ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরপরই বিএনপি, জামাত ও জনগনের সরকার হটাও আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ের যাওয়ার পর থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে বিএনপি। চলছে ঘরোয়া বৈঠক। দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও করছে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময়। অন্যদিকে অনেকটা কোনঠাসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।গ্রেপ্তার-আতঙ্কে তারা মাঠে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছেন। তবে দল গোছাতে পিছিয়ে নেই জামাতও।
সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গফুর সরকার জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ১৬টা বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম ও পুলিশি নির্যাতনের ভয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল। তবে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলসহ সহযোগী সংগঠনের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের আত্মার মাগফেরাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা, হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদ রক্ষাসহ সামাজিক কর্মকান্ডও চলছে জোরেশোরেই। তিনি বলেন, সততায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান অনেক উর্ধ্বে, এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে সম্পাদক সাহেবকে অত্যাচারে জর্জরিত করা হয়েছিল, দেয়া হয়েছিল কারাবাস। বন্ধ করা হয়েছিল আমারদেশ পত্রিকা। বাংলাদেশ স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তার বাবার কেনা সম্পত্তি ভেবে যা ইচ্ছে তাই করেছিল কিন্তু ৫ আগষ্ট বিএনপি ও ছাত্র জনতার আন্দোলনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শাহিন আকতার শাহিন ও একই মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন তারেক জিয়ার নির্দেশে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে নির্বাচন মুখি করতে শহর সহ উপজেলার সকল মানুষ কে ঐক্য বদ্ধ করা হচ্ছে। কারন ভোটাররা স্বৈরাচার শাসকের আমলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আগামী নির্বাচনে যাতে করে মানুষ ভোট দিতে পারে এজন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.রেজাউল করিম লোকমান বলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে শক্তিশালী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি। তারা সংঘবদ্ধ থেকে মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে কাজ করে চলেছে। সেই সঙ্গে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি অথবা মানুষকে হয়রানি না করার কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে তাদের। দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেলে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।নেতা আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক বিদায় করা হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করব।উপজেলার হিন্দু ধর্মের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অব্যাহত রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা সহ সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা শাখাওয়াত হোসেনের ভাষ্য, দলীয় নেতাকর্মীর মধ্যে কিছুটা ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দল গোছাতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। কারন জেলা উপজেলার নেতা কর্মীদের অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না থাকায় বর্তমানে কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জামাত ও জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মীই কৌশলে দল গোছানোর কাজে তৎপর রয়েছেন।