Dhaka ০৭:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে বিভিন্ন সনদ প্রাপ্তিতে ভোগান্তি চরমে! ভেঙ্গে পড়েছে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা

????????????

রাজশাহীর তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভা ছাড়াও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে পৃথক প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি আ.লীগ সরকার পতনের পর প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের আদেশ বলে জনপ্রতিনিধিদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে নাগরিকদের ওয়ারিশন সনদ ও ট্র্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তিসহ জরুরি কাজে চরম হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা মজিবুর রহমান। তবে, তানোর পৌরসভার মেয়র আ.লীগ নেতা ইমরুল হক ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান সরকার পতনের পর নিয়মিত অফিস করেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকটি গায়েবী মামলা ঠুকে দেন। এসব মামলায় বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে রয়েছেন তারা। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে এসব জনপ্রতিনিধিদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে, বেশ কয়েকটি ইউপিতে চেয়ারম্যানরা নিয়মিত পরিষদে না বসলেও খুব জরুরি প্রয়োজনে হঠাৎ দপ্তরে বা কোনো নিরাপদ স্থানে গিয়ে বিল, ভাউচার, বেতন ইত্যাদি কাগজপত্রে দস্তখত করছেন। পুরো উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা রয়েছে। এরমধ্যে দুই পৌরসভা এক ইউনিয়নে মেয়র আর চেয়ারম্যানদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নাগরিকদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ায় দাপ্তরিক কাজে কার্যত স্থবিরতা চলছে। ফলে জন্মসনদ, মৃত্যুনিবন্ধন, নাগরিক সনদ ও ট্রেড লাইসেন্সসহ নানা জরুরি কাজে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।তবে, তানোর পৌরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত ইউএনওকে মাঝে মধ্যে পৌর অফিস করতে দেখা গেছে। কিন্তু মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনা বসেন না পরিষদে। মাঝে মধ্যে পৌর পরিষদে বসলেও ইউনিয়ন পরিষদে কোনদিন বসেননি বললেও ভুল হয়না। সংশ্লিষ্ট পৌর সচিব ও ইউপি সচিব ছাড়াও অন্যান্য কমকর্তারা উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে এসিল্যান্ডের স্বাক্ষর নেয় তারা। এতে নাগরিকরা চরম হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এবিষয়ে উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপির বেড়লপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রোকসানা বিবি জানান, আমার স্বামী আব্দুস সালাম সহজ সরল কৃষক মানুষ। ১৯৮৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী ৪৩২৪ নম্বর দলিল ও ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর ৪২৫৪ নম্বর দলিল মূলে আনিসুর রহমান ও মহসিন গণের কাছ হতে বিভিন্ন দাগে জমি ক্রয় করে। বর্তমানে জমিটি খারিজ করার জন্য ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদে যায়। কিন্তু পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুরকে বরখাস্ত করায় ইউনিয়ন প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন এসিল্যান্ড। একারণে পাচ্ছেন না ওয়ারিশন সনদ।

তিনি আরও জানান, জমি বিক্রি করার পর দলিলের দাতা এবং তার ওয়ারিশরাও মারা গেছে। আবার কেউ জীবিত আছে। যারা মারা গেছে, তাদের মৃত্যু সনদ প্রয়োজন। এহেন প্রেক্ষিতে স্থানীয় মেম্বারের লিখিত সুপারিশ নিয়ে ওয়ারিশন সনদ নিতে গেলে মৃত ব্যক্তির এনআইডি ও মৃত্যু সনদ দাবি করেন ইউনিয়ন প্রশাসকের দায়িত্বরত এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনা। পরে ওয়ারিশদের এনআইডির ফটোকপি সংগ্রহে গেলে কেউ এনআইডি দিয়েছেন। আবার কেউ দেবো না মর্মে জানাই। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন প্রশাসককে অবহিত করা হলে মৃত ব্যক্তির এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশন দেয়া সম্ভব নয় বলে জানাই ইউনিয়ন প্রশাসক। জমি ক্রয়ের ৪০ বছর পর খারিজ করতে যদি এভাবে হয়রানি হতে হয় তাহলে বিষ খেয়ে আত্নহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে আক্ষেপ করেন রোকসানা বিবি।

সচেতন মহলের অভিমত, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ফরমে ওয়ারিশ বা নাগরিকদের নাম পরিচয় ও দলিল দিয়ে যদি আবেদন করা হয়ে থাকে। ওই নাম পরিচয়ের কোন তথ্য উপাত্য সংগ্রহ প্রয়োজন বোধ হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিষদ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে সেবাপ্রর্থীর কাছে ওয়ারিশন সনদ বা নাগরিক সুবিধা প্রদানে কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর।এনিয়ে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চিনাশো মহল্লার নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক আরেক বাসিন্দা জানান, মেয়রকে বরখাস্ত করার পর বিভিন্ন কাজে হয়রানি ও বিড়ম্বনায় পড়েছে পৌরবাসী। তিনি দেড় মাস ঘুরেও পাননি ওয়ারিশ সনদ। দোকানের ট্রেড লাইসেন্সও নিতে পারছেন না অনেকে। তার মতো আরও অনেকে একই সমস্যা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। ফলে একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে ন্যায় সংগত কাজে গিয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। এতে ইউনিয়ন ও পৌর প্রশাসকের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে, ফুসে উঠছে নাগরিকরা। যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে অনাকাংক্ষিত দূর্ঘটনা।

পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, স্থানীয় সরকারের সেবা পাওয়া দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কাউন্সিলর দের অপসারণ করার কারনে সেবার নামে ব্যাপক হয়রানি হতে হচ্ছে। আবার ওয়ার্ড সচিব দের দায়িত্বে আছেন সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা। তারা তো সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে কম,দাপ্তরিক কাজেই ব্যস্ত। তবে সেবা পেতে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারী দের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোন সনদের প্রয়োজন হলে সকল তথ্য ও কর পরিশোধের কাগজ দিতে হবে ওয়ার্ড সচিবকে। তারা অনুমতি দিলে তখন মিলবে সেবা। এটা চরম হয়রানি। কারন কৃষি প্রধান এলাকা। একদিন সেবা নিতে এসে ফেরত গেলে আর আসতে চায় না। আবার এসব সমস্যার সমাধানের তেমন কোন গুরুত্ব নেই। বিশেষ করে ইউএনওর কাধে দায়িত্ব আর দায়িত্ব। তিনি দিনভর সাক্ষর করেই শেষ করতে পারেন না। আর সহকারী কমিশনার ভূমি তো ভূমির কাজেই দিন পার করতে হয়।

এবিষয়ে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত তানোর এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি এড়িয়ে গেছেন। তবে, পরে তিনি মৃত ও জীবিত ব্যক্তির এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশন সনদ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানান।

এব্যাপারে রাজশাহী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. জাকিউল ইসলাম বলেন, ওয়ারিশন সনদ ও ট্র্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তিসহ জরুরি কাজে নাগরিকদের হয়রানি ও ভোগান্তি কাম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা হবে বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার বলেন, মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসক দ্বারা যদি নাগরিক সেবায় কেউ হয়রানি ও বিড়ম্বনার শিকার হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

তানোরে বিভিন্ন সনদ প্রাপ্তিতে ভোগান্তি চরমে! ভেঙ্গে পড়েছে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা

Update Time : ০৭:২০:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজশাহীর তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভা ছাড়াও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে পৃথক প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি আ.লীগ সরকার পতনের পর প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের আদেশ বলে জনপ্রতিনিধিদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে নাগরিকদের ওয়ারিশন সনদ ও ট্র্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তিসহ জরুরি কাজে চরম হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা মজিবুর রহমান। তবে, তানোর পৌরসভার মেয়র আ.লীগ নেতা ইমরুল হক ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান সরকার পতনের পর নিয়মিত অফিস করেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকটি গায়েবী মামলা ঠুকে দেন। এসব মামলায় বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে রয়েছেন তারা। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে এসব জনপ্রতিনিধিদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে, বেশ কয়েকটি ইউপিতে চেয়ারম্যানরা নিয়মিত পরিষদে না বসলেও খুব জরুরি প্রয়োজনে হঠাৎ দপ্তরে বা কোনো নিরাপদ স্থানে গিয়ে বিল, ভাউচার, বেতন ইত্যাদি কাগজপত্রে দস্তখত করছেন। পুরো উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা রয়েছে। এরমধ্যে দুই পৌরসভা এক ইউনিয়নে মেয়র আর চেয়ারম্যানদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নাগরিকদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সড়িয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ায় দাপ্তরিক কাজে কার্যত স্থবিরতা চলছে। ফলে জন্মসনদ, মৃত্যুনিবন্ধন, নাগরিক সনদ ও ট্রেড লাইসেন্সসহ নানা জরুরি কাজে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।তবে, তানোর পৌরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত ইউএনওকে মাঝে মধ্যে পৌর অফিস করতে দেখা গেছে। কিন্তু মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনা বসেন না পরিষদে। মাঝে মধ্যে পৌর পরিষদে বসলেও ইউনিয়ন পরিষদে কোনদিন বসেননি বললেও ভুল হয়না। সংশ্লিষ্ট পৌর সচিব ও ইউপি সচিব ছাড়াও অন্যান্য কমকর্তারা উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে এসিল্যান্ডের স্বাক্ষর নেয় তারা। এতে নাগরিকরা চরম হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এবিষয়ে উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপির বেড়লপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রোকসানা বিবি জানান, আমার স্বামী আব্দুস সালাম সহজ সরল কৃষক মানুষ। ১৯৮৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী ৪৩২৪ নম্বর দলিল ও ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর ৪২৫৪ নম্বর দলিল মূলে আনিসুর রহমান ও মহসিন গণের কাছ হতে বিভিন্ন দাগে জমি ক্রয় করে। বর্তমানে জমিটি খারিজ করার জন্য ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদে যায়। কিন্তু পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুরকে বরখাস্ত করায় ইউনিয়ন প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন এসিল্যান্ড। একারণে পাচ্ছেন না ওয়ারিশন সনদ।

তিনি আরও জানান, জমি বিক্রি করার পর দলিলের দাতা এবং তার ওয়ারিশরাও মারা গেছে। আবার কেউ জীবিত আছে। যারা মারা গেছে, তাদের মৃত্যু সনদ প্রয়োজন। এহেন প্রেক্ষিতে স্থানীয় মেম্বারের লিখিত সুপারিশ নিয়ে ওয়ারিশন সনদ নিতে গেলে মৃত ব্যক্তির এনআইডি ও মৃত্যু সনদ দাবি করেন ইউনিয়ন প্রশাসকের দায়িত্বরত এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনা। পরে ওয়ারিশদের এনআইডির ফটোকপি সংগ্রহে গেলে কেউ এনআইডি দিয়েছেন। আবার কেউ দেবো না মর্মে জানাই। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন প্রশাসককে অবহিত করা হলে মৃত ব্যক্তির এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশন দেয়া সম্ভব নয় বলে জানাই ইউনিয়ন প্রশাসক। জমি ক্রয়ের ৪০ বছর পর খারিজ করতে যদি এভাবে হয়রানি হতে হয় তাহলে বিষ খেয়ে আত্নহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে আক্ষেপ করেন রোকসানা বিবি।

সচেতন মহলের অভিমত, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ফরমে ওয়ারিশ বা নাগরিকদের নাম পরিচয় ও দলিল দিয়ে যদি আবেদন করা হয়ে থাকে। ওই নাম পরিচয়ের কোন তথ্য উপাত্য সংগ্রহ প্রয়োজন বোধ হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিষদ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে সেবাপ্রর্থীর কাছে ওয়ারিশন সনদ বা নাগরিক সুবিধা প্রদানে কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর।এনিয়ে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চিনাশো মহল্লার নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক আরেক বাসিন্দা জানান, মেয়রকে বরখাস্ত করার পর বিভিন্ন কাজে হয়রানি ও বিড়ম্বনায় পড়েছে পৌরবাসী। তিনি দেড় মাস ঘুরেও পাননি ওয়ারিশ সনদ। দোকানের ট্রেড লাইসেন্সও নিতে পারছেন না অনেকে। তার মতো আরও অনেকে একই সমস্যা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। ফলে একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে ন্যায় সংগত কাজে গিয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। এতে ইউনিয়ন ও পৌর প্রশাসকের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে, ফুসে উঠছে নাগরিকরা। যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে অনাকাংক্ষিত দূর্ঘটনা।

পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, স্থানীয় সরকারের সেবা পাওয়া দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কাউন্সিলর দের অপসারণ করার কারনে সেবার নামে ব্যাপক হয়রানি হতে হচ্ছে। আবার ওয়ার্ড সচিব দের দায়িত্বে আছেন সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা। তারা তো সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে কম,দাপ্তরিক কাজেই ব্যস্ত। তবে সেবা পেতে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারী দের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোন সনদের প্রয়োজন হলে সকল তথ্য ও কর পরিশোধের কাগজ দিতে হবে ওয়ার্ড সচিবকে। তারা অনুমতি দিলে তখন মিলবে সেবা। এটা চরম হয়রানি। কারন কৃষি প্রধান এলাকা। একদিন সেবা নিতে এসে ফেরত গেলে আর আসতে চায় না। আবার এসব সমস্যার সমাধানের তেমন কোন গুরুত্ব নেই। বিশেষ করে ইউএনওর কাধে দায়িত্ব আর দায়িত্ব। তিনি দিনভর সাক্ষর করেই শেষ করতে পারেন না। আর সহকারী কমিশনার ভূমি তো ভূমির কাজেই দিন পার করতে হয়।

এবিষয়ে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত তানোর এসিল্যান্ড মাশতুরা আমিনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি এড়িয়ে গেছেন। তবে, পরে তিনি মৃত ও জীবিত ব্যক্তির এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশন সনদ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানান।

এব্যাপারে রাজশাহী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. জাকিউল ইসলাম বলেন, ওয়ারিশন সনদ ও ট্র্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তিসহ জরুরি কাজে নাগরিকদের হয়রানি ও ভোগান্তি কাম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা হবে বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার বলেন, মুন্ডুমালা পৌরসভা ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে প্রশাসক দ্বারা যদি নাগরিক সেবায় কেউ হয়রানি ও বিড়ম্বনার শিকার হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।