Dhaka ০৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে বেলা’র আইনি নোটিশ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে রাতারাতি শতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করায় তিন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনী নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি(বেলা)।গত রোববার (১ ডিসেম্বর) ডাক বিভাগের মাধ্যমে রেজিস্ট্রিকৃযোগে বেলার পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছে  আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা।গত ২৭ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত কক্সবাজার সৈকত দখলের  শিরোনামের সংবাদটি সংযুক্ত করে এ নোটিশটি দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সৈকতের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ জোনে নির্মিত ও নির্মাণাধীন সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করে সমুদ্র সৈকতের যথাযথ সংরক্ষণের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। একইসাথে কক্সবাজার পৌরসভার সমুদ্র তীরবর্তী উন্নয়ন নিষিদ্ধ জোনের ৩০০ মিটার ও পৌরসভা বহির্ভূত নিয়ন্ত্রিত জোনের ৫০০ মিটার এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বৃক্ষরোপণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ নোটিশ প্রেরণের ৭ দিনের মধ্যে বেলার আইনজীবীকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।যাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব,গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের  পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার বিতরন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা জানান, কক্সবাজার সৈকতে কোন ধরনের  স্থাপনা নির্মাণ না করার এবং স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে নির্মিত সকল স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশনা রয়েছে।

এছাড়াও ২০১৩ সালে কক্সবাজারে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকার। এ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে সৈকত সংলগ্ন প্রথম ৩০০ মিটার “নো ডেভেলপমেন্ট জোন” হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এরপরও সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ দুঃখজনক।জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কক্সবাজার শহরের সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক দোকান।

এই পয়েন্টের সড়ক ও ফুটপাতেও বসানো হয়েছে আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার। এর দক্ষিণপাশে কলাতলী পয়েন্টের সি ক্রাউন হোটেলের সামনে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি দোকান। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাতারাতি এ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। মানা হচ্ছে না সৈকতের অখন্ডতা  রক্ষায় মহাপরিকল্পনার (মাস্টারপ্ল্যান) নির্দেশনা। শুধু তাই নয়, বালিয়াড়ি দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনায় নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। সৈকতের বালুর ওপর স্থাপনা নির্মাণের ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও সৌন্দর্য।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে বেলা’র আইনি নোটিশ

Update Time : ০২:২৭:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে রাতারাতি শতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করায় তিন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনী নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি(বেলা)।গত রোববার (১ ডিসেম্বর) ডাক বিভাগের মাধ্যমে রেজিস্ট্রিকৃযোগে বেলার পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছে  আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা।গত ২৭ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত কক্সবাজার সৈকত দখলের  শিরোনামের সংবাদটি সংযুক্ত করে এ নোটিশটি দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সৈকতের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ জোনে নির্মিত ও নির্মাণাধীন সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করে সমুদ্র সৈকতের যথাযথ সংরক্ষণের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। একইসাথে কক্সবাজার পৌরসভার সমুদ্র তীরবর্তী উন্নয়ন নিষিদ্ধ জোনের ৩০০ মিটার ও পৌরসভা বহির্ভূত নিয়ন্ত্রিত জোনের ৫০০ মিটার এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বৃক্ষরোপণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ নোটিশ প্রেরণের ৭ দিনের মধ্যে বেলার আইনজীবীকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।যাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব,গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের  পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার বিতরন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা জানান, কক্সবাজার সৈকতে কোন ধরনের  স্থাপনা নির্মাণ না করার এবং স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে নির্মিত সকল স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশনা রয়েছে।

এছাড়াও ২০১৩ সালে কক্সবাজারে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকার। এ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে সৈকত সংলগ্ন প্রথম ৩০০ মিটার “নো ডেভেলপমেন্ট জোন” হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এরপরও সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ দুঃখজনক।জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কক্সবাজার শহরের সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক দোকান।

এই পয়েন্টের সড়ক ও ফুটপাতেও বসানো হয়েছে আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার। এর দক্ষিণপাশে কলাতলী পয়েন্টের সি ক্রাউন হোটেলের সামনে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি দোকান। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাতারাতি এ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। মানা হচ্ছে না সৈকতের অখন্ডতা  রক্ষায় মহাপরিকল্পনার (মাস্টারপ্ল্যান) নির্দেশনা। শুধু তাই নয়, বালিয়াড়ি দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনায় নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। সৈকতের বালুর ওপর স্থাপনা নির্মাণের ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও সৌন্দর্য।