে? কীভাবে করবে? সেজন্য তো উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, সেই সুযোগটা কি দেশে আছে এখন? স্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে নিজেরা দলগত মূল্যায়নের মাধ্যমে ভুল চিহ্নিত করে আমরা কি ক্ষমা চাইতে পারি না?

শেখ হাসিনা, এমপি-মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে দেশ ছেড়েছেন। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। এ প্রসঙ্গে নাছিম বলেন, কৌশলগত কারণে দেশের বাইরে অবস্থান করছি, উপমহাদেশের রাজনীতিতে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। যারা এখন বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে রাজনীতিকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।

জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলনকারীদের নিহতের ঘটনায় সারা দেশে শেখ হাসিনাসহ নেতাকর্মীদের নামে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার ব্যাপারে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, দলের মন্ত্রী, এমপিসহ সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নামে আড়াই শতাধিক মামলা হয়েছে। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে শীর্ষ নেতারা। আত্মগোপনে রয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে রয়েছে গণহত্যার অভিযোগ, অথচ উপদেষ্টারা দেশে-বিদেশে বলে বেড়াচ্ছেন এই আন্দোলন পরিকল্পিত ছিল, তাহলে অভিযোগ কেন আমাদের দিকে? আর গণহত্যার বিচারের জন্য প্রধান কৌঁসুলি নিয়োগ দিয়েছে যে কিনা সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী ছিলেন।