রাজশাহীর তানোরে ব্র্যাকের আলু বীজ বাড়তি দামে কালোবাজারে বিক্রির জন্য পাচার করার সময় আটক করেন কৃষকরা অভিযোগ পাওয়া গেছে । আটকের পর ওই বীজ ন্যায্য মূল্যে বিক্রি না করে উপজেলা প্রশাসন ইঁদুর বিড়াল খেলা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চলতি মাসের ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়ন ইউপির গাগরন্দ মোড় সংলগ্ন চকদমদমা গ্রামের রনির বাড়িতে ঘটে বীজ আটকের ঘটনাটি।এঘটনায় ওই এলাকার কৃষক সোহেল বাদী হয়ে সার বীজ ব্যবসায়ী লালুকে বিবাদী করে গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ১৫ জন কৃষক স্বাক্ষর করেন। গত প্রায় ১১ দিন ধরে বীজ নিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আটক রাখা রনির বাড়িতে ভীড় করছেন। কিন্তু কোনভাবেই বীজ পাচ্ছেন কৃষকরা।ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বীজ গুলো ন্যায্য মূল্যে বিক্রির দাবি তুলেছেন কৃষকরা। কারন চলতি মাসেই গোকুল গ্রামের আতিক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে বীজ রেখেছিলেন। সেই বীজ জব্দ করে ন্যায্য মূল্যে কৃষক দের মাঝে বিক্রি করা হয়। তাহলে গাগরন্দ মোড়ে আটকানো বীজ কেন ন্যায্য মূল্যে বিক্রি হবেনা এমন প্রশ্ন উঠেছে চাষীদের মাঝে।
অভিযোগে উল্লেখ, চলতি মাসের ১৫ নভেম্বর তারিখে পৌর এলাকার কালীগঞ্জ হাটের সার ব্যবসায়ী লালু সন্ধ্যার দিকে ব্র্যাকের এগ্রেড ও বিগ্রেড আলুর বীজ চকদমদমা গ্রামের রনির বাড়িতে রেখে প্রায় ১১০/১২০ বস্তা মজুদ করে । মজুদ রেখে এগ্রেড ৩১৬০ টাকা ও বি গ্রেড ৩০৪০ টাকার বিপরীতে ৭০০০ হাজার ও ৫০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এমন খবরে বাদী সহ স্থানীয় কৃষকরা আলুর বীজ গুলো আটক করেন। আটকের কারনে ব্যবসায়ী লালুসহ তার লোকজনরা নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন কৃষকদের।
বাদী সোহেলসহ কৃষকরা জানান, গত ১৫ নভেম্বর বীজ গুলো আটক করা হয়। আটকের পর থেকে গোপনে ভাগবাটোয়ারা করছেন প্রভাবশালীরা। বাড়তি দামে বীজ বিক্রি করলেও প্রশাসন কোনকিছুই করছেনা। অবস্থাটা এমন কৃষকরা বীজ আটকিয়ে মহা বেকায়দায় পড়েছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীজ নিতে কৃষকরা দোকানে ভীড় করলেও পাচ্ছে না। লালু কালীগঞ্জ হাটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাড়তি দামে মেমো কাটেন আর রনির বাড়ি থেকে পাচার হয়। সে কোন আলুর চাষাবাদ করবে না।
রহিদুল নামের এক কৃষক জানান, গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে বিষয়টি সম্পর্কে বলা হলে তিনি বলেন, আমি লোক পাঠাচ্ছি। কিন্তু কোন লোক আসেনি।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী লালুর সাথে ০১৭৩৩১৩৪৪৯৭ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি অফিসে আছি পরে কথা বলছি। পরে ফোন দেয়া হলে তিনি আর রিসিভ করেননি।
ইউএনওকে গত সোমবার মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি এই প্রতিবেদকেও একই কথা বলেন।বীজের কোন সমাধান না হওয়ায় মঙ্গলবার সকালের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম কে অবহিত করা হলে তিনি জানান আমি কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলেছি তিনি জানান, ওই সব বীজ আলু নাকি রোপন করবেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্যবসায়ী লালু নাকি প্রজেক্ট করবে এজন্য বীজ এনেছে। কৃষকরা বলছে বাড়তি দামে বিক্রি করার কারনে কৃষকরা আটক করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১১৭ বস্তা আলুর বীজ রয়েছে, সেখান থেকে একবস্তা বীজ বিক্রি হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।