Dhaka ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত ৭

রাজশাহীর তানোরে এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।রবিবার বিকেলের দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনাটি। এঘটনায় বিএনপি নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেক, পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে তারেক গ্রুপের নেতাকর্মী দের ধাওয়ায় পালিয়ে যায় অপর গ্রুপের  নেতাকর্মীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণের মাঝে ব্যাহক আতঙ ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন্টা ব্যাপী জনদূর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষরা। তবে মিজান ঘটনাস্থলে ছিলেন না। এঘটনায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপি এমন ঘটনায় সাধারণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী ১(তানোর গোদাগাড়ী) আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট শিল্পপতি এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক কেন্দ্রীয় বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে থানা মোড়, মুন্ডুমালা ও বাধাইড় ইউপিতে পথ সভা করার কথা। সভা ক করার জন্য কামারগাঁ, কলমা, তালন্দ ও চাপড়া থেকে ১২/১৪ টির মত মাইক্রো বাস উপজেলায় আসেন। এর আগে দুটি মাইক্রো উপজেলা পরিষদ ও ডাকবাংলো দেয়াল ঘেঁষে রাখা হয়। এসময় আগত যাত্রীদের নামিয়ে মারপিট শুরু করেন মিজান গ্রুপের পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানের বোন জামাই হাবিব, জোবাসহ বেস কছু  নেতাকর্মীরা। প্রায় ২৫/৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে মারপিট ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং মাইক্রো বাস ভাংচুর। এসময় পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমান, জিয়া বেশ কয়েকজন কে মারধর করা হয়। মারপিটের সময় রাস্তা দিয়ে আসার পথে ওয়ার্ড যুবদলের নেতা বজলুর রহমানের পিতা হাশেমের মাথা ফাটিয়ে দেয় মিজান গ্রুপের লোকজন। সংবাদ পেয়ে বিএনপি নেতা তারেকসহ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তার মিছিল দেখে পালিয়ে যায় তারা। চলে ইট নিক্ষেপ। পায়ে ইটের আঘাত পায় তারেক। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ চললেও পুলিশের কোন দেখা পাওয়া যায় নি। তবে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুলিশের গাড়ী উপজেলা গেটে দেখা যায়।

পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর, যুবদল নেতা বজলুসহ তারেক গ্রুপের নেতাকর্মীরা জানান, ৩১ দফা বাস্তবায়নে আমাদের শান্তিপূর্ণ সভাকে পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজানের বাহিনী হামলা চালিয়েছে। আমরা তো আ”লীগের সভা করতে আসিনি। আমরা তো বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথ সভা ছিল। সভাকে এবং আ”লীগের এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে এমন হামলা করা হয়েছে। হামলায় উভয় গ্রুপের অন্তত ৮/১০ জন আহত হয়েছে বলে তারা জানান।

উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আতিকুর রহমান জানান, আমরা বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোন ধরনের সভা সমাবেশ বা প্রকাশ্যে থাকতে পারিনি। আমরা তো বিএনপির নেতাকে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু সভা পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজান তার বাহিনী দিয়ে যে ভাবে হামলা মারধর, মোবাইল ভাংচুর, গাড়ীতে ইট নিক্ষেপ ও নেতা তারেক ভাইকেও ইটের আঘাত করেছে।

উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য লিফলেট বিতরণ ও পথসবা হয়। পথ সভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। তিনি বলেন, আমি নেতাকর্মী নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথসবা করার কথা। কিন্তু দেশ থেকে স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। তারই অংশ হিসেবে সভাকে কেন্দ্র করে মারপিট হয়েছে। তারা যদি প্রকৃত পক্ষে বিএনপির আদর্শ ধারন করত তাহলে বিএনপির ৩১ দফাকে অমান্য করত না। তিনি নেতাকর্মীদের উপর এর বিচার ছেড়ে দেন।

মিজান গ্রুপের নেতাদের দাবি, এআসনে ধানের শীষের একমাত্র কান্ডারী মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন। এর বাহিরে কোন কথা চলবে না।

তবে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান কে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

থানা মোড় থেকে দেবিপুর মোড় হয়ে পাঠাকাটা, কৈল হাট দিয়ে বাঁধাইড় ইউপির বৈদ্যপুর,শিদপুরে  করেন। পরে সেখান থেকে রাতে বাঁধাইড় ইউপির হাপানিয়া দোগাছি তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান ও বক্তব্য রাখেন।

থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মিজানুর রহমান মিজান জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এঘটনায়  কোন পক্ষ অভিযোগ করেননি। তবে পরিস্থিতি শান্ত ও আমাদের অনুকূলে রয়েছে।

সন্ধ্যার পরে সুলতানুল ইসলাম তারেকের ছবি সংবলিত বিজয় দিবসের ফেস্টুন ব্যানার পুড়িয়ে দেয়া হয়। ফেস্টুনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিও ছিল বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংকল্পবদ্ধ হওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

তানোরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত ৭

Update Time : ১০:২১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজশাহীর তানোরে এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।রবিবার বিকেলের দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনাটি। এঘটনায় বিএনপি নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেক, পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে তারেক গ্রুপের নেতাকর্মী দের ধাওয়ায় পালিয়ে যায় অপর গ্রুপের  নেতাকর্মীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণের মাঝে ব্যাহক আতঙ ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন্টা ব্যাপী জনদূর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষরা। তবে মিজান ঘটনাস্থলে ছিলেন না। এঘটনায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপি এমন ঘটনায় সাধারণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী ১(তানোর গোদাগাড়ী) আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট শিল্পপতি এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক কেন্দ্রীয় বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে থানা মোড়, মুন্ডুমালা ও বাধাইড় ইউপিতে পথ সভা করার কথা। সভা ক করার জন্য কামারগাঁ, কলমা, তালন্দ ও চাপড়া থেকে ১২/১৪ টির মত মাইক্রো বাস উপজেলায় আসেন। এর আগে দুটি মাইক্রো উপজেলা পরিষদ ও ডাকবাংলো দেয়াল ঘেঁষে রাখা হয়। এসময় আগত যাত্রীদের নামিয়ে মারপিট শুরু করেন মিজান গ্রুপের পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানের বোন জামাই হাবিব, জোবাসহ বেস কছু  নেতাকর্মীরা। প্রায় ২৫/৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে মারপিট ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং মাইক্রো বাস ভাংচুর। এসময় পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর রহমান, জিয়া বেশ কয়েকজন কে মারধর করা হয়। মারপিটের সময় রাস্তা দিয়ে আসার পথে ওয়ার্ড যুবদলের নেতা বজলুর রহমানের পিতা হাশেমের মাথা ফাটিয়ে দেয় মিজান গ্রুপের লোকজন। সংবাদ পেয়ে বিএনপি নেতা তারেকসহ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তার মিছিল দেখে পালিয়ে যায় তারা। চলে ইট নিক্ষেপ। পায়ে ইটের আঘাত পায় তারেক। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ চললেও পুলিশের কোন দেখা পাওয়া যায় নি। তবে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুলিশের গাড়ী উপজেলা গেটে দেখা যায়।

পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইদুর, যুবদল নেতা বজলুসহ তারেক গ্রুপের নেতাকর্মীরা জানান, ৩১ দফা বাস্তবায়নে আমাদের শান্তিপূর্ণ সভাকে পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজানের বাহিনী হামলা চালিয়েছে। আমরা তো আ”লীগের সভা করতে আসিনি। আমরা তো বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথ সভা ছিল। সভাকে এবং আ”লীগের এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে এমন হামলা করা হয়েছে। হামলায় উভয় গ্রুপের অন্তত ৮/১০ জন আহত হয়েছে বলে তারা জানান।

উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আতিকুর রহমান জানান, আমরা বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোন ধরনের সভা সমাবেশ বা প্রকাশ্যে থাকতে পারিনি। আমরা তো বিএনপির নেতাকে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু সভা পন্ড করতে সাবেক মেয়র মিজান তার বাহিনী দিয়ে যে ভাবে হামলা মারধর, মোবাইল ভাংচুর, গাড়ীতে ইট নিক্ষেপ ও নেতা তারেক ভাইকেও ইটের আঘাত করেছে।

উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য লিফলেট বিতরণ ও পথসবা হয়। পথ সভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক। তিনি বলেন, আমি নেতাকর্মী নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও পথসবা করার কথা। কিন্তু দেশ থেকে স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। তারই অংশ হিসেবে সভাকে কেন্দ্র করে মারপিট হয়েছে। তারা যদি প্রকৃত পক্ষে বিএনপির আদর্শ ধারন করত তাহলে বিএনপির ৩১ দফাকে অমান্য করত না। তিনি নেতাকর্মীদের উপর এর বিচার ছেড়ে দেন।

মিজান গ্রুপের নেতাদের দাবি, এআসনে ধানের শীষের একমাত্র কান্ডারী মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন। এর বাহিরে কোন কথা চলবে না।

তবে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান কে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

থানা মোড় থেকে দেবিপুর মোড় হয়ে পাঠাকাটা, কৈল হাট দিয়ে বাঁধাইড় ইউপির বৈদ্যপুর,শিদপুরে  করেন। পরে সেখান থেকে রাতে বাঁধাইড় ইউপির হাপানিয়া দোগাছি তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান ও বক্তব্য রাখেন।

থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মিজানুর রহমান মিজান জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এঘটনায়  কোন পক্ষ অভিযোগ করেননি। তবে পরিস্থিতি শান্ত ও আমাদের অনুকূলে রয়েছে।

সন্ধ্যার পরে সুলতানুল ইসলাম তারেকের ছবি সংবলিত বিজয় দিবসের ফেস্টুন ব্যানার পুড়িয়ে দেয়া হয়। ফেস্টুনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিও ছিল বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।