ময়লা ও বর্জ্যের শহরে পরিনত হয়েছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পৌরসভা। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই অবহেলিত এ পৌরসভা। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এর কার্যক্রম। নেই কোন ময়লা আবর্জনা, পলিথিন ও বর্জ্য বিনষ্ট করার নিদৃষ্টভাবে কোন ডাম্পিং স্টেশন নেই। যে কারনে বিভিন্ন সড়কের পাশে গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠন সংলগ্ন যত্রতত্রভাবে যেখানে-সেখানে ফেলা রাখা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। কর্তৃপক্ষের এ বর্জ্য অপসারনের নেই কোন উদ্যোগ। প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ পরিবেশে পৌরবাসীসহ উপজেলা শহরে আসা পথচারী, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের অশস্তি চরমে। অন্যদিকে নদী ও খালের পাড়েও ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখায় পানি সাথে মিশে গিয়ে দূষিত হচ্ছে প্রকৃতি।
১৯৮৮ সালে ২৫ আগষ্ট গ” শ্রেণী ভূক্ত মোরেলগঞ্জ পৌরসভার কার্যক্রম হয়। ২০০৪ সালে নির্বাচনে এ্যাড. মনিরুল হক তালুকদার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে একটানা ৪ বারের মেয়র হিসেবে ১৭ বছর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে এ পৌরসভাটি “ক” শ্রেণিভুক্ত হলেও পৌরবাসির নাগরিক সেবায় কাঙ্খিত সফলতা আসেনি। নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বছরের পর বছর পৌরবাসী। একাধিকবার পৌরকর বৃদ্ধি হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত রয়ে গেছে, তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি। ৯টি ওয়ার্ডের রাস্তা ঘাট, পয়নিস্কাশন ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা অপসারন, জলাবদ্ধতা দুরিকরনে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পৌরসভার রাস্তা ও ড্রেনগুলো যেন ময়লার ভাগার। অপরিচ্ছন্নতার নগরী হিসেবে পরিচিত এ পৌরসভা। বাজারের ব্যবসায়ীরা নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে রাস্তা পরিচ্ছন্ন করার কাজ করাচ্ছে। ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক, মোনায়েম খান বলেন, তারা নিজস্ব অর্থায়নে দোকানের রাস্তা পরিস্কার করান। ড্রেনের মশার প্রকোপে অতিষ্ঠ পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। চলতি মাসে ২০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে উপজেলা হাসপাতালে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এলাকার সড়কের পাশে, সাবেক কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন ড্রেন, বিভিন্ন অলি-গলি ময়লার স্তুপে পরিনত হয়েছে। পৌর পার্কের পাশে মাছের বাজার সংলগ্ন ও লতিফিয়া কামিল মাদ্রাসার পিছনে নদীর তীরে একাধিক স্থানসহ শহরের বিভিন্ন যায়গায় যত্রতত্র স্তুপ করে ফেলে রাখা হয়েছে পলিথিন, প্লাস্টিকসহ ময়লা আবর্জনা
মোরেলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াজিহুর রহমান বলেন, পৌরসভার বর্জ্য বিনষ্ট করার জন্য ডাম্পিং এর জমি নির্ধারণে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, সিটিসিআরপি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা এবং ৬-৭ কিলোমিটার নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রকল্প ইতিমধ্যে অনুমোদন হয়েছে। আগামী বছর থেকে এ কাজ শুরু হবে।
পৌর প্রশাসক ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার বর্জ্য বিনষ্ট করার ডাম্পিং এর অকৃষি জমি খোঁজা হচ্ছে, জমি পেলে অধিগ্রহণ করে জরুরীভাবে ডাম্পিং স্টেশন করা হবে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে পৌরসভায় একটি সভাও করা হয়েছে।