অন্তবর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণায়য়ের উপদেষ্টা এএফএম হাসান আরিফ বলেছেন, ওয়ামী শুধু শিক্ষা এবং নৈতিক শিক্ষার জন্য মসজিদ কমপ্লেক্স করে যাচ্ছেন তাই নয়, তারা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতার করছেন। যারা সমাজের অবস্থার বিভিন্ন কারণে বার্মা ও মায়ানমার থেকে বিতারিত হয়েছেন।
সেসব রোহিঙ্গাদের জন্যেও ওয়ামী অনেক সামাজিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। দেশ থেকে যারা বিতারিত হয়েছেন, সেই রোহিঙ্গা যুব সমাজের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ব্যাপারে সৌদির ওয়ামীর এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী আগামীকাল আবার কক্সবাজার যাবেন। ওয়ামীর কর্মকান্ড শুধু নৈতিকতা শিক্ষা, হাসপাতাল চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তাদের আকটিভিটিস তাদের কর্মকান্ড সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যেও বিস্তৃত।
তিনি শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় নবনির্মিত ওয়ার্ল্ড এসেম্বিলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামী) এর ভবন ও বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন- সৌদির রাষ্ট্রদূতঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান, ওয়ামী বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মোহাম্মদ রেদওয়ানুর রহমান প্রমুখ।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ সালে ওয়ার্ল্ড এসেম্বিলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামী) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ওয়ামী সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে বিশে^র প্রায় অর্ধশত দেশের যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক যুব সম্মেলন হয়েছিল।
সেই সম্মেলনে উপলক্ষ করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এখানে এই ৭ একর ভুমি দান করেছিলেন। আপনারা জেনেছেন, ওই দান করা জমির উপর একটি বিশাল কমপ্লেক্সের প্রাথমিক সূচনা আরম্ব হয়েছে। এখানে হাসপাতালসহ সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গে লিপ্ত থাকে এমন আরো অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বিশাল কর্মকান্ডের জন্য সারা বিশ^ব্যাপী নৈতিকতার শিক্ষা মসজিদ ও মসজিদের কমপ্লেক্সের মাধ্যমে তার সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় শিক্ষা যাতে জীবনের চলার পথে তাদের জীবিকা অর্জনে সহায়ক হয়। শুধু তাই নয়, উচ্চ শিক্ষার জন্য তারা বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।
যেকোনো প্রতিষ্ঠান বিশ^ব্যাপী উচ্চতর শিক্ষার জন্য পিএসডি রিসার্চ করার জন্য যে কেউ আবেদন করতে পারেন। তারা অত্যান্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এবং কঠোর নিয়মাবর্তিতার সঙ্গে সিলেক্ট করে থাকেন। যাদেরকে এই ধরণের স্কলারশিপ দেওয়া হয়। তারা জানেন না বা তথ্যের অভাব ছিল, তারা এটা প্রচার করে দিবেন যুব সমাজের কাছে। সে যদি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় তাহলে এ ওয়ামীর মাধ্যমে সে একটি স্কলারশিপের সুযোগ তার সামনে আছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি যে এই যুব যে সংগঠন তার প্রয়োজনীয়তা কত গভীর এবং ব্যাপক। বিশ^ব্যাপী যদি আমরা চেয়ে দেখি, দুঃখের বিষয় দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যা সত্ত্বেও কিন্তু মুসলিম বিশ^ পিছিয়ে পড়ে আছে। তার প্রধান অর্থ হচ্ছে শিক্ষা। আজকে যদি বিশ^ব্যাপী প্রায় ষাটটি মুসলিম দেশ আছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের অবদান এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান দেখেন। তাহলে দেখবেন বহু ছোট ছোট দেশ আছে, তাদের চেয়েও স্বাভাবিকভাবে পিছিয়ে পড়ে আছি।
আমরা সার্ক দেশগুলোর মধ্যেও যদি দেখি বাংলাদেশ খুব একটা বেশি এগিয়ে নেই। যদি আমরা দৃঢ় প্রদক্ষেপ নিয়ে চলেছি শিক্ষা ক্ষেত্রে। শিক্ষার ক্ষেত্রে ওয়ামী এই অবদান নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয় ও গর্বের বিষয়। ওয়ামী আমাদের সামনে যে সুযোগ সুবিধা এনে দিয়েছে। সেই সুযোগ সুবিধাগুলো আমরা গ্রহণ করি, এই যুব কর্মকান্ডের সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত হই। আমি আশা করি যুব মন্ত্রণালয়ও এই ওয়ামীর কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে এবং সরকারী তরফ থেকেও এই প্রতিষ্ঠানকে যেকোনো ধরণের সহযোগিতা করবে।
এর আগে কুরআন তেলওয়াত শেষে বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও ওয়ামীর পতাকা উত্তোলন করা হয়। নবনির্মিত ওয়ামী মসজিদ কমপ্লেক্স, আইসিটি সেন্টার, সেন্ট্রাল লাইব্রেরী ভবন উদ্বোধন ও আধুনিক হাসপাতাল, বিদ্যালয়ের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর করেন উপদেষ্টা এএফএম হাসান আরিফ। এসময় উপস্থিত ছিলেন- সৌদির ওয়ামীর এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল প্রফেসর ড. আবদুল হামিদ ইউসুফ আল মাজরু, গাজীপুর জেলা প্রশাসন নাফিসা আরেফিন, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, সহকারি কমিশনার (ভুমি) দিল আফরোজসহ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ।