Dhaka ১২:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগে সাবেক এমপি শিবলী সাদিকসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এমপি সহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি, জমির মালিকদের জোর করে উঠিয়ে দেওয়া এবং সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে আদিবাসীদের ৬৭ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে এ মামলা করেন উকিল হেমরম নামে এক আদিবাসী। হেমরম উকিল নবাবগঞ্জ উপজেলার কুচদহ ইউনিয়নের খালিপপুর জাবড়েপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় একজন কৃষক। ওই মামলায় দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক এমপি শিবলী সাদিকের বড় আব্বা, দিনাজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী মো. দেলওয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

জোরপূর্বক জমি জবরদখল মামলায় সাবেক এমপি শিবলী সাদিক ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই ও  নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে নাইন্টি, চাচাতো ভাই তাজওয়ার মোহাম্মদ তাছিম, রাফসান সানি, নাফিজ ইমতিয়াজ ও স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানসহ ৩৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে জমির জাল দলিল তৈরি করতেন। তাঁরা এলাকার অসহায় নিরীহ লোকজনদের ধরে নিয়ে স্বপ্নপুরীর ভেতরের একটি ঘরে আটকে রাখতেন। সেখানে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বা সাদা কাগজে জোর করে সই নিয়ে জমি লিখে নিতেন। পরে সেই জমি তাঁরা নিজেদের দখলে নিতেন। মামলার বাদীর দাবি, আসামিরা এভাবে জমি জবরদখল করে পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরী তৈরিসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

মামলার বাদী উকিল হেমরম এজাহারে উল্লেখ করেন, তাঁর দাদা জটারাম হেমরম, দাদার চাচা নারায়ণ হেমরম ও ভাগা হেমরম মারা যাওয়ার পর ২০০০ইং সাল থেকে তাঁদের নামে থাকা কুশদহ ইউনিয়নের খালিপপুর মৌজার ২২ একর ৪৫ শতাংশ জমি দখল করেন আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ইং সালের ১৮ আগস্ট সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে জমি থেকে অন্তত ১০০টি গাছ কেটে নিয়ে যান। ওই সব গাছের আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আসামিরা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে এতো দিন কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

এবিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল ওয়াদুদ বলেন, জমি-জমা জবরদখলকে কেন্দ্র করে গত ৯ ডিসেম্বর/২৪ইং নবাবগঞ্জ থানায় মামলাটি হয়েছে। মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগে সাবেক এমপি শিবলী সাদিকসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : ০৩:৩৪:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এমপি সহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি, জমির মালিকদের জোর করে উঠিয়ে দেওয়া এবং সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে আদিবাসীদের ৬৭ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে এ মামলা করেন উকিল হেমরম নামে এক আদিবাসী। হেমরম উকিল নবাবগঞ্জ উপজেলার কুচদহ ইউনিয়নের খালিপপুর জাবড়েপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় একজন কৃষক। ওই মামলায় দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক এমপি শিবলী সাদিকের বড় আব্বা, দিনাজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী মো. দেলওয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

জোরপূর্বক জমি জবরদখল মামলায় সাবেক এমপি শিবলী সাদিক ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই ও  নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে নাইন্টি, চাচাতো ভাই তাজওয়ার মোহাম্মদ তাছিম, রাফসান সানি, নাফিজ ইমতিয়াজ ও স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানসহ ৩৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে জমির জাল দলিল তৈরি করতেন। তাঁরা এলাকার অসহায় নিরীহ লোকজনদের ধরে নিয়ে স্বপ্নপুরীর ভেতরের একটি ঘরে আটকে রাখতেন। সেখানে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বা সাদা কাগজে জোর করে সই নিয়ে জমি লিখে নিতেন। পরে সেই জমি তাঁরা নিজেদের দখলে নিতেন। মামলার বাদীর দাবি, আসামিরা এভাবে জমি জবরদখল করে পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরী তৈরিসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

মামলার বাদী উকিল হেমরম এজাহারে উল্লেখ করেন, তাঁর দাদা জটারাম হেমরম, দাদার চাচা নারায়ণ হেমরম ও ভাগা হেমরম মারা যাওয়ার পর ২০০০ইং সাল থেকে তাঁদের নামে থাকা কুশদহ ইউনিয়নের খালিপপুর মৌজার ২২ একর ৪৫ শতাংশ জমি দখল করেন আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ইং সালের ১৮ আগস্ট সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে জমি থেকে অন্তত ১০০টি গাছ কেটে নিয়ে যান। ওই সব গাছের আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আসামিরা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে এতো দিন কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

এবিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল ওয়াদুদ বলেন, জমি-জমা জবরদখলকে কেন্দ্র করে গত ৯ ডিসেম্বর/২৪ইং নবাবগঞ্জ থানায় মামলাটি হয়েছে। মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।