গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) রাফি মাহমুদকে পেটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলা পর সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে শনিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের নয়ন বাবু (৩৫), কাজল হোসেন (৩২), কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের রাজীব মিয়া (৪২), সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার নাটোয়ারপাড়া গ্রামের রুবেল রানা (২৮), কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার রতিল গ্রামের আশরাফ আলী (৫৪), রংপুর সদর উপজেলার ধাপকেল্লা বন্দর গ্রামের খাদেমুল ইসলাম (৩৭) ও মুন্সিগঞ্জের টুঙ্গীবাড়ী উপজেলার দ্বিপারা গ্রামের শাহিন দেওয়ান (৫২)।
এলাকাবাসী, কারখানার শ্রমিক-কতৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় মাহামুদ জিনস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। বিভিন্ন সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ৯ অক্টোবর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। সেই সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক, বিজিএমইএ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সকালে কারখানাটির সামনে আসতে থাকেন শ্রমিকেরা। কিন্তু এর মধ্যেই পাওনা পরিশোধ করা হবে না জানিয়ে নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা চন্দ্রা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে মালিকপক্ষ কারখানাটির সামনে এসে শ্রমিকদের সঙ্গে বকেয়া বেতনের বিষয়ে কথা বলে। এ সময় ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মালিকপক্ষের লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়েন। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। পরে শ্রমিকেরা মালিকপক্ষের লোকজনকে কারখানাটির ভেতরে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় কারখানাটির ডিএমডি রাফি মাহমুদ ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করতে কথা বলতে এগিয়ে যান। একপর্যায়ে শ্রমিকদের পিটুনিতে রাফি আহত হন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় রাফি মাহমুদ বাদী হয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালিয়াকৈর থানায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাতেই কালিয়াকৈর থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে নয়ন বাবু, কাজল, রাজীব, রুবেল, আশরাফ, খাদেমুল ও শাহিনকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত সাতজনকে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তারকৃত ওই সাতজনকে শনিবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।