সৈয়দপুরে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যা নামার পর পরেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে এ অঞ্চলের জনপদ। শীতের তীব্রতার কারণে সব শ্রেণীর মানুষ ভিড় করছেন পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে। ফুটপাত থেকে শুরু করে সুপার মার্কেট গুলোতেও গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে। তবে নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি ভীড় করছে ফুটপাতের পুরনো শীতবস্ত্রের দোকানে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীরা। আর এসব পুরাতন গরম কাপড়ের দোকান বসেছে সৈয়দপুরের রেললাইন ঘেঁষে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বড় রেলঘুন্টি পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাধিক দোকান বসেছে রেললাইন ঘেঁষে। ফুটপাতের প্রতিটি দোকানেই এখন শীতের পোশাকে ঠাসা। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫শ টাকায় শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে ওইসব দোকানগুলোতে। আশ পাশে কোন ধরনের হকার মার্কেট না থাকলেও কম দামের কারণে পুরাতন কাপড় কিনতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্রেতারা ওইসব দোকানে ভীর করছেন। এসব ফুটপাতের দোকানে মেয়েদের জ্যাকেট, ফুলহাতা গেঞ্জি, ব্লেজার, লেদার জ্যাকেট, হাফ সোয়েটার সবকিছুই রয়েছে।
পুরাতন গরম কাপড়ের বড় মোকাম হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে বাজার ও রেলওয়ে কারখানা গেটবাজারে। দামে কিছুটা সস্তা হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় করছেন দোকানগুলোতে। এসব দোকানে এর আগে ছুটে আসতেন অসহায় ও গরিব মানুষেরা। তবে বর্তমানে ধনী-গরিব সবাই আসছেন এসব দোকানগুলোতে। এখানকার পুরাতন কাপড়ের পাইকাররা বাছাইকৃত কাপড়ও বড় বড় গাইট কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। পুরাতন এসব গরম কাপড় কেউ পাইকারি ভাবে, আবার কেউ হাতে নিয়ে বিক্রি করছেন শহরের বিভিন্ন এলাকায়। পুরাতন গরম কাপড় কিনতে আসা শহরের পুরাতন বাবু পাড়ার ময়নুল বলেন, সব ধরনের কাপড় এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম অনেক বেশি। তবে রেললাইন সংলগ্ন এসব দোকান হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। রেললাইন সংলগ্ন না হয়ে যদি হকার মার্কেটে এসব বিক্রি হতো তাহলে নির্ভয়ে গরম কাপড় কেনা যেতো।
বিক্রেতা আজমল জানান, গতবারের চেয়ে এবারে খুচরা বাজারে দাম বেশি। কারণ প্রতিটি গাইটে গড়ে ৩/৪ হাজার টাকা করে দাম বেড়েছে। যে জ্যাকেটের গাইট ৮ হাজার টাকা ছিলো সেটি ক্রয় করতে হচ্ছে এখন ১১/১২ হাজার টাকায়। অনুরূপ সুয়েটারের গাইট ৫ হাজার থেকে এখন ৮ হাজার টাকা , বেবী গাইড ৭ হাজার টাকা থেকে১০ হাজার টাকা, গেঞ্জি ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে ।
তিনি বলেন, এরপরেও লাভ হতো, যদি দোকান গুলি হতো হকার মার্কেটে। রেললাইন ঘেঁষে বসা দোকানে পুরাতন গরম কাপড় কিনতে সবসময় আতংকের মধ্যে থাকেন ক্রেতারা। ট্রেন আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্রেতা সাধারণের ভীড়। ট্রেনের হুইসিল শুনেই একটি ক্রেতাও দোকানের আশপাশে দেখা যায় না। সৈয়দপুর শহরে হকার মার্কেট স্হাপনের দাবী দীর্ঘদিনের কিন্তু বিগত ১৬ টা বছর আমরা আশ্বাস পেয়েছি কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।যার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্যবসা করতে হচ্ছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে একটি হকার মার্কেট স্হাপনের দাবী করেন তিনি।