Dhaka ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে কোয়েল পাখি পালনে কমান্ডার নাসিরের বাজিমাত

কোয়েল পাখির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আনসার ভিডিপির কমান্ডার নাসির উদ্দিন। নিজ বাড়িতেই  গড়ে তুলেছেন কোয়েল পাখির খামার। তার এ সাফল্য এলাকায় কোয়েল পালনে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। অনেক তার এই খামার থেকে কোয়েল পাখি সংগ্রহ করে ছোট আকারে শুরু করছে কোয়েল পাখি পালন।

নাসির কমান্ডার জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে নাসির কমান্ডার কাজের সুবাদে গিয়েছিলেন রাজশাহীতে। একটি কোয়েল পাখির খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। খামারির মুখে কোয়েল পাখি পালন ও তার ডিম উৎপাদনের কথার গল্প শুনে কোয়েল পাখি পালন শুরু করেন। ওই খামারির পরামর্শে ঘর ও কোয়েল পাখি কিনেন তিনি । এতে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা।

বর্তমানে তার খামারে এক হাজারের মত কোয়েল পাখি আছে। প্রায় ৭৫০টি কোয়েল পাখি ডিম দেয়। প্রতিমাসে সকল খরচ বাদ দিয়ে এই খামার থেকে তিনি আয় করেন ৩৫-৪০ হাজার টাকা ।

কোয়েল পাখি পালনে পরামর্শ নিতে আসা মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের স্কুল ছাত্র আব্দুল আলীম জানান, সবার মুখে শুনেছেন কোয়েল পাখির ডিম ও মাংস অনেক সুস্বাদু। আর একটি কোয়েল পাখি বছরে ২৫০ থেকে ২৭০ টি ডিম দিয়ে থাকে। কোয়েল পাখি সামান্য জায়গায় পালন করা সম্ভব। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট পরিসরে একটি খামারের উদ্দেশ্যেই পরামর্শ ও পাখি সংগ্রহ করতে এসেছেন তিনি।

রায়পুরের গৃহবধু সখিনা খাতুন জানান, কোয়েল পাখির ডিমে অনেক পুষ্টি রয়েছে। শীতকালে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্য অনেক উপকারী। তার দুই বছর বয়সী নাতির জন্য নাসির কমান্ডার চাচার বাড়ি থেকে ডিম সংগ্রহ করতে এসেছেন। প্রায় মাস খানেক ধরে তিনি ডিম সংগ্রহ করেন। তিনি নিজ বাড়িতে কলেজ ছাত্র নাতি আব্দুল আলীমের সহায়তায় কোয়েল পাখি চাষ করবেন বলে জানান।

গাংনী উপজেলার থানাপাড়ার বিধবা আমেনা খাতুন জানান, স্বামী মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। পরিবারের সংসারে হাল ধরার মতো তেমন কেউ নেই। নাসির কমান্ডারে কাছ থেকে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করে ছোট একটি খামার তৈরি করেছেন। সেই খামারে ডিম ও কোয়েল পাখি বিক্রি করে কোন রকমে সংসার চলে। তিনি আরো কিছু কোয়েল পাখি বাচ্চা কেনার জন্য তার কাছে এসেছেন। তার খামারে উৎপাদিত কোয়েল পাখি অনেক উন্নতমানের রোগ বালাই মুক্ত বলেও জানান এই উদ্যোক্তা।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, কোয়েল পাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। একটি কোয়েল পাখি জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে ডিম দিতে শুরু করে। বছরে একটি কোয়েল পাখি প্রায় ২৫০ থেকে ২৮০ টি ডিম দিয়ে থাকে। প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে এই কোয়েল পাখির খামারিকে দেয়া হচ্ছে সার্বিক সহযোগিতা বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার দেওয়া চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি

গাংনীতে কোয়েল পাখি পালনে কমান্ডার নাসিরের বাজিমাত

Update Time : ০৩:০৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

কোয়েল পাখির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আনসার ভিডিপির কমান্ডার নাসির উদ্দিন। নিজ বাড়িতেই  গড়ে তুলেছেন কোয়েল পাখির খামার। তার এ সাফল্য এলাকায় কোয়েল পালনে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। অনেক তার এই খামার থেকে কোয়েল পাখি সংগ্রহ করে ছোট আকারে শুরু করছে কোয়েল পাখি পালন।

নাসির কমান্ডার জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে নাসির কমান্ডার কাজের সুবাদে গিয়েছিলেন রাজশাহীতে। একটি কোয়েল পাখির খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। খামারির মুখে কোয়েল পাখি পালন ও তার ডিম উৎপাদনের কথার গল্প শুনে কোয়েল পাখি পালন শুরু করেন। ওই খামারির পরামর্শে ঘর ও কোয়েল পাখি কিনেন তিনি । এতে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা।

বর্তমানে তার খামারে এক হাজারের মত কোয়েল পাখি আছে। প্রায় ৭৫০টি কোয়েল পাখি ডিম দেয়। প্রতিমাসে সকল খরচ বাদ দিয়ে এই খামার থেকে তিনি আয় করেন ৩৫-৪০ হাজার টাকা ।

কোয়েল পাখি পালনে পরামর্শ নিতে আসা মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের স্কুল ছাত্র আব্দুল আলীম জানান, সবার মুখে শুনেছেন কোয়েল পাখির ডিম ও মাংস অনেক সুস্বাদু। আর একটি কোয়েল পাখি বছরে ২৫০ থেকে ২৭০ টি ডিম দিয়ে থাকে। কোয়েল পাখি সামান্য জায়গায় পালন করা সম্ভব। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট পরিসরে একটি খামারের উদ্দেশ্যেই পরামর্শ ও পাখি সংগ্রহ করতে এসেছেন তিনি।

রায়পুরের গৃহবধু সখিনা খাতুন জানান, কোয়েল পাখির ডিমে অনেক পুষ্টি রয়েছে। শীতকালে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্য অনেক উপকারী। তার দুই বছর বয়সী নাতির জন্য নাসির কমান্ডার চাচার বাড়ি থেকে ডিম সংগ্রহ করতে এসেছেন। প্রায় মাস খানেক ধরে তিনি ডিম সংগ্রহ করেন। তিনি নিজ বাড়িতে কলেজ ছাত্র নাতি আব্দুল আলীমের সহায়তায় কোয়েল পাখি চাষ করবেন বলে জানান।

গাংনী উপজেলার থানাপাড়ার বিধবা আমেনা খাতুন জানান, স্বামী মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। পরিবারের সংসারে হাল ধরার মতো তেমন কেউ নেই। নাসির কমান্ডারে কাছ থেকে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করে ছোট একটি খামার তৈরি করেছেন। সেই খামারে ডিম ও কোয়েল পাখি বিক্রি করে কোন রকমে সংসার চলে। তিনি আরো কিছু কোয়েল পাখি বাচ্চা কেনার জন্য তার কাছে এসেছেন। তার খামারে উৎপাদিত কোয়েল পাখি অনেক উন্নতমানের রোগ বালাই মুক্ত বলেও জানান এই উদ্যোক্তা।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, কোয়েল পাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। একটি কোয়েল পাখি জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে ডিম দিতে শুরু করে। বছরে একটি কোয়েল পাখি প্রায় ২৫০ থেকে ২৮০ টি ডিম দিয়ে থাকে। প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে এই কোয়েল পাখির খামারিকে দেয়া হচ্ছে সার্বিক সহযোগিতা বলে জানান তিনি।