মেহেরপুরে চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঝড় বৃষ্টি ও পোকার আক্রমনে ধানের ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। ঝড় বৃষ্টিতে ধান গাছ নুয়ে পড়া ও পোকার আক্রমন প্রতিরোধে চাষীদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। চাষীরা বিঘা প্রতি ২২-২৪ মণ ফলন হবার আশা করলেও ফলন হচ্ছে ১৫-১৬মণ। যার কারণে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। তবে চাষীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোঁকার আক্রমনে ধানের ফলন বিপর্যয়ের কথা বললেও কৃষি বিভাগ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণে আশাবাদি।
কৃষি বিভাগের হিসেবে মেহেরপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ২৬ হাজার ৮শ ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার মেঃটন। এখন ধান ঘরে তোলার শেষ সময় চলছে। যে সময় ধান শীষ নিয়ে দাঁড়িয়েছে ঠিক সেই সময় ঝড় বৃষ্টিতে ধান গাছ ন্যুয়ে পড়ে এবং পোঁকার আক্রমন শুরু হয়। পোঁকার আক্রমন প্রতিরোধে নানা ধরনের কীটনাশক ও ছাত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও চাষীদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এই ফলন বিপর্যয়। এবার বিঘা প্রতি ধান চাষে খরচ হয়েছে ১৩-১৪ হাজার টাকা।
বানিয়াপুকুর গ্রামের চাষি নজরুল জানান, এবার তিনি ৮ বিঘা জিমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। বিঘা প্রতি ২২-২৪ মণ ফলন হওয়ার কথা কিন্তু ফলন হচ্ছে ১৫-১৬ মণ। তবে ফলন বিপর্যয়ের মধ্যেও যারা ব্রি-ধান ১০৩ জাত আবাদ করেছেন তাদের ভাল ফলন হচ্ছে। বর্তমানে এক হাজার থেকে ১২শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে নতুন ধান। এই দামে চাষীদের লাভ হবেনা। তাদের দাবী মন প্রতি ধানের দাম ১৫-১৬শ টাকা হলে ভাল হতো। তবে বিচালী বিক্রি করে অনেকেই লোকসান পুসিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান চাষিরা।
সহড়াবাড়িয়া গ্রামের ধানচাষি শরিফুল ইসলাম জানান, তার ৩০০ বিঘা জমির মধ্যে ২৬০ বিঘা জমি এলাকার চাষিরা আবাদ করছেন। বাকি ৪০ বিঘা নিজেই আবাদ করেছেন। তিনি কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করেছেন। তবে বেশি আবাদ করেছেন ব্রি ধান ১০৩ জাতের। এতে ফলন হচ্ছে বেশি তবে কাঙ্খিত নয়। ফলন কম হবার পেছনে বৈরী আবহাওয়াকে দায়ি করেছেন এই চাষি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, অধিক বৃষ্টি হওয়ায় ও রোগ বালাইয়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা যেটা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জিত হবে বলে তিনি আশাবাদি।